গৃহায়ণ ঋণ গ্রাহকের ৭০ বছর বয়সের মধ্যে আদায়ের নির্দেশ
Published: 4th, June 2025 GMT
গৃহায়ণ ঋণ গ্রাহকের বয়স সর্বোচ্চ ৭০ বছরের মধ্যে আদায় করতে হবে। দীর্ঘমেয়াদি গৃহায়ন ঋণ পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠনের ফলে ঋণ পরিশোধের প্রকৃত সময়সীমা যেন হ্রাস না পায় এবং কিস্তির পরিমাণ বৃদ্ধি না পায় সেজন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ থেকে মঙ্গলবার জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়েছে, গৃহায়ন সহ যে কোনো ঋণ পুনঃতফসিল, পুনর্গঠনের সর্বোচ্চ মেয়াদ ৬ বছর পর্যন্ত নির্ধারিত রয়েছে। ফলে, বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী দীর্ঘমেয়াদি গৃহায়ন ঋণ পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে ঋণ পরিশোধের সময়সীমা কোনো কোনো ক্ষেত্রে ঋণের বিদ্যমান অবশিষ্ট মেয়াদ থেকে কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
এমন পরিস্থিতিতে দীর্ঘমেয়াদি গৃহায়ন ঋণ পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠনের ফলে ঋণ পরিশোধের প্রকৃত সময়সীমা যেন হ্রাস না পায় এবং কিস্তির পরিমাণ বৃদ্ধি না পায় সেজন্য নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে নগদ প্রবাহে সাময়িক সমস্যার দরুন গৃহায়ন ঋণ পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠনের ১ম, ২য় ও ৩য় দফায় যথাক্রমে ঋণের বিদ্যমান মেয়াদে ৩০ শতাংশ, ২০ শতাংশ, ১০ শতাংশ নির্ধারন করে সমুদয় ঋণ গ্রাহকের বয়স সর্বোচ্চ ৭০ বছরের মধ্যে আদায়ে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
গৃহনির্মাণ ঋণ কোনক্রমেই সম্মিলিতভাবে ৩ বারের অধিক পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠন করা যাবে না। সম্মিলিতভাবে সর্বমোট ৩ বার পুনঃতফসিল,পুনর্গঠন করার পরও ঋণ আদায় না হলে পাওনা আদায়ে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পুনঃতফসিল/পুনর্গঠনের পর ন্যূনতম ৬ টি মাসিক কিস্তি বা এর সমপরিমাণ অর্থ আদায় সাপেক্ষে পরবর্তী দফায় পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠন করা যাবে।
বিরূপমানে (নিম্নমান, সন্দেহজনক, মন্দ বা ক্ষতি) শ্রেণিকৃত ঋণ হিসাব পুনঃতফসিল করা যাবে এবং স্ট্যান্ডার্ড অথবা এসএমএ মানে রয়েছে এরূপ ঋণ হিসাব পুনর্গঠন করা যাবে। পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠনকৃত ঋণের অর্থ মাসিক বা ত্রৈমাসিক কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য হবে। সময় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গ্রাহকের আয়ের উৎস, বর্ধিত মেয়াদকালে নগদ প্রবাহ ইত্যাদি পর্যালোচনাসহ সার্বিক ঋণ পরিশোধ সক্ষমতা যাচাই করতে হবে। সহায়ক জামানতের বন্ধকী কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হতে হবে।
গৃহায়ণ ঋণ পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠনের আবেদন প্রাপ্তির পর অনধিক ২ মাসের মধ্যে তা নিষ্পন্ন করতে হবে, এতে কোনরূপ গ্রেস পিরিয়ড প্রদান করা যাবে না। আবেদন গ্রহণযোগ্য না হলে তা গ্রাহককে লিখিতভাবে অবহিত করতে হবে।
নিয়মিত ঋণ পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে কোনরূপ ডাউনপেমেন্টের বাধ্যবাধকতা নেই। ঋণ পুনঃতফসিলের ক্ষেত্রে আবশ্যিকভাবে যে হারে ডাউনপেমেন্ট আদায় করতে হবে- প্রথম দফা পুনঃতফসিলের ক্ষেত্রে মোট বকেয়া ঋণের ২ শতাংশ; দ্বিতীয় দফা পুনঃতফসিলের ক্ষেত্রে মোট বকেয়া ঋণের ৩ শতাংশ; তৃতীয় দফা পুনঃতফসিলের ক্ষেত্রে মোট বকেয়া ঋণের ৪ শতাংশ।
তবে, ঋণ, লিজ, বিনিয়োগের কিস্তি বা এর অংশ হিসেবে আদায়কৃত অর্থ ডাউনপেমেন্ট হিসেবে প্রদর্শন করা যাবে না। অন্য কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বা ব্যাংক কর্তৃক পুনঃতফসিল,পুনর্গঠনকৃত ঋণ অধিগ্রহনের মাধ্যমে কোন ফাইন্যান্স কোম্পানিতে স্থানান্তরিত হয়েছে এরূপ ঋণ পুনঃতফসিল,পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী প্রতিষ্ঠানের পুনর্গঠন,পুনঃতফসিলকরণের ক্রম প্রযোজ্য হবে। এ লক্ষ্যে, পুনঃতফসিল,পুনর্গঠন প্রস্তাব মূল্যায়নকালে গ্রাহকের নিকট হতে ঘোষণাপত্র সংগ্রহ করতে হবে এবং তা যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হবে।
ঢাকা/এনএফ/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ন তফস ল র ক ষ ত র গ র হক র
এছাড়াও পড়ুন:
অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমার বিধান প্রশ্নে রুল
বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের একটি ধারা প্রশ্নে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। ধারাটিতে অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমা উল্লেখ রয়েছে। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ রুল দেন।
২০১৭ সালে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন প্রণয়ন করা হয়। আইনের ১৮ ধারায় অপরাধ আমলে নেওয়ার সময়সীমা সম্পর্কে বলা হয়েছে। ধারাটি বলছে, অপরাধ সংঘটিত হওয়ার দুই বছরের মধ্যে অভিযোগ করা না হলে আদালত ওই অপরাধ আমলে গ্রহণ করবে না।
ওই ধারার বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান গত মাসের শেষ দিকে রিটটি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী।
রুলে অপরাধের অভিযোগ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমা আরোপ–সংক্রান্ত বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের ১৮ ধারা কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিবকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রুলের বিষয়টি জানিয়ে আবেদনকারী আইনজীবী ইশরাত হাসান প্রথম আলোকে বলেন, বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ তৃতীয় এবং দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ শীর্ষে বলে ইউনিসেফের প্রতিবেদনে এসেছে। আইনের ১৮ ধারায় সময়সীমা উল্লেখ করে দুই বছরের মধ্যে মামলা না করতে পারলে কোনো আদালত অপরাধ আমলে গ্রহণ করতে পারবে না বলা হয়েছে। অর্থাৎ বিচার করতে পারবে না। যে মেয়েটির ১১–১২ বছরে বিয়ে হয় তারপক্ষে দুই বছরের মধ্যে মামলা করা সব সময় সম্ভব না–ও হতে পারে। তখন সে নিজেই শিশু। দুই বছর পর আদালত বিচার করতে পারবে না এবং সময়সীমা আইনে বেঁধে দেওয়া সংবিধানের ২৭, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী—এমন সব যুক্তিতে রিটটি করা হয়।