একদিন বাদেই পবিত্র ঈদুল আজহা। এই ঈদকে সামনে রেখে চাঁপাইনবাবগঞ্জে জমে উঠেছে কোরবানির পশু কেনাবেচা। এবারের হাটে ক্রেতাদের কাছে দেশি জাতের ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বেশি। এসব গরুর দাম বেশি হলেও বড় আকারের গরুর দাম তুলনামূলক কম। সব মিলিয়ে এ জেলায় কোরবানিতে প্রায় ৯০০ কোটি টাকার পশু বাণিজ্যের আশা করছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১ লাখ ৩৫ হাজার কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে। এর বিপরীতে খামারগুলোতে পশু পালন করা হয়েছে ২ লাখ ৬৯১টি। জেলাজুড়ে মোট চাহিদার চেয়ে প্রায় ৬৬ হাজার পশু বেশি রয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, “এ বছর চাহিদার তুলনায় বেশি কোরবানি পশু রয়েছে। উদ্বৃত্ত পশু রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়েছে। সবমিলিয়ে এবার কোরবানি ঈদের জন্য পশু বিক্রি করে ৯০০ কোটি টাকা বাণিজ্যের সম্ভবানা রয়েছে।”

আরো পড়ুন:

সরবরাহ বেড়েছে, তাই গরুর দাম কম: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ঈদযাত্রা: কমলাপুরে ঘরমুখো মানুষের ঢল

গোখাদ্যের প্রভাব পশুর হাটে: 
গোখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে সীমান্তবর্তী এ জেলার পশুর হাটগুলোয়। গরুর দাম বেশি হওয়ায় হাটগুলোতে দামাদামি করে বিক্রেতাদের সঙ্গে পেরে উঠছেন না ক্রেতারা। অন্য বছরের তুলনায় এবার গরু বেচাকেনা কম বলে দাবি করেছেন বিক্রেতারা। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার বটতলা, শিবগঞ্জের তর্তিপুর, মনাকষাসহ সোনাইচণ্ডি ছোটবড় সব মিলিয়ে ১৯টি হাটে গরু বেচাকেনা চলছে। ব্যবসায়ীরা জানান, ছোট ও মাঝারি আকারের গরুগুলো ৩১-৩৩ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। আকারে বড় এমন গরু মিলছে দেশি-বিদেশি জাত বিভাজন করে ২৬-২৮ হাজার টাকা মণ দরে। 

জেলার রামচন্দ্রপুর হাট থেকে বটতলা হাটে ১০টি মাঝারি ও বড় আকারের গরু নিয়ে এসেছেন আলাউদ্দিন। তিনি বলেন, “এখন পর্যন্ত মাত্র একটা গরু বিক্রি করতে পেরেছি। বাজারে গরু সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেও ক্রেতার সংখ্যা খুবই কম। দর্শনার্থী বেশি।”

গরু খামারি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “গত কয়েক বছরের ব্যবধানে গোখাদ্যের দাম বেড়েছে আড়াই থেকে তিন গুণ। যার কারণে গত বারের তুলনায় গরুর দাম কিছুটা বেড়েছে। বাজারে গরুর দাম বেশি হওয়ায় দামাদামি করেও মনমত গরু কিনতে পারছেন না ক্রেতারা। যারা ভাগে কোরবানি দেবেন তারাই বেশি দাম দিয়ে হলেও গরু কিনছেন।”

পশুর হাটে এখন গরু বিক্রি না হলে বড় ক্ষতির আশঙ্কা করছেন খামারিরা। আব্দুর রহমান ও রহমত আলীর ভাষ্য- কাঙ্খিত দামে গরু বিক্রি করতে না পারলে বড় ক্ষতি মুখে পড়বেন তারা। কোরবানির সময় গরু বিক্রি করতে পুরো বছর ধরে টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। এখন গরু বিক্রি না হলে তাদের বিপাকে পড়তে হবে।

ছাগলে দিকে ঝোঁক: 
চাঁপাইনবাবগঞ্জের হাটগুলোয় গতবার প্রতিমণ গরু ৩০ হাজারেও কম দামে বিক্রি হয়েছিল। সেই তুলনায় এবার গরুর দাম কিছুটা বেড়েছে। অবশ্য কোরবানি যোগ্যপশু দাম বাড়ার যৌক্তিক কারণও আছে। সব মিলিয়ে এবার কোরবানির জন্য ছাগলের দিকে ঝুঁঁকছেন অনেকেই। কিন্তু সেখানেও দাম বাড়তির দিকে। বিক্রেতারা বলছেন- এরইমধ্যে হাটে আসা বেশিরভাগ ছাগল বিক্রি হয়ে গেছে। ফলে অবশিষ্ট ছাগলগুলোতে বিক্রেতারা অতিরিক্ত দাম হাঁকছেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার শিবতলা মহল্লার বাসিন্দা শিহাব আলী বলেন, “গরুর সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে ছাগলের দামও। ১৪-১৫ হাজারের নিচে ছাগলই পওয়া যাচ্ছে না। তাও যা মিলছে, আকারে অনেকটা ছোট। মানুষের আগ্রহ ১৮-২০ হাজার টাকার ছাগলে। এসব ছাগলের মোট ওজন ৩৮-৪৫ কেজি পর্যন্ত।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ ডেইরি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুনজের আলম মানিক বলেন, “এ খাতকে ধরে রাখতে ভালো বাজার ব্যবস্থাপনা করতে হবে। খামার ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন ও গো-খাদ্যের দাম কমানোসহ ভর্তুকি দিলে খামারিরা সব সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে পারবেন।”

ঢাকা/মেহেদী/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গর ক রব ন র হ ট প ইনব বগঞ জ ক রব ন র

এছাড়াও পড়ুন:

পায়রা বন্দরসহ দুই প্রকল্পের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন

পায়রা বন্দরের জন্য সংশ্লিষ্ট পরিসেবাসহ দুটি শিপ টু শোর ক্রেন সরবরাহ এবং নারায়ণগঞ্জের খানপুরে অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার এবং বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পে কাজের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। প্রস্তাব দুটিতে ব্যয় হবে ৪৫০ কোটি ১১ লাখ ১০ হাজার ২৫৪ টাকা।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রি পরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় কমিটির সদস্য ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভা সূত্রে জানা যায়, পায়রা সমুদ্র বন্দরের প্রথম টার্মিনাল এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্পের আওতায় সংশ্লিষ্ট পরিসেবাসহ দুটি শিপ টু শোর ক্রেন সরবরাহ এবং স্থাপন কাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে ৪টি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে (১) এইচপি এবং (২) এনজে, চায়না প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ১৬২ কোটি ২ লাখ ১১ হাজার ৫৬৮ টাকা।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ‘নারায়ণগঞ্জের খানপুরে অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার এবং বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পের প্যাকেজ নম্বর দুইয়ের পূর্ত কাজের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এ জন্য উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ২টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে। দরপত্রের সকল প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে (১) স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স এবং (২) এসএস রহমান ইন্টারন্যানাল লিমিটেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ২৮৮ কোটি ৮ লাখ ৯৮ হাজার ৬৮৬ টাকা।

ঢাকা/হাসনাত//

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কাফকো সার কারখানায় গ্যাস বিক্রির চুক্তি সই
  • গ্যাস অপচয়ে বছরে ক্ষতি ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি: পেট্রোবাংলা
  • পাবনায় আগাম পাটের বাজার চড়া, বেশি দাম পেয়ে কৃষক খুশি
  • পায়রা বন্দরসহ দুই প্রকল্পের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন
  • নবায়নযোগ্য জ্বালানির যুগ কড়া নাড়ছে দরজায়
  • ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধে জয় হচ্ছে বোয়িংয়ের
  • বিদেশি ঋণ পরিস্থিতি অসম্ভব উদ্বেগের জায়গায় যাচ্ছে