পানির নিচে বিস্ফোরক ব্যবহার করে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণাধীন কার্চ সেতুতে হামলা চালানোর দাবি করেছে ইউক্রেন। ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থা (এসবিইউ) বলছে, ‘কয়েক মাস’ ধরে প্রস্তুতির পর গতকাল মঙ্গলবার সেতুটিকে নিশানা করেছে তারা।

এসবিইউ আরও বলেছে, তারা ক্রিমিয়া সেতুর ভিত্তি স্তম্ভগুলোর নিচের অংশে প্রায় ১ হাজার ১০০ কেজি টিএনটির সমপরিমাণ শক্তির বিস্ফোরক স্থাপন করেছিল। এতে সেতুর ভিত্তির নিচের দিকের অংশ গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

‘প্রথম ধাপে বিস্ফোরক বিস্ফোরিত’ করার ঘটনায় কোনো বেসামরিক প্রাণহানি হয়নি বলেও উল্লেখ করেছে তারা।

তবে এসবিইউ যে তথ্যগুলো প্রকাশ করেছে, সেগুলো তাৎক্ষণিক ও স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

ইউক্রেনের কাছে সেতুটি রুশ দখলদারির এক ঘৃণ্য প্রতীক। মস্কো খুব সতর্কতার সঙ্গে এটিকে পাহারায় রাখে। পানির নিচে ড্রোন রেখে হোক বা বিস্ফোরক দিয়ে হোক— সেতুতে কোনো হামলা হলে তা ইউক্রেনের জন্য এক বড় সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হয়।

রুশ সংবাদমাধ্যম শুরুতে বলেছিল, সেতুটি সাময়িকভাবে যান চলাচলের জন্য বন্ধ করা হয়েছিল। স্থানীয় সময় সকাল ১০টার মধ্যে সেতুটি আবার খুলে দেওয়া হয়। তবে পরে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, সেতুটি আবারও সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

অবশ্য আজ বুধবার সেতুতে যান চলাচল শুরু হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, সেতুর আশপাশে আরও কয়েকটি বিস্ফোরণ ঘটেছে।

রাশিয়ার সরকারি যে টেলিগ্রাম চ্যানেলটিতে সেতুর কার্যক্রম–সংক্রান্ত তথ্য দেওয়া হয়ে থাকে, সেখানে বলা হয়, ‘সেতুর ওপরে এবং তত্ত্বাবধানের এলাকায় যাঁরা আছেন, তাঁদের শান্ত থাকার এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের নির্দেশ মানার অনুরোধ করা হচ্ছে।’

এ হামলার বিষয়ে রাশিয়া এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। তবে কিছু রুশ সামরিক ব্লগার ধারণা করছেন, বিস্ফোরক নয়, বরং পানির নিচে ড্রোন স্থাপন করে সেতুর নিরাপত্তা বেষ্টনীতে আঘাত করা হয়েছে।

এসবিইউ বলছে, তাদের পরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল ভাসিল মালইউক ব্যক্তিগতভাবে এ অভিযানের তদারকি ও পরিকল্পনার কাজটি সমন্বয় করেছেন।

মালইউককে উদ্ধৃত করে এক টেলিগ্রাম পোস্টে বলা হয়, ইউক্রেন ২০২২ ও ২০২৩ সালে ক্রিমিয়া সেতুকে নিশানা করেছিল। এখন তারা পানির নিচ থেকে হামলা চালিয়ে সে ধারা বজায় রাখছে।

মালইউক বলেন, ‘আমাদের দেশে কোনো অবৈধ রুশ স্থাপনা থাকতে পারবে না।’

ক্রিমিয়া সেতুকে শত্রুবাহিনীর সেনাদের রসদ সরবরাহের রাস্তা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি দাবি করেছেন, এটিকে নিশানা করাটা পুরোপুরি বৈধ।

কার্চ সেতু ক্রিমিয়া সেতু নামেও পরিচিত। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখলের পর রাশিয়া এটি নির্মাণ করে। ২০১৮ সালে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এটি উদ্বোধন করেন।

ইউক্রেনের কাছে সেতুটি রুশ দখলদারির এক ঘৃণ্য প্রতীক। মস্কো খুব সতর্কতার সঙ্গে এটিকে পাহারায় রাখে। পানির নিচে ড্রোন রেখে হোক বা বিস্ফোরক দিয়ে হোক, সেতুতে কোনো হামলা হলে তা ইউক্রেনের জন্য এক বড় সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হয়।

আরও পড়ুনরাশিয়ার বিমানঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে মস্কো ও পশ্চিমা বিশ্বকে কী বার্তা দিল ইউক্রেন০২ জুন ২০২৫

‘স্পাইডার ওয়েব’ নামে একটি অভিযানের অংশ হিসেবে ইউক্রেন রাশিয়ার বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করার মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গতকাল সেতুতে হামলা হয়।

কিয়েভ বলেছে, ‘স্পাইডার ওয়েব’ অভিযানের আওতায় তারা লরিতে করে গোপনে ১০০টির বেশি ড্রোন রাশিয়ায় পাঠিয়েছে এবং লরিচালকদের অজান্তে সেগুলো বিমানঘাঁটির কাছে পৌঁছে দিয়েছে। এরপর ওই ড্রোনগুলো ব্যবহার করে রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ বোমারু বিমানগুলোকে নিশানা করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন র ব স ফ রক

এছাড়াও পড়ুন:

মতলবের দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি-দখলদারির অভিযোগ, দল থেকে বহিষ্কার

চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার বিএনপির দুই নেতাকে দলের সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

চাঁদাবাজি, দখলদারি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানা ধরনের অপকর্মে লিপ্ত থাকার অভিযোগে ওই দুজনের বিরুদ্ধে এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

বহিষ্কৃত নেতারা হলেন মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌর বিএনপির সহসভাপতি আবদুল মান্নান লস্কর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া। এর মধ্যে মতলব উত্তরের আবদুল মান্নান লস্করকে চাঁদাবাজির মামলায় গত সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি এখন কারাগারে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আবদুল মান্নান লস্কর ও আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়াকে চাঁদাবাজি, দখলদারি ও মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত থাকার অভিযোগে দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই একই অভিযোগে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ইমাম হোসেন গাজীকেও দলের সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।  

এ ব্যাপারে চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহম্মেদের (মানিক) মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে মতলব উত্তর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম বলেন, ওই দুই নেতাকে বহিষ্কারের বিষয়টি জেনেছেন। তবে এ ব্যাপারে  চিঠি এখনো পাননি। যেকোনো বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এটি অন্যান্য নেতার জন্যও একটি বার্তা ও শিক্ষা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মতলবের দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি-দখলদারির অভিযোগ, দল থেকে বহিষ্কার