কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণে শিথিলতা, ‘জনস্বার্থে’ ভিডিও রাখতে বলছে ইউটিউব
Published: 11th, June 2025 GMT
ইউটিউব তাদের আধেয় বা কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ নীতিমালায় বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে। এখন থেকে কোনো ভিডিও ইউটিউবের নিয়ম লঙ্ঘন করলেও যদি সেটি জনস্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হয়, তবে সেটি না সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রিভিউয়ারদের।
নিউইয়র্ক টাইমসের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ইউটিউব গত ডিসেম্বরে তাদের অভ্যন্তরীণ নির্দেশনায় নতুন এ নীতিমালা যুক্ত করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, কোনো ভিডিওর অর্ধেকের বেশি অংশ যদি কমিউনিটি নির্দেশিকা (কমিউনিটি গাইডলাইন) লঙ্ঘন না করে, তাহলে তা ইউটিউব থেকে সরানোর প্রয়োজন নেই। আগে এই সীমা ছিল এক-চতুর্থাংশ।
নতুন নির্দেশনায় উদাহরণ হিসেবে যেসব বিষয়ের কথা বলা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে নির্বাচন, মতাদর্শ, আন্দোলন, জাতি, লিঙ্গ, যৌনতা, গর্ভপাত, অভিবাসন এবং সেন্সরশিপ। প্রশিক্ষণ কনটেন্টে রিভিউকারীদের (ভিডিও যাচাইকারীদের) বলা হয়েছে, মতপ্রকাশের অধিকার যদি কোনো ভিডিওর সম্ভাব্য ক্ষতির ঝুঁকির চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়, তাহলে তা সরানো যাবে না। ভিডিওটি একেবারে সীমার কাছাকাছি হলে সেটি সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থাপককে পাঠানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
নতুন নীতির সূত্রপাত ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে ইউটিউবের নেওয়া একটি সিদ্ধান্ত থেকে। সেই সিদ্ধান্তে বলা হয়েছিল, রাজনৈতিক প্রার্থীদের ভিডিও কনটেন্টে কোনো নিয়ম ভঙ্গ হলেও, তা যদি শিক্ষামূলক, প্রামাণ্যচিত্র, বৈজ্ঞানিক বা শৈল্পিক (ইডিএসএ) গুরুত্বসম্পন্ন হয়, তাহলে সেটি প্ল্যাটফর্মে রাখা যাবে।
এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে এবং কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে ইউটিউব কঠোরভাবে কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ করত। তখন মাধ্যমটি কোভিড টিকা বা মার্কিন নির্বাচন সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেওয়া ভিডিওগুলো মুছে ফেলত। ২০২৩ সালে ইউটিউব এই অবস্থান থেকে এক ধাপ পিছু হটে। ওই বছর থেকে তারা আর মার্কিন নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ–সংবলিত ভিডিও সরানো বন্ধ করে দেয়। এবারকার পরিবর্তন আগের চেয়েও এক ধাপ শিথিল।
যুক্তরাষ্ট্রে অনলাইন মাধ্যমগুলোর কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ নীতিতে সম্প্রতি শিথিলতার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। ইউটিউবের এই পরিবর্তন তারই ধারাবাহিকতা। এর আগে মেটাও ঘৃণাত্মক বক্তব্য–সংক্রান্ত নীতিমালা শিথিল করেছে এবং তৃতীয় পক্ষের যাচাইপদ্ধতি (ফ্যাক্টচেকিং) বন্ধ করে এক্সের মতো কমিউনিটি নোট চালু করেছে।
সূত্র: দ্য ভার্জ
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
২২ অনাথ কাশ্মীরি শিশুর পড়াশোনার দায়িত্ব নিলেন রাহুল গান্ধী
অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন পাকিস্তানি গোলায় ভারত–নিয়ন্ত্রিত জম্মু–কাশ্মীরে যাঁরা নিহত হয়েছিলেন, তাঁদের পরিবারের ২২ অনাথ শিশুর লেখাপড়ার পুরো দায়িত্ব নিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ওই শিশুরা পুঞ্চ জেলার সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দা।
স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে উঠে স্নাতক হওয়া পর্যন্ত ওই শিশুদের পড়াশোনার সব খরচ রাহুল গান্ধী বহন করবেন। সেই খরচের প্রথম কিস্তির টাকা বুধবার ওই পড়ুয়াদের স্কুলে পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন জম্মু–কাশ্মীরের কংগ্রেস সভাপতি তারিক হামিদ কাররা।
পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল পর্যটকদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছিল কয়েকজন জঙ্গি। সেই হামলায় নিহত হয়েছিলেন মোট ২৬ জন পর্যটক। প্রত্যাঘাতের জন্য ভারত শুরু করে অপারেশন সিঁদুর। চার দিনের সেই লড়াইয়ের সময় জম্মুর সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রবল গোলাবর্ষণ করে পাকিস্তান। সেই হামলায় মারা গিয়েছিলেন ২৭ জন গ্রামবাসী। আহত হয়েছিলেন ৭০ জনের বেশি। যাঁরা নিহত হয়েছিলেন, ওই ২২ শিশু ওইসব পরিবারেরই সন্তান। তাদের কেউ বাবা, কেউ মা, কেউ–বা দুজনকেই হারিয়েছে। কারও পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
রাহুল গত মে মাসে ওইসব এলাকায় গিয়েছিলেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। অনাথ শিশুদের স্কুলেও গিয়েছিলেন। ওই সময় তিনি দলীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন অনাথ শিশুদের তালিকা তৈরি করতে। সরকারি নথির সঙ্গে সেই নাম মিলিয়ে ২২ জনের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত হয়। পুঞ্চ জেলা সফরের সময় রাহুল তাঁর ইচ্ছার কথা জানিয়ে বলেছিলেন, ওই শিশুদের স্নাতক স্তর পর্যন্ত পড়াশোনার সব খরচ তিনি দেবেন।
পাকিস্তানের গোলার আঘাতে মারা গিয়েছিলেন ১২ বছরের দুই যমজ ভাই–বোন জাইন আলি ও উরবা ফতিমা। রাহুল তাঁদের স্কুলে গিয়েছিলেন। সেই স্কুলের পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তাঁদের বলেছিলেন, তোমরা তোমাদের বন্ধুদের হারিয়েছ। সে জন্য তোমাদের মন খারাপ। ওই মৃত্যু আমাকেও দুঃখ দিয়েছে। তোমাদের দুঃখ আমি বুঝি। কিন্তু তোমাদের জন্য আমি গর্বিত। তোমরা ভয়কে জয় করেছ। রাহুল ওই শিশুদের বলেছিলেন, ভয়কে জয় করতে হবে। সুদিন আসবে। সব আবার স্বাভাবিক হবে।
ওই ২২ জনের জন্য বছরে কত খরচ হবে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব তা জানাননি।