ঈদ আনন্দ সর্বত্র। ঘড়ির কাঁটায় তখন বেলা ৩টা ৫০ মিনিট। ভোর থেকে প্রচণ্ড রোদের পর আকাশে মেঘ জমেছে, নেমেছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের বিছানায় তখন আহত অবস্থায় শুয়েছিলেন এক বাবা ও তাঁর কন্যাসন্তান। জরুরি বিভাগের চিকিৎসকেরা তখন ওই বাবা–মেয়েসহ অন্যদের টানা চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছিলেন।

শনিবার ঈদের দিনেও দেশের অন্য হাসপাতালগুলোর মতো নিরবচ্ছিন্নভাবে চালু আছে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগ। সেখানে আজ সকাল থেকে বেলা ৩টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছেন ৪৬ জন রোগী। তাঁদের মধ্যে কেউ সড়ক দুর্ঘটনায় আহত, কেউ মারামারিতে, কেউবা কোরবানির মাংস কাটতে গিয়ে হাত-পা কেটেছেন। অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় ভোগা রোগীও ছিলেন। এরপর বেলা ৩টা ৫০ থেকে ৪টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত মাত্র এক ঘণ্টায় আরও ১৯ জন রোগী আসেন চিকিৎসা নিতে।

আজ দুপুরে ঈশ্বরগঞ্জের আঠারবাড়ি ইউনিয়নের উত্তর বনগাঁও গ্রামের সিরাজ মিয়া (৬০) ও তাঁর মেয়ে তানজিনা আক্তার (৩২) ভর্তি হন হাসপাতালে। পারিবারিক এক বিরোধের জেরে প্রতিবেশীদের মারধরে আহত হয়েছেন তাঁরা। তাঁদের যখন চিকিৎসা চলছিল তখন বিকেল সোয়া চারটার দিকে গুরুতর আরেক রোগীকে আনা হয়। ওই রোগীর নাম মোকশেদ আলী। বাড়ি বড়হিত ইউনিয়নের পোড়াহাতা গ্রামে। কোরবানির গরু কাটতে গিয়ে তাঁর বাঁ হাতে কোপ লেগেছে, রগ কেটে গেছে। তিনি বলেন, ‘আমার কপাল মন্দ, একটা রগ কেটে গেছে। এখান থেকে ড্রেসিং করে দিয়েছি, কিন্তু ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে হবে।’

শনিবার ঈদের দিনেও দেশের অন্য হাসপাতালগুলোর মতো নিরবচ্ছিন্নভাবে চালু ছিল ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগ.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট, ধীর গতি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কেও

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী থেকে মির্জাপুরের গোড়াই পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত মহাসড়কটিতে এই অবস্থা দেখা গেছে। ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কেও ধীর গতিতে চলছে যানবাহন। মহাসড়ক দুটিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থেকে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ঈদে ঘরমুখো মানুষ।

প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপন করতে রাজধানীসহ বিভিন্ন শহর থেকে বাড়ি ফিরছেন কর্মজীবীরা। ফলে মহাসড়কগুলোতে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি যানবাহন চলাচল করছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলের পর থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়ে যায় কয়েকগুণ। রাতে বেশ কয়েকটি স্থানে যানবাহন বিকল হয়ে মহাসড়কের দুইদিকে যানজটের সৃষ্টি হয়।

পুলিশ, যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা যায়, গাজীপুরে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক দুটিতে যানবাহনের চাপ থাকায় থেমে থেমে যানজট তৈরি হয়েছে। এতে মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রী, চালক ও সংশ্লিষ্টরা। দীর্ঘ ভোগান্তি এড়াতে অনেকেই পায়ে হেঁটে এগিয়ে গিয়ে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যের গাড়ি ধরতে চাইছেন। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী থেকে মির্জাপুরের গোড়াই পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকা ধীরে ধীরে চলাচল করছে যানবাহন।

পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানান, গতকাল শিল্পাঞ্চলগুলোর পোশাক কারখানায় ছুটি হওয়ায় লাখো মানুষ একই সঙ্গে নিজেদের গন্তব্যে যাত্রা করেন। এ ছাড়া মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানবাহনের জন্য অপেক্ষায় থাকেন। এতে রাতভর মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট তৈরি হয়। ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষদের দীর্ঘসময় যানবাহনে বসে থাকতে হচ্ছে। গরম ও যানজটে অসহনীয় দুর্ভোগে পড়েন শিশু, নারী ও বয়োজ্যেষ্ঠরা।

আজ সকাল থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বোর্ডবাজার থেকে সালনা ৫ কিলোমিটার এলাকায় যানজট তৈরি হয়েছে। এসব এলাকায় থেমে থেমে চলছে গাড়ি। এর মধ্যে পর্যাপ্ত সংখ্যক যানবাহন না পেয়ে পেয়ে অনেকেই বিভিন্ন যানবাহনের খোলা ছাদ, ট্রাক ও পিকআপে করেই গন্তব্যে উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন। সুযোগ বুঝে অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।

রাজশাহী যাওয়ার উদ্দেশে চন্দ্রা থেকে আলম এন্টারপ্রাইজ পরিবহনের একই বাসে উঠেন আকবর আলী। যানজটে আটকে তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, ‘যানজটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কষ্ট করছি। কখন যানজট শেষ হয় কে জানে? রাস্তায় কোনো পুলিশও দেখছি না।’

রাজধানীর মহাখালী থেকে ৫ ঘণ্টা আগে রওনা হয়ে আস সকাল ৯টার দিকে গাজীপুরে চন্দ্রা এলাকায় আটকে ছিলেন জেঁকে পরিবহনের বাসচালক ময়নাল হোসেন। তিনি বলেন, চন্দ্রার আগে এসে দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। অনেক বয়স্ক ও শিশু যাত্রী আছে, তাঁরা অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানজট পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন নাওজোর হাইওয়ে পুলিশের (ওসি) সওগাতুল আলম। তিনি জানান, সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি যানবাহনের গতি সচল রাখতে হাইওয়ে পুলিশ সদস্যরা সর্বোচ্চ সচেষ্ট আছেন। রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্যাসেঞ্জার তোলায় মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়ে। যানবাহনের চাপ ও রাতে কয়েকটি স্থানে পরিবহন বিকল হওয়ায় এই যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘তাণ্ডব’ চলাকালে কারিগরি ত্রুটি, ছায়াবাণী হল ভাঙচুর 
  • সর্বাত্মক সতর্কতা দুর্ঘটনা কমাতে পারে
  • ১৫-২০ টাকায় খাসি, ৮০-১০০ টাকায় গরু কিনে কোরবানি হতো
  • গাজীপুরের দুই মহাসড়কে যানবাহনের চাপ কমেছে, চলছে স্বাভাবিক গতিতে
  • মহাখালী টার্মিনালে বাস নেই, অনেক যাত্রীর টিকেট ফেরত
  • বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মসজিদে ধাক্কা, বাবা-ছেলের মৃত্যু
  • ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ২০ কিলোমিটার যানবাহনে ধীরগতি
  • ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ২০ কিলোমিটার এলাকায় যানবাহনের ধীরগতি
  • ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট, ধীর গতি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কেও