বৃষ্টিতে কোরবানির পশুর দাম কমার আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের
Published: 5th, June 2025 GMT
কোরবানির ঈদের আর মাত্র একদিন বাকি। আগামী ৭ জুন পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদকে কেন্দ্র করে রাজধানীর পশুর হাটগুলো জমে উঠেছে।
তবে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকাল থেকেই রাজধানীতে থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। ঈদের আর একদিন বাকি থাকলেও বৃষ্টির কারণে পশুর হাটে ক্রেতার উপস্থিতি কম। ফলে বৃষ্টির কারণে দাম কমে যাওয়ার আশঙ্কায় পশু বিক্রেতারা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর উত্তর শাহজাহানপুর, তেজগাঁও ও মেরুল বাড্ডার হাট ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে। পশু বিক্রেতারা বলছেন, বৃষ্টির কারণে হাটে তুলনামূলক লোক সমাগম কম। ফলে প্রত্যাশা অনুযায়ী ক্রেতারা দাম বলছেন না। বৃষ্টি হলে দাম পড়ে যায়, আবার রোদ উঠলে দাম বাড়ে। তাই বৃষ্টি কমার আশায় রয়েছেন পশু বিক্রেতারা। বৃষ্টি না হলে কোরবানির পশু বেচাকেনা জমে উঠবে।
আরো পড়ুন:
চাঁপাইনবাবগঞ্জে কোরবানিতে ৯০০ কোটি টাকার পশু বাণিজ্য
সরবরাহ বেড়েছে, তাই গরুর দাম কম: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
এদিকে, গত কয়েক দিনের তুলনায় আজ হাটে গরু দাম কিছুটা কম বলে মনে করেন কোরবানির পশু কিনতে আসা কিছু ক্রেতা। আবার অনেক ক্রেতাই বলছেন, এখনও চড়া দাম হাঁকা ছাড়ছেন না পশু বিক্রেতারা।
এখনো কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, সিরাজগঞ্জ, নাটোর, পাবনা, ময়মনসিংহ, মাদারীপুর, ও ফরিদপুর থেকে ট্রাকে করে বিভিন্ন হাটে গরু-ছাগল নিয়ে আসছেন কৃষক, খামারি ও ব্যবসায়ীরা। হাট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত স্থানে রাখা হচ্ছে পশুগুলো। বৃষ্টির মধ্যে কাদা-পানি থেকে গরুকে রক্ষা করতে দাঁড়ানোর জায়গা উঁচু করা হয়েছে, ত্রিপল ও পলিথিন দিয়ে উপরে দেওয়া হয়েছে ছাউনি। আর হাটে বিভিন্ন ব্যাংকের পক্ষ থেকে জাল নোট শনাক্তে বুথ বসানো হয়েছে।
উত্তর শাহজাহানপুরে চুয়াডাঙ্গা থেকে গরু নিয়ে আসা ব্যবসায়ী মো মনির বলেন, “হাটে গরু নিয়ে হাটে এসেছি ২৬টি। এ পর্যন্ত ১৫টা বিক্রি হয়েছে। বাকি আছে ১১টা। গরুগুলো বড় আকারের। ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বেশি থাকায় সেগুলো দ্রুত বিক্রি হয়ে গেছে। তবে বৃষ্টির কারণে গরুর দাম কমে যাওয়ার আশঙ্কায় আছি।”
মেরুল বাড্ডায় সিরাজগঞ্জ থেকে গরু নিয়ে এসেছেন ব্যবসায়ী ফজল আহমেদ। তিনি বলেন, “সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে ক্রেতা কমে যাওয়ার দামও প্রত্যাশা অনুযায়ী দাম পাচ্ছি না।”
দক্ষিণ বনশ্রী থেকে মেরুল বাড্ডা হাটে নাতিকে নিয়ে গরু কিনতে এসেছেন আমিনুর রহমান। দর-দাম করে ৮২ হাজার টাকায় গরু কিনেছেন। গরুটি এই দামে কিনতে পেরে তিনি সন্তুষ্ট। তিনি বলেন, “মেরুল বাড্ডা হাটে দরদাম করে কিনতে পারলে প্রত্যাশা অনুযায়ী পশু কেনা যাচ্ছে। বৃষ্টির কারণে সমস্যা হচ্ছে। যেহেতু ঈদের আর মাত্র একদিন বাকি। তাই আজকেই গরু কিনে ফেললাম।”
ঢাকা/এনটি/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক রব ন র হ ট ক রব ন র দ ম কম ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
৯০ বছর বয়সী এই নারীর বিধবা ভাতার টাকা খোয়া গেল কীভাবে
মুঠাফোনে বিধবা ভাতার টাকা পেয়েছিলেন ৯০ বছর বয়সী আমেনা বেগম। আশা ছিল ঈদে নিজের জন্য নতুন কাপড় কিনবেন, নাতি-নাতনিদেরও কিছু দেবেন। ভালো কিছু খাবেন। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার দোকানে গিয়ে টাকা তুলতে গিয়ে জানলেন, যে মুঠোফোন নম্বরে টাকা এসেছে, সেখানে টাকা নেই, অন্য নম্বরে পাঠানো হয়ে গেছে।
দোকানির কাছে এ কথা শুনে হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করেন আমেনা বেগম। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, তাঁর ঈদটাই শেষ হয়ে গেল।
আমেনা বেগম ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার তালসার গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ওই গ্রামের প্রয়াত আবদুল জলিলের স্ত্রী।
বয়স্ক এই নারী বলেন, ছোটবেলায় তাঁর বিয়ে হয়। তাঁর চার ছেলে ও চার মেয়ে। স্বামী অন্যের জমিতে কৃষিকাজ করতেন। ছেলেরাও এখন অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজ করেন। মেয়েরা বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে থাকেন। ছেলেমেয়েরা নিজের সংসার নিয়ে ব্যস্ত। তিনি ছেলেদের কাছে থাকেন। কিন্তু তাঁরাও হতদরিদ্র, নিজেরাই সংসার চালাতে হিমশিম খায়।
আমেনা বেগম বলেন, তিনি প্রথমবারের মতো বিধবা ভাতার টাকা পেয়েছেন। ২৯ মে তাঁর ছেলের মুঠোফোন নম্বরে ভাতার এক বছরের ৬ হাজার ৬০০ টাকা একসঙ্গে আসে। কিন্তু দোকানে গিয়ে শোনেন টাকা অন্য নম্বরে পাঠানো হয়ে গেছে।
দোকানির ভাষ্য, ওই বৃদ্ধার মুঠোফোন থেকে একটি মুঠোফোন নম্বরে ৩৯ টাকা রিচার্জ করা হয়। পরে ওই নম্বরে ৬ হাজার ৬০০ টাকা ‘সেন্ড মানি’ করা হয়।
মুঠোফোনটি ব্যবহার করেন ওই বৃদ্ধার ছেলে আবদুস সাত্তার। তিনি বুঝতে পারছেন না কীভাবে তাঁর ফোন থেকে ‘সেন্ড মানি’ হয়েছে। তিনি বলেন, তাঁরা গরিব মানুষ। মা ভাতার টাকা পেলে নিজের প্রয়োজনমতো খরচ করতেন। এবারও টাকা পেয়ে অনেক আশা করেছিলেন। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল। কীভাবে টাকাটা খোয়া গেছে, এর সুষ্ঠু তদন্ত চান তিনি।
যে নম্বরে ওই বৃদ্ধার টাকা গেছে, সেই নম্বরে বেশ কয়েকবার ফোন দিয়েও সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুশনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহারুজ্জামান সবুজ বলেন, ওই নারীকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে চেনেন। কীভাবে এ ঘটনা ঘটেছে, এ ব্যাপারে তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।
কোটচাঁদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।