হোয়াটসঅ্যাপে আসছে মেটা এআই, ছবি পাঠিয়ে জানা যাবে বিস্তারিত তথ্য
Published: 12th, June 2025 GMT
হোয়াটসঅ্যাপে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহার আরও বিস্তৃত হচ্ছে। নতুন একটি সুবিধায় ব্যবহারকারীরা এখন মেটা এআইকে ছবি বা বার্তা পাঠিয়ে সেই বিষয়ক প্রশ্ন করতে পারবেন। কোনো ছবির প্রেক্ষাপট, সত্যতা কিংবা তার বিষয়বস্তু সম্পর্কেও এআই থেকে তাৎক্ষণিকভাবে তথ্য জানা যাবে।
সুবিধাটি এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে থাকলেও এটি চালু হলে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের জন্য এআই ব্যবহারের অভিজ্ঞতা এক নতুন মাত্রা পাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। হোয়াটসঅ্যাপের বিভিন্ন সুবিধা নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ডব্লিউ আ বেটা ইনফো জানিয়েছে, হোয়াটসঅ্যাপে মেটা এআইয়ের একটি নতুন সুবিধা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। যেখানে ব্যবহারকারীরা কোনো ছবি বা বার্তা এআইকে পাঠিয়ে তার সম্পর্কে প্রশ্ন করতে পারবেন। এই সুবিধা ব্যবহার করে বলা যেতে পারে, ‘এই ছবিটি আসল কি না’ কিংবা ‘ছবিতে কী দেখা যাচ্ছে’। মেটা এআই তখন ওই ছবি বিশ্লেষণ করে উত্তর দেবে। শুধু ছবি নয়, টেক্সট বা বার্তা পাঠিয়েও তথ্য জিজ্ঞাসা করা যাবে। ফিচারটির একটি স্ক্রিনশটে দেখা গেছে, চ্যাট ইন্টারফেসে থাকা এআই অপশনটিতে ছবি ফরোয়ার্ড করার পরপরই ব্যবহারকারী প্রশ্ন করার সুযোগ পাচ্ছেন।
এই সুবিধা ব্যবহার করতে গেলে কিছু শর্ত মানতে হবে। মেটা জানিয়েছে, ব্যবহারকারী যা মেটা এআইয়ের সঙ্গে শেয়ার করবেন, কেবল সেটির ওপর ভিত্তি করেই এআই প্রতিক্রিয়া জানাবে। তবে শেয়ার করা বার্তা বা ছবি এআই মডেল উন্নয়নে ব্যবহার করা হতে পারে, এমন উল্লেখও করা হয়েছে শর্তাবলিতে। ফলে অনেক ব্যবহারকারীই গোপনীয়তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হতে পারেন। তাই ব্যক্তিগত তথ্য কিংবা সংবেদনশীল ছবি শেয়ার করার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা।
এদিকে হোয়াটসঅ্যাপ একটি নতুন ‘এআই’ ট্যাব যুক্ত করার প্রস্তুতিও চলছে। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা নিজের মতো করে এআই চ্যাটবট তৈরি করতে পারবেন। এই প্রক্রিয়ায় আলাদা করে প্রোগ্রামিং জানা লাগবে না। ব্যবহারকারী ধাপে ধাপে তথ্য দিলে তার ভিত্তিতেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি হবে একটি কাস্টম এআই বট। ভবিষ্যতে সেটি ব্যক্তিগত সহায়তাকারী বা কথোপকথনের সঙ্গী হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে।
হোয়াটসঅ্যাপ সূত্র বলছে, নতুন এই এআই সুবিধা আপাতত সীমিত সংখ্যক ব্যবহারকারীর জন্য পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। তবে চলতি বছরের মধ্যেই এটি আরও বিস্তৃতভাবে উন্মুক্ত হতে পারে। ব্যবহারকারীদের প্রতিক্রিয়া ও গোপনীয়তার বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই চূড়ান্ত সংস্করণ চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে মেটা।
সূত্র: নিউজ১৮ ডটকম
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর টসঅ য প
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি কেড়ে নিচ্ছে এআই, তরুণদের শেখার পরামর্শ নাদেলার
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের অগ্রগতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বদলে যাচ্ছে প্রযুক্তি খাতের কর্মপরিসর। কোডিং থেকে শুরু করে জটিল বিশ্লেষণসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কাজ এখন ধীরে ধীরে স্বয়ংক্রিয়তার আওতায় আসছে। এতে তরুণ প্রযুক্তিকর্মীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ। তবে এআইকে প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, বরং সহযাত্রী হিসেবে দেখতে তরুণদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সত্য নাদেলা।
সম্প্রতি এক পডকাস্টে অংশ নিয়ে প্রযুক্তির পরিবর্তন এবং তার প্রভাব নিয়ে কথা বলেন নাদেলা। তিনি বলেন, এআই দ্রুত এগোলেও মৌলিক দক্ষতা ও বিশ্লেষণী চিন্তার প্রয়োজন কখনোই শেষ হবে না। তাঁর মতে, যাঁরা এখন প্রযুক্তি খাতে পেশাজীবন শুরু করতে যাচ্ছেন, তাঁদের মূল মনোযোগ থাকা উচিত এই মৌলিক জ্ঞান ও দক্ষতা দৃঢ় করার দিকে। নাদেলা বলেন, ‘আমরা সবাই ধীরে ধীরে সফটওয়্যার আর্কিটেক্ট হয়ে উঠব।’ তার ব্যাখ্যায়, ভবিষ্যতের প্রযুক্তিপণ্য তৈরিতে মানুষের কাজ হবে কাঠামো ও নির্দেশনার রোডম্যাপ তৈরি করা। সেই নকশা অনুসারে কার্যকর বাস্তবায়নের কাজটি করবে এআই।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাবে চাকরির বাজারে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তা স্বীকার করে নাদেলা বলেন, এআই নিঃসন্দেহে অনেক কাজে দক্ষ হয়ে উঠছে। মাইক্রোসফটের অভ্যন্তরীণ তথ্য অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান কোডিং কার্যক্রমের ২০ থেকে ৩০ শতাংশই সম্পন্ন হচ্ছে এআই ব্যবস্থার মাধ্যমে। তবে এতে মানবসম্পদের প্রয়োজনীয়তা শেষ হয়ে যাচ্ছে এই ধারণা তিনি নাকচ করে দেন। নাদেলার ভাষায়, ‘টেকনোলজি কখনো একা সিদ্ধান্ত নেয় না। মানুষের চিন্তা, যুক্তি ও নকশার ভিত্তিতেই প্রযুক্তির বাস্তব প্রয়োগ হয়।’
প্রযুক্তিবিষয়ক কয়েকটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, মাইক্রোসফট নিজস্ব কর্মীদের দিয়ে এআই প্রশিক্ষণের কাজ করিয়ে পরে সেই কর্মীদের ছাঁটাই করেছে। যদিও এ বিষয়ে নাদেলা সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি, তবে তার কথায় স্পষ্ট, এআই এখানে দীর্ঘ সময়ের জন্য এসেছে এবং ভবিষ্যতের প্রযুক্তিকাঠামোর কেন্দ্রে থাকবে।
প্রযুক্তি খাতে পেশা গড়তে ইচ্ছুক তরুণদের উদ্দেশে নাদেলা বলেন, পরিবর্তনকে ভয় না পেয়ে তা গ্রহণ করাই এখন সময়ের দাবি। তাঁর মতে, কর্মক্ষেত্রে সৃজনশীলতা, বিশ্লেষণী চিন্তা ও অভিযোজন ক্ষমতাই ভবিষ্যতে সবচেয়ে বড় সম্পদ হয়ে উঠবে। এআইকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করলে তা নিরুৎসাহ ও অনিশ্চয়তা বাড়াবে। কিন্তু তাকে একটি সহায়ক প্রযুক্তি হিসেবে কাজে লাগাতে পারলে তা দক্ষতা বাড়ানো ও কাজের গুণগত মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সূত্র: নিউজ১৮ ডটকম