যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ফোনে কথা বলেছেন। বৃহস্পতিবার দুই নেতা প্রায় দেড় ঘণ্টা কথা বলেন। বাণিজ্য নিয়ে দুজনের মধ্যে ‘খুবই ভালো’ আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। এ ছাড়া দুই নেতা পরস্পরকে দুই দেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লেখেন, ‘প্রায় দেড় ঘণ্টা আলাপ হয়েছে। এতে উভয় দেশের জন্যই অত্যন্ত ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হয়েছে।’ যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাণিজ্য প্রতিনিধিদল শিগগিরই নতুন করে বৈঠকে বসবে বলেও জানান তিনি।

ট্রাম্প আরও লেখেন, ‘প্রেসিডেন্ট সি অত্যন্ত সৌজন্যের সঙ্গে আমাকে ও ফার্স্ট লেডিকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আমিও পাল্টা আমন্ত্রণ জানিয়েছি। এটি এমন একটি বিষয়, দুটি মহান জাতির প্রেসিডেন্ট হিসেবে যার জন্য আমরা উভয়েই অপেক্ষা করছি।’

এদিকে ফোনালাপে ট্রাম্পকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ‘গতিপথ সংশোধন’ করার কথা বলেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিনহুয়া এ তথ্য দিয়েছে।

ট্রাম্পকে সি বলেন, ‘চীন-মার্কিন সম্পর্কের বিশাল জাহাজের গতিপথ ঠিক করতে আমাদের এটি ভালোভাবে পরিচালনা করতে হবে এবং সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে হবে। বিশেষ করে সব ধরনের হস্তক্ষেপ এবং এমনকি ধ্বংসাত্মক প্রভাব দূর করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

গত মাসে জেনেভায় স্বাক্ষরিত ‘বাণিজ্যযুদ্ধ বিরতিকে’ ঝুঁকিতে ফেলার জন্য বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির দেশের কর্মকর্তারা একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার পর এই আহ্বান জানানো হলো।

এ ছাড়া দুই দেশের সংঘাত এড়াতে তাইওয়ান ইস্যু সতর্কতার সঙ্গে সামলাতে ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সি। ফোনালাপে তিনি বলেন, ওয়াশিংটনের উচিত হবে তাইওয়ান প্রশ্ন সতর্কতার সঙ্গে সামলানো, যাতে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রকে সংঘাত ও মুখোমুখি অবস্থানে ঠেলে দেওয়ার তাইওয়ানের স্বাধীনতাকামীদের তৈরি ঝুঁকি এড়ানো যায়।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত

নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।

কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।

১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)

আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)

ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।

৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)

ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।

৪. ঋণের মেয়াদ

কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।

৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)

শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।

৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)

ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।

৭. প্রসেসিং ফি

আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।

৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)

বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।

৯. জামানত (কোলেটারাল)

ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।

১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও

আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ