ঢাকা থেকে নরসিংদীতে নিয়ে ওই নারীকে ‘ধর্ষণ করেন’ ভাড়ার মোটরসাইকেলচালক
Published: 2nd, June 2025 GMT
ঢাকা থেকে অপহরণের পর নরসিংদীর ঘোড়াশাল থেকে উদ্ধার হওয়া নারীটি ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। তিনি একটি বিউটি পারলারের কর্মী। গত ২৮ মে ঢাকার একটি জায়গা থেকে ভাড়ার মোটরসাইকেলে চড়ে আরেক জায়গায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করার পর তাঁকে অচেতন করে নরসিংদীতে নেওয়া হয়। ওই নারীকে নরসিংদীর ঘোড়াশালের একটি সেতুর কাছে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। তাঁর স্বজনদের কাছ থেকে মুক্তিপণের টাকাও আদায় করে অপরাধী চক্র।
এ ঘটনায় গত শনিবার রাতে মো.
২৮ মে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে ঢাকা থেকে অপহরণের সাত ঘণ্টা পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘোড়াশাল থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করে পুলিশ। রাত সাড়ে ৯টার দিকে এক ব্যক্তি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে জানান, বেলা তিনটার দিকে তাঁর ভাগনিকে ঢাকার শ্যামলী এলাকা থেকে অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণকারীরা মুক্তিপণ হিসেবে তাঁর কাছে টাকা চাচ্ছে। ইতিমধ্যে তিনি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তাদের কাছে ২ হাজার ৫০০ টাকা পাঠিয়েছেন। ওই ব্যক্তি তাঁর ভাগনিকে দ্রুত উদ্ধারের ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান। এরপর নরসিংদীর পলাশ থানার পুলিশ ঘোড়াশাল কালভার্ট ব্রিজের কাছ থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করে।
নরসিংদী জেলার পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, অপহৃত নারীকে উদ্ধারের পর হাসপাতালে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়। পরে ওই নারী বাদী হয়ে পলাশ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন।
মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা নরসিংদী জেলা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সিসি (ক্লোজড সার্কিট) ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় নরসিংদীর পুলিশ ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত শাহ পরানের অবস্থান নিশ্চিত হয় এবং শনিবার রাতে কেরানীগঞ্জের বটতলীর দক্ষিণপাড়া থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসবাদে শাহ পরান অপহরণ ও ধর্ষণে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে গতকাল আদালতে জবানবন্দি দেন। আদালত জবানবন্দি নিয়ে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে জিজ্ঞাসাবাদে শাহ পরান পুলিশ কর্মকর্তাদের বলেন, সৌদি আরবে থাকার পর সম্প্রতি তিনি দেশে ফেরেন এবং রাইড শেয়ারিংয়ে মোটরসাইকেল চালাতেন। তাঁর বাড়ি কেরানীগঞ্জের দক্ষিণপাড়ায়। সেখানে তাঁর দুই স্ত্রী থাকেন।
পুলিশ কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, ধর্ষণের শিকার নারীটির ভাষ্য অনুযায়ী শাহ পরান তাঁকে ধর্ষণ করেন এবং শাহ পরানের দুই সহযোগী ওই নারীর মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট থেকে তিন হাজার টাকা নিয়ে মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যান।
পলাশ থানায় ওই নারীর করা মামলায় বলা হয়, ২৮ মে বেলা তিনটার দিকে রাজধানীর মিরপুর ১২ নম্বর থেকে তিনি চিকিৎসক দেখানোর জন্য রাইড শেয়ারিংয়ের একটি মোটরসাইকেলে নগরীর শ্যামলীর উদ্দেশে রওনা দেন। মিরপুর ১০ নম্বর পার হওয়ার পর তিনি কিছু মনে করতে পারছিলেন না। ওই দিন রাত ৯টার দিকে ঘোড়াশালের কালভার্ট ব্রিজে পৌঁছানোর পর তিনি স্বাভাবিক হন এবং দেখতে পান মোটরসাইকেলের চালক তাঁকে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে ধাক্কা মেরে রাস্তার নিচে ফেলে দেন। এ সময় মোটরসাইকেলচালকের অপর দুই বন্ধু আরেকটি মোটরসাইকেলে এসে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। একপর্যায়ে মোটরসাইকেলের চালক তাঁকে ধর্ষণ করেন। এ সময় তাঁর দুই বন্ধু ওই নারীর মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে থাকা তিন হাজার টাকা তাঁদের নম্বরে স্থানান্তর করে মোটরসাইকেল করে চলে যান।
শাহ পরানের দুই বন্ধুকে খোঁজা হচ্ছে বলে পুলিশ কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প ল শ কর মকর ত ওই ন র ক শ হ পর ন
এছাড়াও পড়ুন:
পটিয়ায় ব্যবসায়ীকে অপহরণ, দুই ঘণ্টা পর উদ্ধার
চট্টগ্রামের পটিয়া পৌর সদরের মুন্সেফ বাজার এলাকার একটি দোকান থেকে নুরুল আবছার (২৭) নামের এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যায় একদল মুখোশধারী ব্যক্তি। আজ বুধবার সকাল সাতটায় তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পুলিশের তৎপরতায় সকাল সাড়ে ৯টায় তিনি ছাড়া পান।
উদ্ধারের পর পটিয়া থানা প্রাঙ্গণে অপহরণের শিকার নুরুল আবছার প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ব্যাংকে চাকরি করতেন। সম্প্রতি তাঁর চাকরি চলে যায়। এরপর পটিয়া পৌর সদরের মুন্সেফ বাজার এলাকার সাহিত্য বিশারদ সড়কে মুরগির দোকান দেন। প্রতিদিনের মতো আজ সকালে দোকান খোলেন তিনি। এ সময় তিন থেকে চারজন মুখোশধারী লোক ধারালো অস্ত্রের মুখে তাঁকে ধরে অটোরিকশায় উঠিয়ে নিয়ে যায়। তারা তাঁর পকেটে থাকা ৪০ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। পরে আরও ৪ লাখ টাকা দাবি করে, পরে ১৭ লাখ এনে দিতে বলেন। তাঁকে চন্দ্র কালারপোল নামের নির্জন এলাকায় নিয়ে অপহরণকারীরা তাঁকে মারধরের পাশাপাশি ছুরিকাঘাতও করেন।
পটিয়া থানার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) প্রদীপ চন্দ্র দে প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত তাঁকে উদ্ধারের তৎপরতায় নামে। পরে চন্দ্র কালারপোল এলাকায় পুলিশ গেলে উপস্থিতি টের পেয়ে অপহরণকারীরা পালিয়ে যায়।
পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান জানান, ব্যবসায়ীকে অপহরণ করার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরে তাঁকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।