পা ভাঙতে হলে ভাঙুক, আমাকে ট্রফি জিততে হবে: রোনালদো
Published: 9th, June 2025 GMT
চোখের জলে ভিজছে তার মুখ। আনন্দাশ্রু। উন্মাতাল, উচ্ছ্বাস, উৎসব সবই এই রাতে তার প্রাপ্য। সেই প্রাপ্যটাই জার্মানির আলিয়াঞ্জ এরিনায় বুঝে পেলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।
স্পেনকে হারিয়ে উয়েফা নেশন্স লিগের শিরোপা জিতল পর্তুগাল। ২০১৯ সালে রোনালদো পেয়েছিলেন এই শিরোপা। ছয় বছর পর শিরোপা পুনরুদ্ধার। লম্বা সময় পর রোনালদোর ট্রফির আনন্দ। বয়স চল্লিশ পেরিয়ে যাচ্ছে। ঠিক এমন সময়ে নিজে গোল করে শিরোপা জয়ের অবদানে শামিল হওয়ার আনন্দ, আবেগ, আতিশজ্য ছুঁয়ে যাচ্ছিল তাকে।
চোখের জলের মতো অনুভূতি প্রকাশেও রোনালদো ছাড়িয়ে গেলেন নিজেকে, ‘‘কী আনন্দ! এই প্রজন্মের জন্য এটা জরুরি ছিল, এই মানের একটি ট্রফি যাদের প্রাপ্য। আমাদের পরিবারের জন্যও.
আরো পড়ুন:
ধ্বংসস্তূপে শিরোপার ফুল ফোটালেন আলকারাজ
ক্লাব বিশ্বকাপে খেলার সিদ্ধান্ত জানালেন রোনালদো
ম্যাচের পুরোটা সময় মাঠে থাকতে পারেননি রোনালদো। ম্যাচের আগে খানিকটা অস্বস্তিও ছিল তার। কিন্তু সব পাশ কাটিয়ে সবুজ গালিচায় নেমে খেলেছেন সিআরসেভেন। গোল করেছেন। এই ফাইনাল ও শিরোপা তার কাছে কতটা অরাধ্য সেটা বোঝা গেল কথায়, ‘‘ম্যাচের আগে গা গরমের সময়ই কিছুটা অস্বস্তি ছিল। কিছুটা সময় খারাপ লাগছিল। তবে এটা জাতীয় দলের ম্যাচ। খেলার জন্য আমার পা ভাঙতে হলে ভাঙুক। আমাকে ট্রফি জিততে হবে, খেলতে হবে, নিজের সর্বস্ব উজাড় করে দিতে হবে। কারণ এটা আমার দেশের জন্য। আমরা মানুষ অল্প, কিন্তু উচ্চাকাঙ্ক্ষা অনেক বড়।’’
পর্তুগালের হয়ে তিনটি শিরোপা জিতেছেন রোনালদো। ২০১৬ ইউরোর পর ২০১৯ ও ২০২৫ নেশন্স লিগ। জাতীয় দলের জার্সিতে খেলা নিয়ে পর্তুগিজ সুপারস্টার বলেছেন, ‘‘পর্তুগালের কথা যখন হয়, এই অনুভূতিই বিশেষ কিছু। এই প্রজন্মের অধিনায়ক হতে পারা দারুণ গর্ব ও সম্মানের। জাতীয় দলের হয়ে কোনো শিরোপা জিততে পারা মানে সবসময়ই প্রাপ্তির চূড়া।”
“পর্তুগালের জন্য কিছু জিততে পারা সবসময়ই স্পেশাল। ক্লাবের জয়ে অনেক ট্রফি জিতেছি, কিন্তু পর্তুগালের হয়ে জয়ের চেয়ে সুখের কিছু আর নেই। এজন্যই এই কান্না। দায়িত্ব পালন করেছ এবং এই আনন্দের সীমা নেই।” –যোগ করেন তিনি।
চল্লিশেও রোনালদো অপ্রতিরোধ্য। কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল ও ফাইনাল তিনটি ম্যাচেই গোল করেছেন। পেশাদার ক্যারিয়ারে সহস্র গোলের রেকর্ড গড়ার ইচ্ছা তার। সেদিকে এগিয়েও যাচ্ছেন। ৯৩৮ তো হয়েই গেল। তবুও প্রশ্নটা বারবার এসেই যায়, কোথায় থামবেন?
উত্তরটা বেশ পরিস্কার তার কাছে, “ভবিষ্যৎ ভাবনা চলতে থাকবে সংক্ষিপ্ত মেয়াদ ধরে। তবে আপাতত সময়টা বিশ্রামের। চোট নিয়ে খেলেছি এবং সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি, নিজেকে ঠেলে নিয়েছি সবটুকু… কারণ, জাতীয় দলের জন্য নিজেকে সর্বোচ্চটুকু চেষ্টা করতেই হবে।”
ঢাকা/ইয়াসিন
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল পর ত গ ল র জ ত য় দল র র জন য ফ ইন ল আনন দ
এছাড়াও পড়ুন:
দেখে নিন রোনালদোর ট্রফি কেবিনেটে চ্যাম্পিয়নস লিগ-ইউরোসহ আরও যা আছে
২০২২ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে চোখের জলে বিদায়ের পর অনেকেই ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর শেষ ধরে নিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন, জাতীয় দলের হয়ে রোনালদোর যাত্রাটা বোধ হয় অতটুকুই। কিন্তু গতানুগতিক ধারণার বিপরীতে দাঁড়াবেন বলেই তো তিনি রোনালদো।
ফলে বিদায় বলার পরিবর্তে রোনালদো আবার ফিরলেন পর্তুগালের জার্সিতে। শুধু ফিরলেনই না, পর্তুগালের হয়ে জিতলেন নিজের তৃতীয় আন্তর্জাতিক ট্রফিও। গতকাল রাতে স্পেনকে টাইব্রেকারে হারিয়ে জেতা নেশনস লিগের ট্রফিটা আবার রোনালদোর ক্যারিয়ারের ৩৫তম ট্রফিও বটে।
পর্তুগালের হয়ে নেশনস লিগ জয়ের পথে এবারের আসরে ৯ ম্যাচে ৮ গোল করেছেন রোনালদো। প্রতিযোগিতার কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল ও ফাইনালে গোল পেয়েছেন তিনি। নেশনস লিগ জয়ের পর রোনালদোর চোখ এখন ২০২৬ বিশ্বকাপের দিকে। এক বছর পর শুরু হতে যাওয়া এই টুর্নামেন্টেও জাতীয় দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে চান ‘সিআর সেভেন’। যেখানে তিনি দেশের হয়ে প্রথম বিশ্বকাপ ট্রফিটিও উঁচিয়ে ধরতে চান।
বিশ্বকাপ অধরা থাকলেও ক্যারিয়ারে এরই মধ্যে অবশ্য ৩৫টি ট্রফি জিতেছেন রোনালদো। পর্তুগিজ মহাতারকার ট্রফি কেবিনেটে জাতীয় দলের হয়ে ইউরো ও রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে চারটি চ্যাম্পিয়নস লিগসহ অসংখ্য নামীদামি ট্রফি রয়েছে। সেই ট্রফিগুলো একনজরে দেখে নেওয়া যাক।
পর্তুগাল—৩টিনেশনস লিগ (২)—২০১৮-২০১৯, ২০২৪-২০২৫
ইউরো (১)—২০১৬
রিয়াল মাদ্রিদ—১৬টিচ্যাম্পিয়নস লিগ (৪)—২০১৩-১৪, ২০১৫-১৬, ২০১৬-১৭,২০১৭-১৮
ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ (৩)—২০১৪, ২০১৬, ২০১৭
উয়েফা সুপার কাপ (৩)—২০১৪, ২০১৬, ২০১৭
লা লিগা (২)—২০১১-১২, ২০১৬-১৭
কোপা দেল রে (২)—২০১০-১১, ২০১৩-১৪
স্প্যানিশ সুপার কাপ (২)—২০১২, ২০১৭
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড—৯টিপ্রিমিয়ার লিগ (৩)—২০০৬-০৭, ২০০৭-০৮, ২০০৮-০৯
লিগ কাপ (২)—২০০৫-০৬, ২০০৮-০৯
চ্যাম্পিয়নস লিগ (১)—২০০৭-০৮
এফএ কাপ (১)—২০০৩-০৪
ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ (১)—২০০৮
কমিউনিটি শিল্ড (১)—২০০৭
জুভেন্টাস—৫টিসিরি ‘আ’ (২)—২০১৮-১৯, ২০১৯-২০
ইতালিয়ান সুপার কাপ (২)—২০১৮, ২০২০
ইতালিয়ান কাপ (১)—২০২০-২১
স্পোর্টিং লিসবন—১টিপর্তুগিজ সুপার কাপ (১)—২০০২
আল নাসর—১টিআরব ক্লাব চ্যাম্পিয়নস কাপ (১)—২০২৩