রাজধানী ঢাকার দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী পশুরহাট শনির আখড়া (দনিয়া ক্লাবের পূর্ব পাশে ও ছনটেক মহিলা মাদ্রাসার পশ্চিমের খালি জায়গায় হাট)। এ হাটে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) ভোর থেকে ক্রেতার ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। এরই সঙ্গে বেড়েছে পশু বিক্রি। বিক্রেতারা আশা করছেন, আজ বৃহস্পতিবার (৫ জুন) ও শুক্রবার (৬ জুন) জমজমাট বেচাকেনা হবে।
শনির আখড়া পশুরহাট ঘুরে বিক্রেতা, ক্রেতা, হাসিল আদায়কারী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
নরসিংদী থেকে আসা গরু ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম জানান, এবার তিনি ৪৫টি গরু এনেছিলেন। বুধবার (৪ জুন) পর্যন্ত চিন্তায় ছিলেন। বিক্রি হচ্ছিল না। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে ১৭টি গরু বিক্রি করেছেন। তিনি আশা করছেন, আগামীকালকের (শুক্রবার) মধ্যে সব গরু বিক্রি হয়ে যাবে।
আরো পড়ুন:
ঈদযাত্রায় পাটুরিয়া ও আরিচা ফেরিঘাটে স্বস্তি
৩৫ মণের ‘কালো মানিক’ নিয়ে খালেদা জিয়ার বাড়ির পথে কৃষক সোহাগ
কুষ্টিয়া থেকে আসা সালাম জানান, আজ বৃহস্পতিবার (৫ জুন) ভোর থেকে বিক্রি জমতে শুরু করেছে। সন্ধ্যার পর থেকে ক্রেতা বাড়ে। তিনি ১২টা গরু বিক্রি করেছেন। আরো ২৫টা আছে। শুক্রবারের মধ্যেই সব গরু বিক্রি হয়ে যাবে বলে তিনি মনে করছেন।
নাটোরের সুলতান হোসেন গত তিন দিন ধরে গরু বিক্রি করতে পারেননি। আজ বৃহস্পতিবার (৫ জুন) পাঁচটি গরু বিক্রি করেছেন। তিনি ভেবেছিলেন, এবার বুঝি লোকসান খেতে হবে। এখন বিক্রি হতে দেখে তিনি সাহস পেয়েছেন।
শনির আখড়া পশুরহাটে রায়েরবাগ থেকে গরু কিনতে এসেছেন শরিফুল হক। তিনি তার ভাগিনা ও মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন। দেড় লাখ টাকায় গরু কেনার লক্ষ্য তার। দরদাম চলছিল তখনো। শরিফুল হক বলেন, ‘‘সাবধানে কিনতে চাই। কয়েকটা দেখে দামাদামি করছি। দেখি কী হয়?’’
পশুরহাটে শুধু পুরুষ নয়, নারীদেরও সরব উপস্থিতি দেখা গেছে। মর্জিনা এসেছেন স্বামী আতিক হাসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিবছরই হাটে আসি। গরু দেখি, দরদাম করি। এবারও এসেছি। নিজ চোখে না দেখলে ভালো বোঝা যায় না।’’
হাটে নারীদের কেউ কেউ সরাসরি বিক্রেতাদের সঙ্গে দরদাম করছিলেন। গরুর দাঁত, বয়স, ওজন এবং সম্ভাব্য মাংসের পরিমাণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছিলেন। কুতুবখালী থেকে আসা আবু রায়হা বলেন, ‘‘আমি, আমার বাবা, দুই ভাই ও চাচা মিলে এসেছি। হাটে এলে অনেক কিছু শেখা যায়। গরুর দাম, জাত, মাংস কেমন হয়, এসব বোঝা যায়।’’
হাটের হাসিল ঘরে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.
তিনি আরো জানান, গরুর দাম হিসাবে হাসিল নেয়া হচ্ছে। নিয়মিত রশিদ দেয়া হচ্ছে, যাতে কোনো অনিয়ম না হয়।
হাটের নিরাপত্তায় দায়িত্বরত কদমতলী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. হারুন বলেন, বুধবার (৪ জুন) সন্ধ্যার পর হাটে ভিড় বাড়লেও এখনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পোশাকধারীর পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশের টিম কাজ করছে। নারীদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, মাইকিং করে সতর্ক করা হচ্ছে। ছিনতাই, চুরি বা দালালের দৌরাত্ম্য যেন না হয়, সে বিষয়ে পুলিশ সতর্ক রয়েছে।
গরু ব্যবসায়ীরা জানান, বুধবার (৪ জুন) দিবাগত রাতে অনেক পশু হাটে প্রবেশ করেছে। আজকের বিক্রি দেখে তারা আশাবাদী বৃহস্পতিবার (৫ জুন) ও শুক্রবারে (৬ জুন) হাটে গরু সরবরাহ এবং সর্বোচ্চ বিক্রি হবে।
ঢাকা/এএএম/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
হাবিব ও সজীবের জল্লারপাড় লেকে জমজমাট মাদক বানিজ্য
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৭ নং ওয়ার্ডের জল্লারপাড় এলাকায় হাবিব ওরফে পিচ্চি হাবিব (মাদকসহ ৫/৭টি মামলার আসামি), একটা খুনি পরিবার থেকে বেড়ে ওঠা ভয়ংকর সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী ও কিশোর গাং লিডার।
বাবা মৃত কমল মিয়া এক সময় পুলিশের সোর্স ছিলেন যে কিনা খুন হয় নিজ সৎ ছেলের হাতে। হাবিবের বড় ভাই মানিক এলাকার জনি নামের এক ছেলেকে খুন করে যাবজ্জীবন সাজায় জেল খাটছে।
হাবিব ৫ই আগস্ট এর আগে আজমীর ওসমানেরক্যাডার বাহিনীর সক্রিয় সদস্য ছিলো। গণঅভ্যূত্থানের আগে এলাকায় বড় করে ১৫ আগস্ট পালন ও নাসিম ওসমানের মৃত্যুবার্ষিকী পালন এবং ওসমান পরিবারের পালিত ক্যাডারদের দাওয়াত করে মহড়া দেয়ার ছবি ও বিভিন্ন মিছিল মিটিং এর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল।
ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর সে যোগ দেয় বিএনপিতে। এলাকার বিএনপি'র বিভিন্ন নেতা ও দেওভোগের অনেক নেতার দেখা মিলে হাবিবের অফিসে ও আড্ডায়। অনেকেই আসে হোন্ডার বহর নিয়ে যার ফলে এলাকার মানুষ ভয়ে মুখ খুলেনা। মানুষকে আতঙ্কে রাখতে হাবিবকে দেখা যায় নিজে বড় বড় ছুড়ি নিয়ে মহড়া দিতে।
হাবিবকে শেন্টার দিচ্ছে বিএনপি'র ক্যাডার গাল কাটা জাকিরের ছোট ভাই ডাকাত সজিব। ডিস বাবুর নির্দেশে ডাকাতি করতে যাওয়া সজিব ডাকাতি মামলায় ৯বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি, হাইকোর্ট থেকে আপিল করে জামিনে আছে। সদর থানায় ৪/৫ টির বেশি মাদকসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে। হাবিব ও সজীব নারায়ণগঞ্জে আজমির ওসমানের ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে পরিচিত।
৫ আগস্টের পর সন্ত্রাসী ও তাদের গডফাদাররা এলাকা ছাড়লেও হাবিব ও সজীব এলাকায় আছে বহাল তবিয়তে। এর কারণ হাবিবের মাদক ব্যবসার অডেল টাকা ও তাদের দুজনের ক্ষমতা। মাদকের টাকায় হাবিব করেছে এলাকায় আলিশান দুইতালা বাড়ি। হাবিব ও সজীবের আয়ের উৎস হল তারা পাইকারি হিরোইন ইয়াবা ও গাজা ব্যবসায়ী।
এক নং বাবুরাইল, ২ নং বাবুরাইল, জিমখানা, পাইকপাড়া, নলুয়াপাড়া, ঋষিপাড়া সব জায়গায় হাবিব ও সজীবের মাদক বিক্রি হয়। হাবিবের দখলকৃত সবচেয়ে বড় স্পট হলো জিমখানা পানির টাংকি যা ফাইম ও সায়েম দেখে। এসব স্পটে দৈনিক লাখ লাখ টাকার নেশা বিক্রি হয়।
বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, এখান থেকে মাসোহারা পৌঁছে যায় কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তার পকেটে সেই সাথে নামধারী সাংবাদিকদের কাছে মাসোহারা পৌছে। জনশ্রুতি রয়েছে, এসব অসাধু পুলিশ কর্মকর্তা ও কথিত সাংবাদিকদের দাপটে হাবিব ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
হাবিবের প্রধান সেলসম্যান মিলন ও মাসুম ওরা একাধিকবার ডিবির কাছে গ্রেফতার হয় পরে বিশাল অংকের টাকা দিয়ে ছাড়া পায়। ওদের দুজনকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বেরিয়ে আসবে বিভিন্ন তথ্য।
এলাকায় একাধিকবার অভিযান পরিচালনা হলেও হাবিবকে ধরতে পারছে না প্রশাসন এর কারণ পুরো এলাকা বিভিন্ন সিসি ক্যামেরা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা জল্লারপাড় মসজিদের সামনে বিভিন্ন দোকানদার তাকে ফোন করে জানিয়ে দেয় এলাকায় পুলিশ আসছে, প্রশাসন ঢোকার আগেই হাবিব সটকে পড়ে। এলাকা ঘনবসতি হওয়ায় লুকিয়ে যায় অন্য কারো ঘরে এজন্য প্রশাসন ধরতে না পড়ে চলে আসে।
এলাকার সবাই রাতে যখন ঘুমায় তখন তার বিচরণ দেখা যায় বিভিন্ন অলিতে গলিতে। গভীর রাতে সঙ্গী সহ অনেক পাওয়ারের টর্চ লাইট ও দেশি অস্ত্রশস্ত্র সাথে থাকে ডাকাত সজিব ও কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা। হাবিব ও সজীবের বিরুদ্ধে রয়েছে অন্যের জায়গা দখলে নেওয়ার অভিযোগও।
একাধিক বাড়ির মালিক তাদের বাড়ির কাজ করতে পারছে না তাদের দুজনের জন্য। চাঁদা না দিলে কাজ বন্ধ। চাঁদা দিয়ে মীমাংসা করলেই বাড়ির কাজ করতে পারছেন। অন্যের কেনা বাড়িতে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিচ্ছে তারা দুজন জায়গার দাবি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
এলাকাবাসী এখন হাবিব ও সজীবের হাতে জিম্মি। সবাই এর থেকে মুক্তি চায়। হাবিব এতটাই ধুরন্দর যে প্রশাসনে হাত থেকে বাঁচার জন্য ৫ ই আগস্ট এর পর এলাকায় ওয়াইফাই ব্যবসা দিয়েছে, তার সেলসম্যান মাসুম এই ব্যবসার ম্যানেজার সে সম্পূর্ণ ব্যবসা দেখাশোনা করছে। মাসুমেরও বিভিন্ন ছবি আছে আজমির ওসমানের মিছিলে ও ১৫ ই আগস্টের খিচুড়ির বিতরনের অনুষ্ঠানে।
ছাত্র আন্দোলনের সময় হাবিব, সজীব ও মাসুম তাদের সবারই ওসমান পরিবারের পক্ষে ছিল নজর কাড়া ভূমিকা। মোট কথা এলাকাবাসী এখন সম্পূর্ণ জিম্মি হাবিব ও সজীবের কাছে।
নারায়ণগঞ্জের সব মাদকের স্পটে অভিযান হলেও জল্লারপাড়ায় হাবিবের মাদকের স্পটে কেন অভিযান হচ্ছে না এ নিয়ে এলাকাবাসীর মনে বিভিন্ন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। এলাকাবাসী দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছে তারা হাবিব ও সজীবের জিম্মি থেকে মুক্তি হতে চায়।