মাজার থেকে সরতে চাইছেন না সমু চৌধুরী
Published: 12th, June 2025 GMT
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের প্রত্যন্ত গ্রামের মাজারে গাছের নিচে শুয়ে আছেন অভিনেতা সমু চৌধুরী—এমন ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর প্রশ্ন উঠেছে, তিনি কীভাবে এলেন এখানে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সমু চৌধুরী মাজারে আসেন। আজ বৃহস্পতিবার পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করতে গেলেও তিনি মাজার ছেড়ে যেতে চাইছেন না।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে গফরগাঁও উপজেলার মশাখালী ইউনিয়নের মুখী গ্রামের শাহ্ মিসকিন জয়নাল আবেদিনের (রহ.
আল মামুন হৃদয় প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে মাজারের পাশে মোটরসাইকেলচালকের সঙ্গে এক ব্যক্তির বাগ্বিতণ্ডা শুনে এগিয়ে যাই আমিসহ কয়েকজন। তখন অভিনেতা সমু চৌধুরীকে চিনে ফেলি। মোটরসাইকেলচালককে ভাড়া না দেওয়ায় সমু চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর বাগ্বিতণ্ডা চলছিল। মোটরসাইকেলচালক বলছিলেন, ঢাকা থেকে তাঁকে এখানে নিয়ে এসেছেন। সমু চৌধুরী এ সময় খালি গায়ে ছিলেন। পরনে ছিল ট্রাউজার, সঙ্গে ছিল একটি ব্যাগ। এ সময় অভিনেতার আচরণে তাঁকে সুস্থ মনে হয়নি। পরে আমরা মোটরসাইকেলচালককে বুঝিয়ে পাঠিয়ে দিই।’
আল মামুন বলেন, গতকাল রাতে সমু চৌধুরী মাজারের ফকিরদের সঙ্গেই ছিলেন। পুলিশ এসেছে অভিনেতাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য, কিন্তু তিনি যাচ্ছেন না। তিনি আরও জানান, আজ দুপুরের পর অভিনেতা সমু চৌধুরীকে স্থানীয় লোকজন নতুন লুঙ্গি দিয়েছেন। সেটি পরেই তিনি মাজারের পাগলদের সঙ্গে কথা বলছেন, ঘুরছেন, আড্ডা দিচ্ছেন। মাজারের ফকিরদের বাইরে অন্যদের সঙ্গে তিনি কথা বলতে চান না।
মাজারের খাদেম শাহ মোহাম্মদ ফাহাদ ফকির বলেন, এ মাজারে সমু চৌধুরীকে আগে কখনো দেখেননি। তবে তিনি এখন মাজারে সবার সঙ্গে মিলেমিশে থাকছেন।
পাগলা থানার ওসি ফেরদৌস আলম বলেন, ‘অভিনেতার অবস্থান জানতে পেরে তাঁকে উদ্ধারের জন্য মাজারে পুলিশ পাঠানো হয়। কিন্তু রাত পৌনে আটটা পর্যন্ত মাজার থেকে অভিনেতাকে আনা যায়নি। তাঁকে বেশি প্রশ্ন করলে উত্তেজিত হয়ে যাচ্ছেন। ওই অবস্থায় পুলিশ ও সেনাবাহিনী মাজার এলাকায় অবস্থান করছে। আমরা পরিবারের সঙ্গেও কথা বলেছি। পরিবারের সদস্যরা এখানে আসছেন। অভিনেতার এখানে আসা সম্পর্কে পরিবারও তেমন কিছু বলতে পারেনি।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি