নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদরা অকুতোভয় বীর। তাদের আত্মত্যাগে আজ আমরা একটি বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন দেখতে পারি।

শহীদদের পরিবারের পাশে জেলা প্রশাসন সবসময় ছিল, আছে এবং থাকবে। শুধু ঈদ নয়, যেকোনো প্রয়োজনে শহীদ পরিবার যেন জেলা প্রশাসনকে পাশে পায় সেটিই আমাদের অঙ্গীকার। 

নারায়ণগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ২৫ পরিবারের মাঝে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। শুক্রবার (৬ জুন) সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

এ সময় মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা আরও বলেন, যাদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা বিজয় অর্জন করেছি, তাদের বাদ দিয়ে ঈদ উদযাপন কখনও পূর্ণতা পাবে না।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ক্ষুদ্র উপহার দিয়ে আমাদের মূল্যায়ন করবেন না, আমরা সবসময় আপনাদের পাশে আছি। আমরা আপনাদের সঙ্গে নিয়েই উৎসব উদযাপন করতে চাই।

তিনি বলেন, আমরা জানি সন্তান ছাড়া, পিতা ছাড়া ঈদের আনন্দ অপূর্ণ। তবে আপনারা মনে রাখবেন যে সন্তান হারিয়েছেন, সে দেশের বীর সন্তান। আমরা সবাই তাদের জন্য দোয়া করি।

এ সময় অনুষ্ঠানটি এক হৃদয়স্পর্শী আবহ তৈরি করে উপস্থিত সকলের মাঝে। শহীদ পরিবারের সদস্যগণ জেলা প্রশাসকের এ মানবিক উদ্যোগে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

শহীদ আহসান কবিরের পিতা হুমায়ুন কবির বলেন, জেলার প্রশাসন যে আমাদের খোঁজ খবর নিচ্ছে, এতেই আমরা সন্তুষ্ট। এখন চাই, যারা আমাদের সন্তানদের হত্যা করেছে, তাদের বিচার হোক। পাশাপাশি শহীদদের কবর সংরক্ষণ করে রাখার দাবি জানাই।

ঈদ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) মো.

আলমগীর হুসাইন, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. তারিকুল ইসলাম, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম, সদস্য সচিব জাবেদ আলম এবং শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ পর ব র র ল ইসল ম আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের সংবর্ধনা দিল জাবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শহীদ পরিবারদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। এ সময় জুলাই হত্যার বিচার ও শহীদ পরিবারের পুনর্বাসনের আকুতি জানানো হয়।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় জহির রায়হান মিলনায়তনে এ সংবর্ধনার আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ও ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান। 

আরো পড়ুন:

জুলাই শহীদদের স্মরণে জাবি ছাত্রদলের বৃক্ষরোপণ

জাবি ছাত্রদলের ১৫ নেতাকে অব্যাহতি

এতে আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও ১০ শহীদ পরিবারের সদস্যরা। 

এসব শহীদরা হলেন, আলিফ আহম্মদ সিয়াম, শ্রাবণ গাজী, শাইখ আস-হা-বুল ইয়ামিন, নাফিসা হোসেন মারওয়া, সাফওয়ান আখতার সদ্য, মো. কুরমান শেখ, ছায়াদ মাহমুদ খান, নিশান খান, আস-সাবুর ও সুজন মিয়া।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এরপর শহীদদের স্বরণে একটি ডকুমেন্টারি ভিডিও দেখানো হয়। পরে শহীদদের স্বীকৃতি স্বরূপ সংবর্ধনা, সনদ ও স্মারক প্রদান করা হয়।

শহীদ আলিফ আহমেদ সিয়ামের বাবা মো. বুলবুল কবির বলেন, “আমরা আমাদের সন্তানদের হারিয়েছি ১ বছর হতে চললো। কিন্তু হত্যাকারীদের বিচার এখনো নিশ্চিত হয়নি। আপনারা শহীদদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে এ চেয়ারে বসেছেন। ফ্যাসিস্টদের বিচার নিশ্চিত করুন।” 

শহীদ শ্রাবণ গাজীর পিতা মো. মান্নান গাজী বলেন, “আমাদের সন্তানরা তো আর ফিরে আসবে না। কিন্তু হাসাপাতালে যারা আহত আছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করুন। তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।”

শহীদ নাফিসা হোসেনের মামা মো. হজরত আলী নাফিসার শহীদ হওয়ার বর্ণনা করতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। এ সময় তিনি জুলাই শহীদদের পরিবারের পুর্নগঠন এবং শহীদদের নামে হল, সড়ক বিভিন্ন স্থাপনার নামকরণের প্রস্তাব করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান বলেন, “জুলাই আন্দোলনের স্বরণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে মাসব্যাপী আয়োজনের অংশ হিসেবে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। শহীদ পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে যেসব দাবি করা হয়েছে, আমি প্রশাসনের একজন হয়ে তা আগামী সিন্ডিকেট সভায় তুলব।”

তিনি বলেন, “আমি চাই আমাদের এখানে যেহেতু কিন্ডারগার্টেন, স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এখানে শহীদদের পরিবারের সদস্যদের পড়াশোনার সুযোগ প্রদান করা হোক। এ বিষয়ে আমরা সিন্ডিকেটে আলোচনা করব। একইসঙ্গে জুলাই শহীদদের পরিবারের সদস্যদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

এর আগে, সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার থেকে অদম্য-২৪ স্মৃতিস্তম্ভ পর্যন্ত মুখে লাল কাপড় বেঁধে মৌন মিছিল করেন শিক্ষকরা।

গত ১৪ জুলাই থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে স্বরণ ও ধারণ করতে মাসব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হাসিনাকে ১০ বার ফাঁসিতে ঝোলালেও তার অপরাধ কমবে না: নাহিদ 
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা
  • নরসিংদীতে আজ এনসিপির পদযাত্রা 
  • এনসিপির অনুরোধে সমাবেশের স্থান পরিবর্তন করল ছাত্রদল
  • পাবিপ্রবিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে প্রজেক্ট শো
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের সংবর্ধনা দিল জাবি
  • নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে পথে নেমেছি: নাহিদ ইসলাম
  • ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ১৫ মামলার চার্জশিট
  • নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘জুলাই ৩৬ কর্ণার’ উদ্বোধন
  • প্রতিভা সমাজ কল্যাণ সংস্থার আয়োজনে স্কুলব্যাগ ও বৃক্ষ বিতরণ