গাজীপুরের কালীগঞ্জে কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে একটি বিশাল আকৃতির ষাঁড়- নাম তার ‘নিগ্রো’। 

উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের খৈকড়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের জুয়েল আকন্দ (৩২) শখের বশে লালন-পালন করা এই বিরল দৃষ্টিনন্দন ষাঁড়টির ওজন প্রায় ১১৫০ কেজি। 

জুয়েলের নিজ বাড়িতে ষাঁড়টি বিক্রির অপেক্ষায় থাকলেও এর চাহিদা ও কৌতূহল এখন ছড়িয়ে পড়েছে দূর-দূরান্তে।

আরো পড়ুন:

প্রস্তুত হাট, আসছে গরু-অপেক্ষা ক্রেতার

খুলনার জোড়াগেট হাটে হাসিল কমেছে ১ শতাংশ

জুয়েল আকন্দ জানান, প্রায় দেড় বছর আগে পাশের গ্রামের নাওয়ানের মোড় থেকে মাত্র দুই দাঁতের অবস্থায় কালো রঙের ষাঁড়টি কেনেন। এরপর থেকেই প্রাকৃতিক খাদ্য ও যত্নে তিনি গড়ে তুলেছেন ‘নিগ্রো’কে। কোনো স্টেরয়েড বা কৃত্রিম উপাদান ছাড়াই ঘাস, ভুসি, ছোলা, গাজর, কলাই, ও দানাদার খাবার খেয়ে বড় হয়েছে ষাঁড়টি। দিনে দুইবার গোসল আর পর্যাপ্ত চলাফেরার সুযোগে নিগ্রো এখন একেবারে স্বাস্থ্যবান এবং ঝলমলে চেহারার একটি ষাঁড়।

জুয়েল বলেন, “নিগ্রো নামটি আমি দেইনি, কালো জিভ আর কুচকুচে কালো গায়ের রঙ দেখে লোকজনই এ নাম দিয়েছিল। সেই নামেই পরিচিতি পেয়েছে।”

এখন প্রতিদিন শত শত মানুষ ভিড় করছেন নিগ্রোকে একনজর দেখতে। কেউ ছবি তুলছেন, কেউ করছেন ফেসবুক লাইভ। এমন উৎসাহ অনেকটাই মেলা মেলার পরিবেশ তৈরি করেছে জুয়েলের বাড়িতে।

মূল্য ধরা হয়েছে সাড়ে ৮ লাখ টাকা, তবে স্থানীয় পশু ব্যবসায়ীদের মতে নিগ্রোর প্রকৃত মূল্য আরও বেশি হতে পারে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ক্রেতারা আগ্রহ দেখাচ্ছেন। অনেকে দাম বলছেন, কেউ আবার বুকিং দিতে চাইছেন কিন্তু এখনো কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় জুয়েল ষাঁড়টি ছাড়েননি।

“শখের বসে লালন করেছি, তাই হেলায় ছাড়তে চাই না। তবে কেউ সঠিক মূল্য দিলে নিগ্রোর রশি তার হাতেই তুলে দেব।”-বলেন জুয়েল।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এটি শুধু একটি ষাঁড় নয়, এটি খৈকড়া গ্রামের গর্ব। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে লালিত এই ষাঁড় যেন সম্ভাবনার এক উজ্জ্বল প্রতীক।

জুয়েলের প্রতিবেশিরা জানান, এটি পুরোপুরি প্রাকৃতিক উপায়ে লালন-পালন করা হয়েছে এবং স্বাস্থ্যগত দিক থেকে খুব ভালো অবস্থায় রয়েছে।

বাংলাদেশে কোরবানির ঈদ ঘিরে প্রতিবছর যেমন লক্ষ লক্ষ পশু প্রস্তুত হয়, তেমনি বিরল আকৃতির পশুরাও হয়ে ওঠে আলোচনার বিষয়বস্তু। এবারের ঈদে কালীগঞ্জে নিগ্রো যেন সবার আগ্রহ ও ভালোবাসার কেন্দ্রবিন্দু। এটি বিক্রি হবে কি না, হবে তো কত দামে-তা সময়ই বলবে। তবে নিঃসন্দেহে, কালীগঞ্জের ঈদ উদযাপন নিগ্রোকে ঘিরেই এবার এক নতুন রঙে রাঙা হয়েছে।

ঢাকা/রফিক/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক রব ন র হ ট

এছাড়াও পড়ুন:

বিহারের ভোটার তালিকা নিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট: ‘মৃত’ নন জীবিত এমন ১৫ জনকে হাজির করলে ব্যবস্থা

বিহারে খসড়া ভোটার তালিকায় ‘মৃত’ চিহ্নিত ১৫ জন জীবিতকে হাজির করাতে পারলে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ব্যবস্থা নেবেন। বিহারের ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে মামলাকারীদের আইনজীবীদের এ আশ্বাস দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।

সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি সূর্য কান্ত ও জয়মাল্য বাগচী এ আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে তাদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। গণহারে ভোটার বাদ দেওয়া দেওয়া হলে তাঁরা অবশ্যই পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

আবেদনকারীদের উদ্দেশে দুই বিচারপতি বলেছেন, প্রক্রিয়ায় অনিয়ম বা ত্রুটি পাওয়া গেলে অবশ্যই তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন।

মামলাকারীদের আবেদন মেনে সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য খসড়া ভোটার তালিকা পেশ করার ওপর স্থগিতাদেশ দেননি। তবে ইসিকে তাঁরা বলেছেন, তাদের কাজ গণহারে ভোটার বাদ দেওয়া নয়। তাদের দেখা উচিত যাতে গণহারে ভোটারদের তালিকাভুক্ত করা যায়।

এসআইআর–প্রক্রিয়া অনুযায়ী ভোটার তালিকা সংশোধনের পর খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে ১ আগস্ট। সে লক্ষ্যেই ইসি এগিয়ে চলেছে। ইসি সূত্রে খবর, নিবিড় সংশোধনপ্রক্রিয়ার পর প্রাথমিকভাবে দেখা যাচ্ছে ৬৫ লাখেরও বেশি নাম খসড়া তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে। তাঁদের মধ্যে অন্তত ২২ জন ‘মৃত’, ৩৬ লাখ ‘নিখোঁজ’। এ ছাড়া বেশ কয়েক লাখ ভোটারের নাম বিভিন্ন এলাকার তালিকায় রয়েছে। অর্থাৎ একই ভোটার অন্তত দুই জায়গায় নথিভুক্ত। আগের তালিকা অনুযায়ী বিহারে মোট ভোটারের সংখ্যা ৭ কোটি ৮৯ লাখ। ইসির দাবি, এই তালিকায় বহু ভোটার ভুয়া। তাদের বাদ দিতেই এই নিবিড় সংশোধন।

যে প্রক্রিয়ায় এই খসড়া তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে, মামলাকারীদের আপত্তি তা নিয়েই। তাঁদের অভিযোগ, ইসি যেভাবে নাগরিকত্বের যাচাই করছে, সে জন্য যেসব নথি পেশ করতে বলা হচ্ছে, তা বহু ক্ষেত্রে সম্ভবপর নয়। তেমন করা তাদের কাজও নয়। সেই কাজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। তাঁদের অভিযোগ, এভাবে বহু দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের ভোটাধিকার ইসি কেড়ে নিচ্ছে।

গত সোমবার ও মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি হয়। মঙ্গলবারের শুনানিতে মামলাকারীদের আইনজীবী কপিল সিব্বাল ও প্রশান্ত ভূষণকে আশ্বস্ত করে বিচারপতিরা বলেন, কমিশনের ত্রুটি–বিচ্যুতি দেখলে তাঁরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেবেন। ভোটার প্রমাণে আধার কার্ড ও ভোটার কার্ডকে নথি হিসেবে গ্রাহ্য করার সুপারিশ বিচারপতিরা জোরের সঙ্গে করেছেন। এই দুই নথি জাল করা সহজ বলে ইসির দাবি নস্যাৎ করে বিচারপতিরা বলেছেন, যে ১১টি নথির ওপর নির্ভর করে তারা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, সেগুলোর প্রতিটিই জাল করা সম্ভব। কপিল সিব্বাল ও প্রশান্ত ভূষণকে বিচারপতিরা বলেন, খসড়া ভোটার তালিকায় ‘মৃত’ অথচ আসলে জীবিত, এমন ১৫ জনকে আপনারা হাজির করুন। আমরা ব্যবস্থা নেব।

আগামী ১২ ও ১৩ আগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি। তার আগে ৮ আগস্টের মধ্যে মামলাকারীদের বক্তব্য লিখিতভাবে আদালতে পেশ করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ