এমনিতে তিনি চুপচাপ, দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক হলেও সেভাবে তারকাখ্যাতি নেই টেন্ডা বাভুমরা। বরং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার দলে থাকা নিয়েই প্রশ্ন তুলেন অনেকে। সেই বাভুমা এবার ঐতিহাসিক এক মুহূর্তের সামনে দাঁড়িয়ে।
বুধবার লর্ডসে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলতে নামছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ম্যাচটি জিততে পারলে ইতিহাসে দক্ষিণ আফ্রিকার শ্রেষ্ঠ টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে লেখা থাকবে বাভুমার নাম। তবে এমন সন্ধিক্ষণে নিজের আবেগকে বেঁধে রেখেছেন তিনি।
‘জানি আমাদের জন্য বড় কিছু অপেক্ষা করছে। তবে আমি সব কিছুর জন্যই প্রস্তুত। সেখানে ইতিবাচক কিছুও আসতে পারে, আবার নেতিবাচক কিছুও।’
আইসিসি টুর্নামেন্টে নিজেদের ভাগ্যের কথা জেনেই হয়তো সতর্ক বাভুমা। সেই সঙ্গে নিজের কথা ভেবেও। তিনি বেশ ভালোই জানেন ম্যাচটি জিততে না পারলে সমালোচনার তীর তার দিকেই বেশি ছুটে আসবে। আর এটা নিয়ে একটা কষ্টও চাপা দিয়ে রেখেছেন বাভুমা। তার টেস্ট অভিষেক হয়েছিল ২০১৪ সালের এমন একটি সময় যখন দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেট বোর্ড থেকে বলেই দেওয়া হয়েছিল স্কোয়াডে নির্দিষ্ট সংখ্যক কৃষ্ণাঙ্গ ক্রিকেটার রাখতেই হবে। সেই থেকেই তাকে ঘিরে কানাঘুষা ক্রিকেট বিশ্বে।
এরপর অবশ্য সেখানকার কৃষ্ণাঙ্গ ক্রিকেটাররাই প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন বিশেষ সেই ব্যবস্থার। কিন্তু দলে থেকে যান বাভুমা তার যোগ্যতা দিয়েই।
২০১৬ সালে কেপটাউনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে প্রথম সেঞ্চুরি করেন। কিন্তু দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পেতে তাকে অপেক্ষা করতে হয় আটটি বছর। এ সময়টা প্রচণ্ড সমালোচনা শুনতে হয় তাকে। ‘এ নিয়ে আমি আবেগী নই। আমরা (কৃষ্ণাঙ্গ ক্রিকেটাররা) এটা মেনে নিয়েই মাঠে নামি যে, যদি দুটি বা তিনটি ম্যাচে রান করতে না পারি তাহলে আমাদের বিশেষ নামে ডাকা হবে। এমনকি আমরা ভালো করলেও সেই মানুষগুলোই বলবে কেন তুমি দলে? কেন তুমি দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছ? সুতরাং এটা মেনেই আমি খেলে যাচ্ছি।’
ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এভাবেই কষ্টের কথা খুলে বলেন বাভুমা। তবে গত দুই বছরে বাভুমার পারফর্মেন্স সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে দিয়েছে। চলতি মৌসুমে টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটারদের মধ্যে সেই সর্বাধিক ৩২৭ রান করেছেন। শ্রীলঙ্কা সিরিজে জোড়া সেঞ্চুরি করেছেন। এই যে লর্ডসে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নামছে দক্ষিণ আফ্রিকা, সেখানে বাভুমার ভূমিকা কোনোভাবেই অস্বীকার করা যাবে না।
‘পারফর্ম করেই আমি দলে থাকতে চাই। গত কয়েক বছরে নিজেকে সেই জায়গায় নেওয়ার চেষ্টা করেছি।’ বাভুমা মিথ্যে বলনেনি, গত কয়েকবছরের ধারাবাহিকতায় তিনি এখন টেস্ট ব্যাটসম্যানদের র্যাঙ্কিংয়ে ছয় নম্বরে। তবে বাভুমার এই কষ্ট থাকবে না যদি কিনা সত্যিই তিনি শাপ মোচন করে প্রোটিয়াদের একটি আইসিসি ট্রফি এনে দিতে পারেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকায় অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে শনিবার
ঢাকায় দুই দিনব্যাপী অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে আগামী শনিবার। এতে অটোমোবাইল, কৃষি যন্ত্রপাতিসহ হালকা প্রকৌশল খাতের ২৬টি স্টল থাকবে। পাশাপাশি শিল্পের সহায়ক প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকবে আরও ১২টি। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সহযোগিতায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। ঢাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকায় এডিসন প্রাইম ভবনের ছাদে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এই ভবনেই বিসিআইয়ের কার্যালয় অবস্থিত।
আজ বৃহস্পতিবার বিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দুই দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী নিয়ে বিস্তারিত জানান চেম্বারটির সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী। আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী, বিসিআইয়ের পরিচালক মো. শাহেদ আলম, এস এম শাহ আলম, জিয়া হায়দার প্রমুখ।
বিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, হালকা প্রকৌশল খাতে বাংলাদেশে বর্তমানে ছোটবড় প্রায় ৫০ হাজার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই খাতে কাজ করেন ১০ লাখ মানুষ। হালকা প্রকৌশল খাতে স্থানীয় বাজার ১২ বিলিয়ন ডলারের হলেও দেশীয় উৎপাদকেরা অর্ধেক পূরণ করতে পারছেন। তা ছাড়া হালকা প্রকৌশল খাতের বৈশ্বিক বাজারের আকার প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন ডলার। তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাক খাত আর বেশি মূল্য সংযোজন করতে পারবে না। ফলে আমাদের অর্থনীতিকে টেকসই করতে হলে আমাদের অন্য খাতে যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে হালকা প্রকৌশল খাত পারে বড় সম্ভাবনার।
অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর কৃষিজমি কমছে। কৃষকের বয়স বাড়ছে, তার কারণ তরুণেরা খুব কম কৃষিকাজে আসছেন। বিশ্বের অনেক দেশেই মোট জনগোষ্ঠীর ১০ শতাংশের কম কৃষিকাজে নিয়োজিত। ১০ শতাংশ মানুষ বাকি ৯০ শতাংশের জন্য খাদ্য জোগান দিচ্ছে। সে কারণে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। বাংলাদেশেও কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। তবে বড় অংশই আমদানি করতে হচ্ছে।
আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে ১২০০ থেকে ১৫০০ কোটি টাকার কৃষি যন্ত্রপাতির বাজার আছে। তার মধ্যে দেশীয় কোম্পানিগুলো সরবরাহ করছে মাত্র ৪০০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ। নীতিসহায়তা পেলে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।