যুদ্ধবিরতির জন্য ইউক্রেনের ওপর শাস্তিমূলক শর্ত আরোপ করতে চায় রাশিয়া। সোমবার শান্তি আলোচনায় রাশিয়া ইউক্রেনকে জানিয়েছে যে, কিয়েভ যদি মস্কোর দখল করা নতুন বিশাল ভূখণ্ড ছেড়ে দেয় এবং সেনাবাহিনীর আকারের সীমাবদ্ধতা মেনে নেয়, তবেই তারা যুদ্ধ শেষ করতে রাজি হবে।

ইস্তাম্বুলে আলোচনায় আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপিত শর্তাবলীতে ইউক্রেনে ‘রক্তপাত’ বন্ধ করার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আহ্বান সত্ত্বেও এর মাধ্যমে মস্কো দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধে আপস করতে অস্বীকৃতি জানালো। কারণ ইউক্রেন বারবার রাশিয়ার শর্তগুলিকে আত্মসমর্পণের সমতুল্য বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।

যুদ্ধরত পক্ষের প্রতিনিধিরা সোমবার মাত্র এক ঘন্টার জন্য বৈঠক করেছিলেন। ২০২২ সালের মার্চের পর থেকে এটি ছিল দ্বিতীয় দফার আলোচনা। দুই পক্ষই আরো যুদ্ধবন্দি বিনিময় করতে সম্মত হয়েছে। তবে প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতিতে কোনো অগ্রগতি হয়নি।

রুশ বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স প্রকাশিত রাশিয়ান স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, যুদ্ধের নিষ্পত্তির জন্য ক্রিমিয়া এবং ইউক্রেনের আরো চারটি অঞ্চলকে মস্কোর দখলকৃত এলাকা হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিতে। এছাড়া ইউক্রেনকে এই সব অঞ্চল থেকে তার সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। এছাড়া ইউক্রেনের ন্যাটোর সদস্যপদ বাতিল করতে হবে, কিয়েভ রাশিয়ান ভাষাভাষীদের অধিকার রক্ষা করবে, রুশকে সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেবে।

এর বাইরে রাশিয়ার শান্তির জন্য দুটি প্রস্তাব দিয়েছে, যার মধ্যে যেকোনো একটি বেছে নিতে হবে ইউক্রেনকে। প্রস্তাবিত বিষয়বস্তু অনুযায়ী, প্রথম বিকল্প ছিল ইউক্রেনের লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, জাপোরিঝিয়া এবং খেরসন অঞ্চল থেকে সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার শুরু করা। দ্বিতীয় বিকল্প ছিল একটি প্যাকেজ যার মাধ্যমে ইউক্রেনকে সামরিক পুনর্নির্মাণ বন্ধ করতে হবে এবং সামরিক সাহায্য, উপগ্রহ যোগাযোগ ও গোয়েন্দা তথ্য বিদেশিদের কাছে হস্তান্তর বন্ধ করতে হবে। কিয়েভকে সামরিক আইনও তুলে নিতে হবে এবং ১০০ দিনের মধ্যে প্রেসিডেন্ট ও সংসদীয় নির্বাচন করতে হবে।

অবশ্য ইউক্রেনের তৈরি একটি প্রস্তাবিত রোডম্যাপ অনুসারে, কিয়েভ কোনো শান্তি চুক্তির পরে তার সামরিক শক্তির উপর বিধিনিষেধ চায় না, মস্কোর বাহিনীর দখল করা ইউক্রেনের কিছু অংশের উপর রাশিয়ার সার্বভৌমত্বের কোনো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চায় না।

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন র প রস ত ব র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

লাকসামে অস্ত্রের মুখে এতিমখানার ৫ গরু লুট, আহত ৮

কুমিল্লার লাকসামে একটি এতিমখানার খামার থেকে গত শুক্রবার পাঁচটি গরু লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাত দল। এ সময় তাদের হামলায় মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ আটজন আহত হন। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ থানায় মামলা করেছে।

গত শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) ভোরে উপজেলার আজগরা ইউনিয়নের বড়বাম আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদরাসা ও এর সংলগ্ন এতিমখানার খামারে ঘটনাটি ঘটে। তিন মাস আগেও এই খামারের সাতটি গরু লুট করেছিল ডাকাতরা।

আরো পড়ুন:

খুলনায় বিএনপি নেতার অফিসে বোমা-গুলি, শিক্ষক নিহত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিপক্ষের হামলা: গুলিবিদ্ধ যুবকের মৃত্যু

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে ঘটনাটি জানাজানি হয়।

এলাকাবাসী জানান, মাদরাসার আয় এই খামারের মাধ্যমে হয়। তিন মাসের ব্যবধানে দুই দফা ডাকাতি হওয়ায় শিক্ষক ও ছাত্রদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। খামারের বড় গরুগুলো লুট হয়ে যাওয়ায় এক পাশ ফাঁকা পড়ে আছে। বর্তমানে খামারে ১১টি গরু অবশিষ্ট রয়েছে।

খামারের সামনে পড়ে আছে ডাকাত দলের ব্যবহৃত তুষের বস্তা, যা দিয়ে গরুগুলো পিকআপ ভ্যানে তোলে তারা। গরু উদ্ধার এবং ডাকাত দলের সদস্যদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

মামলার বাদী এবং মাদরাসার শিক্ষক ইমরান হোসাইন জানান, গত শুক্রবার ভোরে একদল ডাকাত দুটি পিকআপ ভ্যান নিয়ে এসে অস্ত্রের মুখে মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে। শিক্ষকদের মারধর করে তাদের মোবাইল ফোন নিয়ে যায় ডাকাতরা। তারা খামারে ঢুকে কেয়ারটেকার উৎসব হোসেনকে বেঁধে একে একে পাঁচটি গরু পিকআপ ভ্যানে তুলে নেয়। শিক্ষক ও ছাত্রদের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়।

মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা শরীফুল আলম খন্দকার জানান, খামারের আয়ের ওপর ভিত্তি করে মাদরাসার কার্যক্রম চলে। তিন মাস আগেও এই খামারের সাতটি গরু নিয়ে যায় ডাকাতরা।

লাকসাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজনীন সুলতানা বলেন, “লুট হওয়া গরু উদ্ধার এবং ডাকাতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। মাদরাসার শিক্ষক ইমরান হোসাইন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন।”

ঢাকা/রুবেল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ