খুলনা নগরীর জোড়াগেটে কোরবানির পশুর হাটে আনা হয়েছে বিশালাকৃতির একটি গরু। নাম ‘পিটবুল’। প্রায় ৩০ মণ ওজনের গরুটির দাম হাঁকা হয়েছে ১২ লাখ টাকা। তবে এখনও কেউ দাম বলেননি। ক্রেতার অপেক্ষায় রয়েছেন ‘পিটবুলে’র মালিক।

বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার গাংনী গ্রাম থেকে হাটে গরুটি নিয়ে এসেছেন মো. শফিউল্লাহ। তিনি জানান, প্রথমে দুই দিন তিনি গরুটির দাম চেয়েছিলেন ১৪ লাখ টাকা। পরে বুধবার বিকেল থেকে ১২ লাখ টাকা চাইছেন। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন দেখে গেছেন, ছবি তুলে নিয়ে গেছেন। তবে এখনও কেউ দাম বলেননি। প্রকৃত ক্রেতা পেলে আলোচনা করে দাম চূড়ান্ত করার ইচ্ছা রয়েছে তার।

মালিক শফিউল্লাহ জানান, গরুটির বয়স ৫ বছর ৯ দিন। নিজের বাড়িতে রেখে ঘাস, খড়, ভুষি, ছোলার খোসা খাইয়ে গরুটি যত্ম সহকারে বড় করেছেন। পিটবুল মোটামুটি শান্ত প্রকৃতির। এবার জোড়াগেট হাটে এতো বড় গরু আর কেউ আনেননি। সে কারণে গরুটি দেখতে লোকজন ভিড় করছে।

তিনি আরও জানান, গরুটি ফ্রিজিয়ান জাতের। মার্কিন সঙ্গীতশিল্পী (র‌্যাপার) পিটবুল এর নামানুসারে এর নাম রেখেছেন ‘পিটবুল’। কিন্তু পিটবুল নাম রাখার কারণ সম্পর্কে কিছু বলতে চাননি গরুটির মালিক।

আজ বুধবার বিকেলে জোড়াগেট কোরবানির পশুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, হাটের মাঝামাঝি জায়গায় দুটি দড়ি দিয়ে গরুটি বাধা আছে। বিভিন্ন বয়সী অর্ধশতাধিক মানুষ গরুটি দেখছেন। কেউ কেউ গরুর ছবি তুলছেন, কেউ কেউ আবার গরুর সঙ্গে সেলফিও তুলছেন।

পিটবুলকে দেখতে আসা নকিব শেখ ও সুমাইয়া ইয়াসমিন সমকালকে বলেন, ‘আমরা ঘুরে ঘুরে হাটে গরু দেখছি। এবার হাটে এর চেয়ে বড় গরু আসেনি। গরুটি হাটে আসা সবার দৃষ্টি কেড়েছে।’

গরুটির মালিক মো.

শফিউল্লাহ জানান, আগে তিনি একটি ওষুধ কোম্পানি চাকরি করতেন। পরে চাকরি ছেড়ে এলাকায় মাছ আর গরুর খামার গড়েছেন।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

গংগাচড়ায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ, আতঙ্ক কাটেনি এখনও

রংপুরের গংগাচড়ায় ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ঘিরে সহিংসতার শিকার হিন্দু পরিবারের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। তবে ঘটনার তিন দিন পরেও এলাকায় ফেরেনি অনেক পরিবার। আতঙ্কে এখনো আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে অনেকে।

গত ২৭ জুলাই রাতে ওই গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলার আগে এলাকায় মাইকিং করে লোকজন জড়ো করা হয়।

পুলিশ, প্রশাসন ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বলছেন, যারা হামলা করেছেন, তাদের মধ্যে অনেকে ছিলেন ‘বহিরাগত’। পাশের নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলা থেকে লোকজন এসে হামলা চালিয়ে চলে যায়। হামলার সময় ২২টি ঘরবাড়ি তছনছ ও লুটপাট করা হয়। 

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকায় অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প বসানো হয়েছে, বাড়ানো হয়েছে পুলিশ টহল। প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ঢেউটিন, কাঠ, চাল-ডাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছে এবং ঘরবাড়ি মেরামতের কাজও শুরু হয়েছে। তবু আতঙ্কিত পরিবারগুলো। 

ক্ষতিগ্রস্তদের একজন অশ্বিনী চন্দ্র মোহান্ত বলেন, “সেদিনের ঘটনা ছিল এক ভয়াবহ। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে ধর্ম অবমাননাকারী কিশোরকে থানা হেফাজতে দিয়েছি। কিন্তু তারপরও ঘরবাড়ি রক্ষা হয়নি। স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি এবং কিছু মুরুব্বি আমাদেরকে অভয় দিয়েছিলেন, কিন্তু রক্ষা হয়নি।” 

তিনি আরো বলেন, “আমরা নিজেরাই অভিযুক্ত কিশোরকে থানায় সোপর্দ করেছি। তারপরও মিছিল নিয়ে এসে দুই দফায় আমাদের ২০ থেকে ২৫টি ঘরবাড়ি তছনছ করে দিয়ে লুটপাট করেছে তারা। এদের মধ্যে অধিকাংশ লোকেই অপরিচিত।” 

আরেক ভুক্তভোগী দেবেন্দ্র চন্দ্র বর্মন জানান, “প্রথমে অল্পসংখ্যক কম বয়সী কিছু ছেলে আসে। পরে হাজারো লোকজন এসে আমাদের বাড়িঘরে তাণ্ডব চালায়। অনেকেই এখনো আত্মীয়দের বাড়িতে। আমরা চরম আতঙ্কে আছি।”

রবীন্দ্র চন্দ্রের স্ত্রী রুহিলা রানী বলেন, “ছোট ছেলেটা যদি ভুল করে থাকে, আমরা তাকে থানায় দিয়েছি। কিন্তু তারপরও এমন ধ্বংসযজ্ঞ কেন? আমাদের গরু, সোনা-টাকা সব লুটে নিয়েছে। শুধু চাল-ডাল আর টিনে কি জীবন চলে?”

গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ও সদস্য সচিব আনিসুর রহমান লাকুসহ একটি প্রতিনিধি দল। তারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ করেন এবং পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

গংগাচড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল এমরান বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে কিশোরটিকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয় এবং পরে আদালতের মাধ্যমে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এখন পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তারপরও পুলিশ প্রশাসন সর্বাত্মক নিরাপত্তায় নিয়োজিত।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহামুদ হাসান মৃধা বলেন, “অপরাধীদের ধরতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া হচ্ছে সহায়তা। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পুরো এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে।” 

উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্যমতে, হামলায় ১৫টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাতে ২২টি পরিবার বসবাস করতেন। ঘর মেরামতের পর কিছু পরিবার ফিরলেও অভিযুক্ত কিশোর ও তার চাচার পরিবারের কেউ এখনো ফিরে আসেনি।

ঢাকা/আমিরুল/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের
  • মেসি বনাম ইয়ামাল: ফিনালিসিমার সময়-সূচি ঘোষণা
  • গংগাচড়ায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ, আতঙ্ক কাটেনি এখনও