Risingbd:
2025-06-06@17:21:47 GMT

সদরঘাটে স্বস্তির ঈদযাত্রা

Published: 5th, June 2025 GMT

সদরঘাটে স্বস্তির ঈদযাত্রা

আগামী ৭ জুন পবিত্র ঈদুল আজহা। রাজধানীর ব্যস্ত সড়ক ও রেল স্টেশনগুলোর পাশাপাশি এবার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালেও দেখা যাচ্ছে ঘরমুখো মানুষের ভিড়। এবার সদরঘাট হয়ে নৌপথে মানুষজন বেশ স্বস্তি ও নিরাপত্তার কথা বলেছেন।

বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সদরঘাট ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই লঞ্চ টার্মিনালের বিভিন্ন ঘাটে যাত্রীদের চাপ বাড়ছে। কেউ আগেই টিকিট কেটে কেবিনে উঠেন। কেউ কেবিন না পেয়ে ডেকে জায়গা নেন। কারো চোখে ঈদের উচ্ছ্বাস, কারো চোখে দীর্ঘ পথ শেষে প্রিয়জনের মুখ দেখার প্রতীক্ষা।

লঞ্চেই স্বস্তির যাত্রা
বরিশালগামী এমভি সুন্দরবন-৯ লঞ্চের যাত্রী কালাম গাজী বলেন, “পদ্মা সেতু চালু হলেও ঈদে লঞ্চেই যাই। বাসে এখন ভাড়া বেশি, তাছাড়া পরিবার-পরিজন নিয়ে লঞ্চই সবচেয়ে আরামদায়ক। শান্তির মতো লঞ্চে যাত্রা আর কিছুতে হয় না।”

আরো পড়ুন:

নৌপথে ঈদযাত্রায় শৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর নজরদারি

ঈদযাত্রায় প্রস্তুত পাটুরিয়া-আরিচা নৌরুট

ভোলাগামী যাত্রী আরিফ হাসান বলেন, “ভোলায় যাওয়ার একমাত্র ভরসা নৌপথ। এবার যাত্রাটা ব্যতিক্রম-বাড়তি ভাড়া নিচ্ছে না কেউ, ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রীও নেয় না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারির জন্য মালিকরা সুবিধা করতে পারছে না।”

বরিশালগামী যাত্রী পারভেজ বলেন, “পদ্মা সেতুর কারণে ভিড় আগের মতো না থাকলেও পরিবার নিয়ে আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য লঞ্চই বেছে নিই। রোজার ঈদে যেতে পারিনি, এবার না গেলে চলবে না।”

ব্যতিক্রমী নিরাপত্তা ব্যবস্থা
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে এবার দেখা যাচ্ছে নজিরবিহীন নিরাপত্তা প্রস্তুতি। প্রতিটি লঞ্চে মোতায়েন আছেন ৪ জন করে আনসার সদস্য। এর পাশাপাশি কাজ করছেন ডিএমপি, র‌্যাব, নৌপুলিশ, সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস এবং বিআইডব্লিউটিএর সদস্যরা। সাদা পোশাকে গোয়েন্দারাও রয়েছেন নজরদারিতে।

বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক মো.

মোবারক হোসেন বলেন, “নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা সার্বক্ষণিক দায়িত্বে রয়েছেন। বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ সেভাবে পাইনি। সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় যাত্রা এবার অনেক স্বস্তিদায়ক।”

নৌপুলিশের একজন উপপরিদর্শক বলেন, “নদীতে নিয়মিত টহল চলছে। সদরঘাটে যাত্রীদের নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে। যাত্রীদের কোনো অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিচ্ছি।”

বাড়তি লঞ্চ, আগাম সার্ভিস
ঈদযাত্রাকে নির্বিঘ্ন করতে বুধবার (৪ জুন) রাত থেকেই শুরু হয়েছে ঈদের বিশেষ লঞ্চ সার্ভিস, চলবে ১৪ জুন পর্যন্ত। বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতির তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন যাত্রী সংখ্যার ওপর নির্ভর করে সাত থেকে আটটি লঞ্চ যাতায়াত করছে। অন্তত ১৬টি লঞ্চ প্রস্তুত রাখা হয়েছে এই সেবার জন্য।

এমভি সুন্দরবন-১৫ লঞ্চের সুপারভাইজার মো. কবির হোসেন বলেন, “চাহিদা অনুযায়ী বাড়তি লঞ্চ নামাতে হয়েছে। এবার টার্গেট অনুযায়ী টিকিট বিক্রি হয়েছে। কোনো বাড়তি ভাড়া নেওয়া হয়নি।”

বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতির সদস্য সচিব সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, “এবার যাত্রীরা স্বস্তিতে যাত্রা করছেন এটা আমাদের বড় প্রাপ্তি। অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নিয়েছি।দুই ঈদের সময়ই আমাদের ব্যবসার বড় মৌসুম। পরিবার নিয়ে অনেকে লঞ্চেই যাতায়াত করতে চান, তাই আমরা চেষ্টা করছি সেবা নিশ্চিত করতে।”

সীমাবদ্ধতা ও জনভোগান্তি
যদিও নৌযাত্রায় স্বস্তি থাকলেও সমস্যা একেবারে নেই তা নয়। সদরঘাটের যাত্রীরা গুলিস্তান থেকে অনেকটা পথ হেঁটেই পৌঁছাচ্ছেন ঘাটে। ঈদের সময় রাজধানীতে যানজট বাড়ে, আর সদরঘাট তার অন্যতম ভুক্তভোগী এলাকা।

এছাড়া কেবিনের অগ্রিম চাহিদা বেশি থাকলেও এবার কিছুটা ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। কেবিন টিকিট পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি, তবে ডেকে যাত্রীর চাপ অনেক বেশি।

বিআইডব্লিউটিসির নৌযান বা রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থাগুলো এবার ঈদে যাত্রীসেবায় কোনো বিশেষ উদ্যোগ নেয়নি। এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন অনেক যাত্রী। ভাড়ার দিক থেকে বেসরকারি লঞ্চের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে মানুষকে।

বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ-পরিচালক শেখ মো. সেলিম রেজা বলেন, “ঈদের দীর্ঘ ছুটির কারণে এবার যাত্রীর চাপ অনেক বেশি হবে। তাই আমরা যাত্রী সেবায় বাড়তি প্রস্তুতি রেখেছি। আশা করি, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সবকিছু স্বাভাবিক থাকবে।”

বরিশাল শহরে বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদ করতে যাচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তা নেয়ামুল করিম। তিনি বলেন, “পদ্মা সেতুর যুগে এসেও নদীপথের গুরুত্ব কমেনি। বরং নিরাপদ, স্বস্তিদায়ক ও পারিবারিক ঈদযাত্রার জন্য এখনো দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের প্রথম পছন্দ লঞ্চ। সরকার, লঞ্চ মালিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এবারের ঈদযাত্রা যেমন শৃঙ্খলিত, তেমনি স্বস্তিদায়কও।”

ঢাকা/এএএম/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন পথ ন পর বহন প রস ত ত ঈদয ত র ব যবস থ সদরঘ ট র জন য স বস ত সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

সরাসরি পদ্ধতিতে এলএনজি আমদানিতে নীতিগত অনুমোদন

সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে এলএনজি আমদানি, উদ্ধারকারী জাহাজ ‘প্রত্যয়’ মেরামত এবং বাংলাদেশ জুট মিল করপোরেশনের (বিজেএমসি) খালি জায়গা বিক্রিতে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।

বুধবার (৪ জুন) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির সভায় প্রস্তাবগুলোতে অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় কমিটির সদস্য এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভা সূত্রে জানা যায়, জিটুজি ভিত্তিতে ওকিউ ট্রেডিং লিমিটেড ইউএই থেকে স্বল্প মেয়াদে ২০২৫ ও ২০২৬ সালে জাপান কোরিয়া মার্কেটিং ফরমুলা ভিত্তিতে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে এলএনজি ক্রয়ের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।

আরো পড়ুন:

মূল্যস্ফীতি কমলে সেপ্টেম্বরের মধ্যে সুদহার কমানো হবে: গভর্নর 

অপ্রদর্শিত আয় ব্যবহারের সুযোগ থাকছে: এনবিআর চেয়ারম্যান

সভায় ,বিআইডব্লিউটিএ’র উদ্ধারকারী জাহাজ ‘প্রত্যয়’-এর ডকিং ও ডকিং সংশ্লিষ্ট মেরামত কাজ সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ক্রয়ের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক ২০১৩ সালে উদ্ধরকারী জাহাজ ‘প্রত্যয়’ সংগ্রহ করা হয়। জাহাজটি প্রতি চার বছর অন্তর মেরামত করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও সংগ্রহের প্রায় ১২ বছর অতিক্রান্ত হলেও তা মেরামত করা হয়নি। 

মেরামতের জন্য উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলেও কোনো রেসপনসিভ দরদাতা পাওয়া যায়নি। জাহাজটি জরুরিভিত্তিতে ডকিং করে সংশ্লিষ্ট মেরামত কাজ পিপিআর ২০০৮ এর ৭৬ (২) অনুযায়ী সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত ‘চট্টগ্রাম ড্রাই ডক লিমিটেড’ এর মাধ্যমে বাস্তবায়নের নীতিগত অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলে কমিটি তাতে অনুমোদন দিয়েছে। বর্ণিত কাজের প্রাক্কলিত ব্যয় ৬ কোটি ১৩ লাখ ৭ হাজার ২৮ টাকা।

সভায় বিজেএমসি’র নিয়ন্ত্রণাধীন ময়মনসিংহ জুট মিলস লিমিটেড এর ১৬.৮৯ একর জমি বিক্রয়ের প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। ‘ময়মনসিংহ জুট মিলস লিমিটেড’ ১৯৬৮ সালে স্থাপিত হয়। ১৯৯৩ সলে মিলটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

সরকারি সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে মিলটি টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করে মিলের ৬২.৫০ একর জমির মধ্যে ৪৫.৬১ একর জমিসহ ক্রেতার নিকট মিলটি হস্তান্তর করা হয়। বিজেএমসির নিয়ন্ত্রণাধীন অবশিষ্ট ১৬.৮৯ একর জমি ময়মনসিংহ জেলার কোতোয়ালী থানার চর ঈশ্বরদিয়া মৌজায় অবস্থিত। উক্ত জমিটির কোনো সীমানা প্রাচীর না থাকায় তত্ত্বাবধান করা ও দখলে রাখা কষ্টসাধ্য এবং জমিটি খালি পড়ে থাকায় বেদখল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ কারণে বিজেএমসি’র পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক জমিটি বিক্রির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

২০১৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় জমি বিক্রয়ের অনুমোদনের প্রস্তাব করা হলে মিলটির অব্যবহৃত জমি বিক্রয় না করে সরকারের উন্নয়নমূলক/জনহিতকর কাজে ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হয়।

অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির উপর্যুক্ত সিদ্ধান্ত থাকা সত্ত্বেও উক্ত জমি মিল হতে দূরবর্তী হওয়ায় এবং জমিটি বিজেএমসি’র ব্যবহারে উপযোগিতা না থাকায় রাষ্ট্র মালিকানাধীন ময়মনসিংহ জুট মিলস লি. এর ১৬.৮৯ একর জমি বিক্রয়ের নীতিগত অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব করা হলে কমিটি তাতে অনুমোদন দিয়েছে।

সভায়, ঢাকা জেলার ডেমরা থানার কায়েতপাড়া মৌজায় অবস্থিত বিজেএমসি’র নিয়ন্ত্রণাধীন লতিফ বাওয়ানী জুট মিলস লিমিটেডের ৬.৪৮৫ একর জমি বিক্রয়ের প্রস্তাবেও নীতিগত অনুমোদন দেয় কমিটি।

ঢাকা/হাসনাত/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঈদুল আজহা: সারা দেশে র‌্যাবের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা জোরদার
  • মহাসড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার
  • ঘাট ডুবে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেল চিলমারী-রৌমারী নৌপথের ফেরি চলাচল
  • লঞ্চে উঠতে গিয়ে বুড়িগঙ্গা নদীতে পড়ে গেলেন ৫ যাত্রী
  • ঈদযাত্রায় পাটুরিয়া ও আরিচা ফেরিঘাটে স্বস্তি
  • সরাসরি পদ্ধতিতে এলএনজি আমদানিতে নীতিগত অনুমোদন
  • সদরঘাটে ঘরমুখো মানুষের ভিড়
  • সমালোচনার মুখে অবশেষে ২১০ টাকা ভাড়াতেই চালু হলো স্পিডবোট
  • নৌপথে ঈদযাত্রায় শৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর নজরদারি