হোয়াটসঅ্যাপে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহার আরও বিস্তৃত হচ্ছে। নতুন একটি সুবিধায় ব্যবহারকারীরা এখন মেটা এআইকে ছবি বা বার্তা পাঠিয়ে সেই বিষয়ক প্রশ্ন করতে পারবেন। কোনো ছবির প্রেক্ষাপট, সত্যতা কিংবা তার বিষয়বস্তু সম্পর্কেও এআই থেকে তাৎক্ষণিকভাবে তথ্য জানা যাবে।

সুবিধাটি এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে থাকলেও এটি চালু হলে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের জন্য এআই ব্যবহারের অভিজ্ঞতা এক নতুন মাত্রা পাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। হোয়াটসঅ্যাপের বিভিন্ন সুবিধা নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ডব্লিউ আ বেটা ইনফো জানিয়েছে, হোয়াটসঅ্যাপে মেটা এআইয়ের একটি নতুন সুবিধা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। যেখানে ব্যবহারকারীরা কোনো ছবি বা বার্তা এআইকে পাঠিয়ে তার সম্পর্কে প্রশ্ন করতে পারবেন। এই সুবিধা ব্যবহার করে বলা যেতে পারে, ‘এই ছবিটি আসল কি না’ কিংবা ‘ছবিতে কী দেখা যাচ্ছে’। মেটা এআই তখন ওই ছবি বিশ্লেষণ করে উত্তর দেবে। শুধু ছবি নয়, টেক্সট বা বার্তা পাঠিয়েও তথ্য জিজ্ঞাসা করা যাবে। ফিচারটির একটি স্ক্রিনশটে দেখা গেছে, চ্যাট ইন্টারফেসে থাকা এআই অপশনটিতে ছবি ফরোয়ার্ড করার পরপরই ব্যবহারকারী প্রশ্ন করার সুযোগ পাচ্ছেন।

এই সুবিধা ব্যবহার করতে গেলে কিছু শর্ত মানতে হবে। মেটা জানিয়েছে, ব্যবহারকারী যা মেটা এআইয়ের সঙ্গে শেয়ার করবেন, কেবল সেটির ওপর ভিত্তি করেই এআই প্রতিক্রিয়া জানাবে। তবে শেয়ার করা বার্তা বা ছবি এআই মডেল উন্নয়নে ব্যবহার করা হতে পারে, এমন উল্লেখও করা হয়েছে শর্তাবলিতে। ফলে অনেক ব্যবহারকারীই গোপনীয়তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হতে পারেন। তাই ব্যক্তিগত তথ্য কিংবা সংবেদনশীল ছবি শেয়ার করার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা।

এদিকে হোয়াটসঅ্যাপ একটি নতুন ‘এআই’ ট্যাব যুক্ত করার প্রস্তুতিও চলছে। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা নিজের মতো করে এআই চ্যাটবট তৈরি করতে পারবেন। এই প্রক্রিয়ায় আলাদা করে প্রোগ্রামিং জানা লাগবে না। ব্যবহারকারী ধাপে ধাপে তথ্য দিলে তার ভিত্তিতেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি হবে একটি কাস্টম এআই বট। ভবিষ্যতে সেটি ব্যক্তিগত সহায়তাকারী বা কথোপকথনের সঙ্গী হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে।

হোয়াটসঅ্যাপ সূত্র বলছে, নতুন এই এআই সুবিধা আপাতত সীমিত সংখ্যক ব্যবহারকারীর জন্য পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। তবে চলতি বছরের মধ্যেই এটি আরও বিস্তৃতভাবে উন্মুক্ত হতে পারে। ব্যবহারকারীদের প্রতিক্রিয়া ও গোপনীয়তার বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই চূড়ান্ত সংস্করণ চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে মেটা।

সূত্র: নিউজ১৮ ডটকম

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর টসঅ য প

এছাড়াও পড়ুন:

শিক্ষার্থীদের এআই প্রযুক্তিনির্ভর জ্ঞানচর্চা ও গবেষণার সুযোগ নিতে হবে

বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চশিক্ষায় এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) প্রযুক্তির বহুমাত্রিক ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠান। এআইয়ের সর্বোত্তম ব্যবহারকে গুরুত্ব দিয়ে এআই–নির্ভর শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ তৈরিরও পরামর্শ দিচ্ছে তারা। আর তাই গবেষণা খাতে এআই ব্যবহারের গুরুত্ব তুলে ধরার পাশাপাশি এআইয়ের কারণে কী কী সংকট হতে পারে, তা তুলে ধরতে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের প্রয়াস ইনস্টিটিউট অব স্পেশাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (পাইজার) মিলনায়তনে এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘এআই ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণার নতুন সুযোগ’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) প্রয়াস ইনস্টিটিউট অব স্পেশাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (পাইজার)। সেমিনারে ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটিসহ বিভিন্ন এআই টুল বিশ্বের বিভিন্ন গবেষণায় কীভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, তা নিয়ে আলোচনা করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী ও গবেষকেরা সেমিনারে অংশ নেন।

সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস বিভাগের এমফিল গবেষক জাহিদ হোসাইন খান এআই ও গবেষণার নানান পরিপ্রেক্ষিত সম্পর্কিত প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, ‘২০২০ সাল থেকেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বৈশ্বিক গবেষণা ও নতুন জ্ঞান অন্বেষণে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আর তাই বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও গবেষকদের এআই প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়া উচিত। এআই প্রযুক্তি দ্রুতগতিতে উন্নত হচ্ছে, ফলে অনেক বিশেষজ্ঞ নতুন ডিজিটাল বৈষম্য তৈরির আশঙ্কা করছেন। আমাদের দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এআই প্রযুক্তিনির্ভর জ্ঞানচর্চা ও গবেষণার সুযোগ নিতে হবে। এ জন্য এআই প্রযুক্তির ভালো ও মন্দ দিকগুলো নিয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।’

পাইজারের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. নুর উল্লাহ বলেন, ‘পশ্চিমা দুনিয়ায় গবেষণার ব্যাপক বিস্তৃতি দেখা যায়। আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের সামনে এআই নতুন সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে। এআইকে ব্যবহার করে গবেষণার অসাধারণ সুযোগ তৈরি হচ্ছে, সেই বিষয়টিকে তুলে ধরতে আমরা এই সেমিনার আয়োজন করেছি। স্বাস্থ্য বা জনস্বাস্থ্যবিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ে আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের গবেষণায় আগ্রহী করে তুলতে কাজ করছি।’

পাইজারের অডিওলজি অ্যান্ড স্পিচ ল্যাঙ্গুয়েজ প্যাথলজি বিভাগের প্রধান ফাতিমা আলম বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখন নতুন বাস্তবতা। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণার জন্য এখন এআই ও এআই–নির্ভর প্রযুক্তির ব্যবহার সারা বিশ্বেই বাড়ছে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও গবেষকদের সামনে এআইকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড় করানো যাবে না। এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে নতুন নতুন গবেষণার সুযোগ তৈরি করতে হবে। বিশ্বের বড় বড় গবেষণাগার বর্তমানে এআই ব্যবহার করছে। আর তাই শিক্ষার্থী ও গবেষকদের পাশাপাশি শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এআই প্রযুক্তিমুখী হওয়া প্রয়োজন।
বর্তমানে চ্যাটজিপিটিসহ বিভিন্ন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও গবেষকেরা ব্যবহার করছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শিক্ষার্থীদের এআই প্রযুক্তিনির্ভর জ্ঞানচর্চা ও গবেষণার সুযোগ নিতে হবে