কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর স্ত্রী নাসরিন সিদ্দিকী মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গতকাল শনিবার রাতে রাজধানী ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।

মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন কাদের সিদ্দিকীর ব্যক্তিগত সহকারী ফরিদ আহমেদ। তিনি জানান, গত ২২ মে নাসরিন সিদ্দিকীর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়। প্রথমে তাঁকে ঢাকার নিউরো সায়েন্সেস হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে স্কয়ার হাসপাতালে নিউরো নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। সেখানে গত ২৪ মে মস্তিকে অস্ত্রপাচার হয়। ২২ মে থেকে তিনি অচেতন ছিলেন। তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। গতকাল রাত ১১টায় নাসরিন সিদ্দিকী মৃত্যুবরণ করেন। এ সময় তাঁর পাশে স্বামী কাদের সিদ্দিকীসহ স্বজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

ফরিদ আহমেদ জানান, গতকাল রাতেই নাসরিন সিদ্দিকীর মরদেহ টাঙ্গাইল শহরের জেলা সদর সড়কে কাদের সিদ্দিকীর বাসভবন ‘সোনার বাংলা’য় আনা হয়। আজ রোববার দুপুর ১২টায় মরদেহ কাদের সিদ্দিকীর আকুরটাকুরপাড়ার পৈতৃক বাসভবন ‘সিদ্দিকী কটেজ’–এ নেওয়া হবে। জোহরের নামাজের পর পিটিআই স্কুল মাঠে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে কালিহাতী উপজেলার নাগবাড়ী ইউনিয়নের ছাতিহাটিতে কাদের সিদ্দিকীর গ্রামের বাড়িতে আসরের নামাজের পর দ্বিতীয় জানাজা হবে। সেখানেই পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।

নারসিন সিদ্দিকী টাঙ্গাইলের কুমুদিনী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ নার্গিস হামিদ কোরেশীর মেয়ে। তিনি কাদের সিদ্দিকী প্রতিষ্ঠিত কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে ডিসির বাসভবনে হামলার ঘটনায় ১০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি ঘিরে হামলা ও সংঘর্ষের জেরে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) বাসভবনে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সদর থানার সহকারী উপপরিদর্শক ফারুক হোসেন বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি করেন।

মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৪১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ পৌর পার্ক, লঞ্চঘাট, কাঁচাবাজার এলাকাসহ সড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে জনগণের মনে ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে যান চলাচল ব্যাহত করা হয়। কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের পক্ষে মিছিল করা হয়। আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে ও এনসিপির পথসভা নস্যাৎ করতে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টিসহ সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করতে জনসাধারণের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করেন। এ সময় জেলা প্রশাসকের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।

এ নিয়ে গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা ও ককটেল নিক্ষেপ, পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, জেলা কারাগারে হামলা, জেলা প্রশাসকের বাসভবনে হামলা, রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়ানোর অভিযোগে ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মোট ১৪টি‌ মামলা করা হলো। সদর, কাশিয়ানী, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া থানায় মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে। ১৪টি মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১ হাজার ১৭৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১৪ হাজার ৫৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় ১৬ জুলাই থেকে গত সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা হামলা চালান। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেদিন প্রথমে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। রাতেই কারফিউ জারি করা হয়। পরে কারফিউর মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়। পরে ২০ জুলাই রাত আটটায় কারফিউ ও ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গোপালগঞ্জে ডিসির বাসভবনে হামলার ঘটনায় মামলা
  • গোপালগঞ্জে ডিসির বাসভবনে হামলার ঘটনায় ১০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা