ভোলার লালমোহন উপজেলায় যৌতুকের টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার বাকি রাখতে চাওয়ায় বরপক্ষের লোকজন হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় কনের মা-বাবা, বোন ও চাচা আহত হয়ে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার লালমোহন ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ঘোলপাড় এলাকার আনা মিয়া কালু ব্যাপারীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। হামলার পর বরপক্ষের লোকজন খাল সাঁতরে পালিয়ে যান বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

কনের ফুফু মমতাজ বেগম বলেন, গত ঈদুল ফিতরের সময় তাঁর বড় ভাই মো.

বিল্লালের বড় মেয়ে সালেহা বেগমের সঙ্গে লালমোহন পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুল মালেকের ছেলে মো. রুবেলের সঙ্গে পারিবারিক সিদ্ধান্তে বিয়ে হয়। তখন বরপক্ষ যৌতুক হিসেবে দুই লাখ টাকা ও দুই ভরি সোনা দাবি করে। গতকাল দুপুরে কনেকে উঠিয়ে নিতে কনের বাড়িতে আসেন বরপক্ষের লোকজন। তাঁদের সঙ্গে কথা ছিল দুপুরে ৫০ জন খাবেন। কিন্তু তাঁরা এসেছেন ৬৫ জন। বরপক্ষ আসবে শুনে বাড়ির ছোট ছোট মেয়েরা গেট তৈরি করেছে। তবে বরপক্ষের লোকজন বাড়িতে এসেই উত্তেজিত হয়ে বলেন, আগে যৌতুকের টাকা ও সোনা দিতে হবে। তারপর খাবার খেয়ে তাঁরা কনেকে নেবেন।
মমতাজ বেগম আরও বলেন, কনের বাবা তখন বাকি টাকা ও সোনার জন্য সময় চান। তখন ছেলের বাবা কোনো টাকা বাকি থাকলে কনেকে নেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দেন। একপর্যায়ে বরের বড় ভাই মো. হাসান গেট ও চেয়ার ভাঙচুর শুরু করেন। এ সময় বরের সঙ্গে আসা অন্তত ৮ থেকে ১০ জন কনের পরিবারের লোকজনকে চেয়ার দিয়ে মারতে শুরু করেন। এরপর তাঁরা খাওয়াদাওয়া না করেই খাল সাঁতরে এবং কেউ নৌকা দিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।

এ ব্যাপারে মুঠোফোনে বর মো. রুবেল বলেন, ‘আমি পেছনে ছিলাম। তবে গেটে আমার বড় ভাইয়ের সঙ্গে কী নিয়ে ঝামেলা হয়েছে, তা আমি জানি না।’

এ বিষয়ে লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, হামলায় আহত হয়ে কনেপক্ষের লোকজন থানায় এলে চিকিৎসার জন্য তাঁদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সুস্থ হয়ে তাঁরা লিখিত অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

অতিরিক্ত মোটা হওয়ায় যাত্রীকে তুলতে অস্বীকৃতি উবার চালকের

চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার জন্য সম্প্রতি রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান উবারের একটি গাড়ি ডেকেছিলেন মাইকেল। গাড়িটি আসার পর দরজা খুলে ভেতরে ঢুকতে যেতেই বাধল বিপত্তি। ‘অতিরিক্ত মোটা’ হওয়ায় চালক তাঁকে গাড়িতে তুলতে অস্বীকৃতি জানান। যুক্তরাষ্ট্রে ঘটে যাওয়া এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

গেমিং প্ল্যাটফর্ম টুইচের জনপ্রিয় স্ট্রিমার মাইকেল। ওই প্ল্যাটফর্মে তাঁর ৬০ হাজারের বেশি সাবস্ক্রাইবার রয়েছে। তিনি তাঁর কল অব ডিউটি গেমপ্লের জন্য পরিচিত।

মাইকেল সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। ভিডিওর শিরোনামে তিনি লিখেছেন, ‘আমি মজা করছি না। আমার উবার চালক বলেছেন, আমি নাকি অনেক বেশি মোটা। তাই তাঁর গাড়িতে আমাকে নেওয়া সম্ভব নয়। এমনকি তিনি আমার দিকে বন্দুক তাক করার হুমকিও দিয়েছেন।’ মাইকেলের ওই ভিডিও পাঁচ কোটিবারের বেশি দেখা হয়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, মাইকেল উবারের গাড়িচালককে বলছেন, ‘আপনি এইমাত্র বললেন, আমি নাকি অনেক বেশি মোটা। আমি কিন্তু আপনার ভিডিও করছি।’ উত্তরে উবার চালক নারী বলেন, ‘এটা যুক্তি আর বাস্তবতার ব্যাপার। আর আমি এটা বলার অধিকার রাখি।’ কিন্তু বাক্যটি শেষ করার আগেই মাইকেল তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘না, আপনি এটা বলতে পারেন না।’ তখন ওই নারী হাত উঁচিয়ে বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি পারি। এটা আমার গাড়ি। আপনি এখান থেকে চলে যান।’

বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে ওই উবার চালক বলেন, ‘আপনি কি চান, আমি আমার বন্দুকটা বের করি?’ এ কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে মাইকেল গাড়ির দরজা বন্ধ করে সেখান থেকে চলে যান। এক্সে দেওয়া অন্য একটি পোস্টে মাইকেল বলেন, এ ঘটনার কারণে তিনি সেদিন চিকিৎসকের কাছে যেতে পারেননি।

উবারের নীতি অনুযায়ী, চালকেরা বৈধ কারণ ছাড়া কোনো যাত্রীকে গাড়িতে তুলতে অস্বীকৃতি জানাতে পারবেন না। ওজন, লিঙ্গ, বর্ণ কিংবা ধর্মের ভিত্তিতে কোনো যাত্রীর সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা সম্পূর্ণ নিষেধ।

এই ঘটনা ভাইরাল হওয়ার পর উবার চালকের আচরণের তীব্র সমালোচনা করেছেন অনেকে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ