‘ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে প্রয়োজনে বিএনপি পথে নামবে’
Published: 8th, June 2025 GMT
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেছেন, ‘‘একটি সুপরিকল্পিত গোষ্ঠী দেশকে গণতান্ত্রিক ধারা থেকে সরিয়ে নেয়ার অপচেষ্টা করছে।’’ তিনি এও হুঁশিয়ারি দেন, ‘‘জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে প্রয়োজনে বিএনপি এক দফা দাবিতে রাজপথে নামবে।’’
শনিবার (৭ জুন) দুপুরে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর ধোলাইখাল পশুরহাটে সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ সব কথা বলেন।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পরপর ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে ঢাকা দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র, কাউন্সিলরদের অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগ দেয়। নির্বাচনের হিসাব অনুযায়ী আগামী ১৫ মে শেষ হচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদের মেয়াদ।
আরো পড়ুন:
গাইবান্ধায় দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত বিএনপি নেতার মৃত্যু
ডিসেম্বরে নির্বাচন করা সম্ভব, সেটাই জাতির জন্য ভালো: ফখরুল
নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায়ের আলোকে নির্বাচন কমিশন দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনের নাম উল্লেখ করে গত ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে।
গত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন শেখ ফজলে নুর তাপস। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন ইশরাক হোসেন। শেখ ফজলে নুর তাপস মেয়রের পদ থেকে অপসারিত হলে ইশরাক হোসেন আদালতে তাকে মেয়র ঘোষণা করার জন্য আবেদন করেন এবং আদালত তার আবেদনের পক্ষে রায় দেন।
ইশরাক হোসেন বলেন, ‘‘নির্বাচনের বেশিরভাগ অংশীজন চায়, ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হোক। সরকারের সংস্কারের কাজ দু-তিন মাসেই শেষ করা সম্ভব। তাহলে নির্বাচনের তারিখ বারবার পেছানো হচ্ছে কেন, সেটাই বোধগম্য নয়।’’
ইশরাক হোসেন অভিযোগ করেন, ‘‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নির্বাচন বিলম্বিত করা হচ্ছে, যাতে একটি বিশেষ মহল তাদের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে পারে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘দেশকে গণতান্ত্রিক ধারার বাইরে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। কোনো ব্যক্তির প্রতি আঙুল না তুলেও বলছি একটি গোষ্ঠী সক্রিয়ভাবে এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।’’
এর আগে সকাল সাড়ে ৮টায় ইশরাক হোসেন জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করেন। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,
‘‘আমরা ১৭ বছর ধরে খুনি হাসিনার বিরুদ্ধে বুক ফুলিয়ে, পরিচয় লুকিয়ে নয় বরং রাজপথে দাঁড়িয়ে আন্দোলন করে এসেছি। আমাদের অনেক ভাই জীবন দিয়েছেন। আমরা সেই ঐতিহাসিক আন্দোলনের উত্তরসূরি। আমরা এখনো সুসংগঠিত। কোনো হুমকি কিংবা প্রলোভনে পথচ্যুত হবো না।’’
ইশরাক হোসেন ঢাকার ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ পশুর হাট এবং আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখেন। ধোলাইখাল হাটে পরিচ্ছন্নতা ব্যবস্থা, পশু ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে তিনি কর্পোরেশনের প্রস্তুতি দেখেন।
এরপর ইশরাক হোসেন রহমতগঞ্জ ও পোস্তা এলাকায় গিয়ে চামড়াশিল্প সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন।
ঢাকা/এএএম/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ইশর ক হ স ন ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
আমিই জিতব- কাগজে লিখে এনেছিলেন কোকো গফ
তিন বছর আগে ফাইনাল হেরে ঠিক যেখানে বসে তোয়ালেতে মুখ ঢেকে কেঁদেছিলেন, সেখানে প্যারিসের সেই রোঁলা গারোতে শনিবারও কাঁদলেন কোকো গফ। তবে এবার সেটা ছিল তার আনন্দাশ্রু। আড়াই ঘণ্টা লড়াই চালিয়ে টেনিসের শীর্ষ বাছাই আরিনা সাবালেঙ্কাকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ফ্রেঞ্চ ওপেন জয়ের গর্বিত মুহুর্ত। দশ বছর কোন মার্কিন কন্যার প্যারিসে রানী হওয়ার কৃতিত্ব। প্রথম সেট হারার পরেও ঘুরে দাড়ানোর মানসিক শক্তির নির্দশন।
সাবালেঙ্কাকে হারানোর পরেই তাই কার্টর বাইরে থাকা তার ব্যাগ থেকে একটি চিরকুট বের করেন কোকো গফ। ‘আমিই ২০২৫ ফ্রেঞ্চ ওপেন জিতব’–ফাইনালের আগের রাতে নিজের হাতে লিখে বারবার আয়নার সামনে নিয়ে দেখেছিলেন কোকো। অলিম্পিক জয়ী মার্কিন স্প্রিন্টার গ্যাবি থমাসও এভাবে নিজেকে নিজে অনুপ্রাণিত করতেন। সেই থমাসের সঙ্গেও ফাইনালের আগে কথা হয়েছিল কোকোর। মনের জোরটা সেখান থেকেও পেয়েছেন তিনি।
‘কাগজে এই লেখাটা নিয়ে আমি আয়নার সামনে দাড়িয়েছিলাম। চেষ্টা করছিলাম তা মাথায় নিতে। যাতে করে আমার নিজের মধ্যেই বিশ্বাসটা গেঁথে যায়। জানি না, তা কাজে লেগেছে কিনা, তবে এটা হয়েছে। আমি চ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছি।’ ম্যাচের পর কোকো গফের উপলব্ধি।
আসলে এদিন ফাইনালে শীর্ষ ও দ্বিতীয় বাছাইয়ের লড়াইটি দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ছিল। বেলারুশ কন্যা সাবালেঙ্কা ‘পাওয়ার’ টেনিসে বিশ্বাসী। আবার সেই পাওয়ার টেনিসই তার দুর্বলতা। একবার ভুল করতে শুরু করলে আরও জোরে শট খেলার চেষ্টা থাকে তার। আর ভুলটা করে বসেন সেখানেই। রেগে গিয়ে মনযোগ হারিয়ে ফেলেন। কোকো গফ ঠিক এই কৌশলটাই কাজে লাগিয়েছেন। পুরো ম্যাচে ৭০ টা আনফোর্সড এরর করেছেন সাবালেঙ্কা। কোকোর থেকে ৪০ টা বেশি। সাবালেঙ্কার সার্ভিস নয় বার ভেঙ্গেছেন কোকো। আর সাবালেঙ্কা সেখানে ছয়বার ভাঙ্গতে পেরেছেন কোকোর সার্ভিস। বছর একুশের কোকোর এই মানসিক দৃঢ়তার কাছেই শেষ পর্যন্ত তিন সেটের লড়াই ৭(৭)–৬(৫), ৬–২, ৬–৪ এ জিতে নেন বছর একুশের কোকো গফ।
তিনি জানতেন এক ঘণ্টা সতেরো মিনিটের প্রথম সেটেই সাবালেঙ্কা সমস্ত শক্তি ক্ষয় করে ফেলেছেন। তাই অপেক্ষায় ছিলেন শুধু তার ভুলের জন্য। ম্যাচের পর কোকো গফের এই বুদ্ধিমত্তার প্রশংসা করেন সাবালেঙ্কা নিজেও।
‘তুমি আমার থেকে ভালো খেলোয়াড়। তুমি লড়াই ছাড়োনি। আমাকে ভুল করতে বাধ্য করেছ। দ্বিতীয় গ্র্যান্ড স্ল্যামের জন্য তোমাকে শুভেচ্ছা।’ কোকো তার প্রথম গ্রান্ড স্ল্যাম জিতেছিলেন ইউএস ওপেনে ২০২৩ সালে।