ঈদুল আজহা সামনে রেখে জমে উঠেছে রাজধানীর কোরবানির পশুর হাটগুলো। ঈদের ছুটি শুরু হওয়ায় রাজধানীবাসী এখন হাটমুখো। শুক্রবার (৬ জুন) ভোর থেকে বিভিন্ন হাটে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী পশুরহাট শনির আখড়ায় (দনিয়া ক্লাবের পূর্ব পাশে ও ছনটেক মহিলা মাদ্রাসার পশ্চিমের খালি জায়গায়) জমজমাট বেচাকেনা।
ভোর থেকে ক্রেতার ঢল
হাট ঘুরে দেখা গেছে, প্রিয় কোরবানির পশু কিনতে ভোরেই হাটে এসেছেন অনেকে, কেউ কেউ রাতভর হাটে অপেক্ষা করছেন ভালো মানের পশুর আশায়। এই হাটে মিলছে নানা জাতের গরু, ছাগল, খাসি, ভেড়া, মহিষ এমনকি দুম্বাও। ক্রেতারা দর-কষাকষি করে খামারি ও ব্যাপারীদের কাছ থেকে কিনে নিচ্ছিলেন পছন্দের পশু।
প্রতিবারের মতো এবারো সবচেয়ে বেশি চাহিদা মাঝারি ও ছোট আকারের গরুর। বড় গরুর প্রতি আগ্রহ কিছুটা কম থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অনেক বিক্রেতা।
আরো পড়ুন:
কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সবার সহযোগিতা চায় পরিবেশ মন্ত্রণালয়
বিক্রি হয়নি ১১০০ কেজির ‘লাক্সারি প্রাডো’
বিক্রির গতি নিয়ে আশাবাদ
খামারি ও ব্যাপারীরা বলছেন, গত কয়েকদিন তেমন বিক্রি না হলেও শুক্রবার ভোর থেকে পশু বিক্রি জমে উঠেছে। তারা আশা করছেন, আজ বিকেলের মধ্যে বেশিরভাগ পশু বিক্রি হয়ে যাবে।
মুন্সিগঞ্জ থেকে আসা গরুর ব্যাপারী খবিরুল আলস বলেন, “আজ সকালে একবারে ২৮টা গরু বিক্রি হয়েছে। বাকি ৩২টাও আজকের মধ্যে বিক্রি হয়ে যাবে বলে আশা করছি। দাম ভালো পেয়েছি। গরুর চাহিদা বেড়েছে।”
সিরাজগঞ্জ থেকে আসা বশির হোসেস নামের এক ব্যাপারী বলেন, “সকাল থেকে বিক্রি ভালো হচ্ছে। বিকেলের পর ভিড় আরো বাড়বে। ২২টা গরু বিক্রি করেছি, আরো ৮টা আছে।”
ফরিদপুরের সুজন বলেন, “গত কয়েকদিন একটাও গরু বিক্রি হয়নি। আজ ১৫টা বিক্রি হয়েছে। ভেবেছিলাম লোকসান হবে, কিন্তু বিক্রি হওয়ায় এখন টেনশন মুক্ত আমি।”
ক্রেতাদের মতামত
সাইনবোর্ড থেকে হাটে গরু কিনতে আসেন সফি আহমদ। তার বাজেট ছিল দুই লাখ টাকা। তিনি বলেন, “কয়েকটা গরুর দরদাম করছি। দেখি কী হয়।”
কুতুবখালী থেকে আসা জালাল মিয়া বলেন, “সবাই মিলে এসেছি। দুই লাখে একটা গরু কিনলাম।”
তবে অনেক ক্রেতা দাম নিয়ে কিছুটা অসন্তুষ্ট। সোবাহান নামের এক ক্রেতা বলেন, “মাঝারি সাইজের গরুর দাম অনেক বেশি। ছোট ও মাঝারি গরুর দামও একটু চড়া। হাটে ভিড় বাড়লে হয়তো দাম কিছুটা কমবে।”
হাসিল ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা
হাটের হাসিল আদায়কারী মো.
হাটের নিরাপত্তা নিয়েও কর্তৃপক্ষ সতর্ক
কদমতলী থানার এসআই মো. মামুন বলেন, “শুক্রবার ভোর থেকে হাটে ভিড় বাড়ছে, কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন আছে। পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে টিম কাজ করছে। নারীদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “মাইকিং করে সবাইকে সতর্ক করা হচ্ছে। ছিনতাই, চুরি বা দালালের দৌরাত্ম্য যেন না হয়, সে বিষয়ে আমরা সজাগ আছি।”
স্থিতিশীলতা ও শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
হাটের কাউন্টার ম্যানেজার সৈয়দ বাশার বলেন, “এখন পর্যন্ত হাটের পরিবেশ স্থিতিশীল। দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতা দুই পক্ষই মোটামুটি সন্তুষ্ট। বিকেল থেকে হাট আরো জমে উঠবে।”
পশু বিক্রেতারা জানান, বৃহস্পতিবা মধ্য রাতে কিছু গরু হাটে প্রবেশ করেছে। আজ সর্বোচ্চ বিক্রি হবে বলে তারা আশা করছেন।
কোরবানির হাটের বেচাকেনা মূলত নির্ভর করে ঈদের ঠিক আগের এক-দুই দিনের ওপর। তাই রাজধানীর শনির আখড়ার মতো হাটগুলো এখন ক্রেতা-বিক্রেতায় মুখরিত। কেউ পছন্দের পশু কিনে ফিরছেন বাড়িতে, কেউ দরদাম করে নিচ্ছেন শেষ সিদ্ধান্ত। বিক্রেতারা হিসাব মিলিয়ে দেখছেন, লোকসানের ভয়টা আর যেন সামনে না আসে।
ঢাকা/এএএম/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক রব ন র হ ট ক রব ন র
এছাড়াও পড়ুন:
‘দেশটা তোমার বাপের নাকি’ গাওয়ার পর পালিয়ে থাকতে হয়েছিল
শিল্পীর সৌজন্যে