চট্টগ্রাম কৃষি অঞ্চলে ধান চাষে মানুষ আগ্রহ ফিরে পাচ্ছেন। ফলে বাড়ছে পতিত জমির ব্যবহার। ভালো দাম পাওয়ায় চলতি মৌসুমে বোরোর আবাদ বেড়েছে প্রায় ৭ হাজার ৬০৫ হেক্টর জমিতে। সহনীয় দামে সার-কীটনাশক পেলে অনেকেই ধানের আবাদে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন চাষিরা।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর জেলা নিয়ে চট্টগ্রাম কৃষি অঞ্চল। এ অঞ্চলের মধ্যে চাষাবাদ ও ধান উৎপাদন সবচেয়ে বেশি হয় নোয়াখালীতে। তবে গত কয়েক বছর ধরে পুরো অঞ্চলেই বাড়ছে ধানের আবাদ। গত মৌসুমে এ অঞ্চলের ২ লাখ ৯১ হাজার ৫৩ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়। চাল পাওয়া যায় ১২ লাখ ৪৯ হাজার ৮৯৩ টন। চলতি মৌসুমে ২ লাখ ৯৮ হাজার ৬৫৮ হেক্টর জমির ধান থেকে চাল উৎপাদন হয়েছে ১২ লাখ ৯৭ হাজার ৫৫৬ টন। গত মৌসুমের তুলনায় চালের উৎপাদন বেড়েছে ৪৭ হাজার ৬৬৩ টন।

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাতের ধান আবাদ, মাঠকর্মীর মাধ্যমে নিয়মিত যোগাযোগ ও পরামর্শ, চাষাবাদে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, মাঠ ও ফসল নিয়মিত তদারকি, ফসল বালাইমুক্ত রাখতে কম ক্ষতিকর কীটনাশকের ব্যবহারে বাড়ছে উৎপাদন। অনুকূল আবহাওয়া, উন্নত জাতের ধান আবাদে ফলন ও ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা আশার আলো দেখছেন। তারা পতিত জমি কাজে লাগাচ্ছেন।

চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর ধোরলা গ্রামের চাষি মো.

ওসমান বলেন, ‘আমার কোনো জমি নেই। এলাকায় অনেকেই জমি বছরের পর ফেলে রাখেন। তাদের সঙ্গে কথা বলে ফসল ভাগাভাগির শর্তে প্রায় দুই একরে ধান চাষ করেছি। শুরু থেকে যত্ন করেছি; ফলনও ভালো হয়েছে। চাল নিয়ে আমাকে চিন্তা করতে হবে না।’ একই এলাকার কৃষক মুসলিম মিয়া বলেন, ‘কিছু জমিতে নিজেরা চাষাবাদ করি। বাকিটা পড়েই থাকে। চাষিরা ধান চাষে আগ্রহ দেখানোয় এবার বর্গা দিয়েছি। আমনের ফলন তেমন হয়নি। তবে ভালো ফলন হয়েছে বোরোর। বাজারে দামও ভালো। প্রয়োজন মেটানোর ধান রেখে বাকিটা বিক্রি করে দিচ্ছি।’

কৃষি অধিদপ্তর চট্টগ্রামের জেলাভিত্তিক পরিসংখ্যান বলছে, চট্টগ্রামে এবার অতিরিক্ত ৫৫০ হেক্টর জমিসহ আবাদ হয়েছে মোট ৬৯ হাজার ৩৪৯ হেক্টর। ৫ হাজার ৮২৮ টন বেশিসহ ধান হয়েছে ২ লাখ ৭৭ হাজার ২৫০ টন। নোয়াখালীতে এবার ৪ হাজার ৩৫৬ হেক্টর বেশি জমিতে ধান আবাদ হয়েছে। জেলায় মোট ১ লাখ ৪ হাজার ৮৬ হেক্টর জমি থেকে ধান মিলেছে ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৭১৫ টন, যা গত মৌসুমের চেয়ে ২৪ হাজার ২৪৮ টন বেশি। এ ছাড়া কক্সবাজার, ফেনী ও লক্ষ্মীপুরে বাড়তি ২ হাজার ৬৯৯ হেক্টর পতিত জমিতে ধানের উৎপাদন বেড়েছে ১৭ হাজার ৫৮৭ টন।

এ অঞ্চলে মোট ১ লাখ ৪৪ হাজার ৮৩৩ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ধানের আবাদ হয়েছে। তা থেকে চাল পাওয়া গেছে ৭ লাখ ৬ হাজার ১৮৩ টন। একইভাবে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৬৪০ হেক্টরে উফশী আবাদে ৫ লাখ ৯০ হাজার ৯৮৪ এবং ১৮৫ হেক্টরে স্থানীয় জাতের ধান থেকে চাল মিলেছে ৩৮৮ টন।

কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উৎপাদনের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী রাখতে তারা কৃষকদের সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছেন। চট্টগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সৌরভ দাশ বলেন, ‘ভালো দাম পাওয়ায় চাষিরা ধান আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। অনাবাদি জমির ব্যবহার বাড়ছে। আবার তিন ফসলি জমি আবাদে বাড়ছে উৎপাদন, যার সুফল বোরো মৌসুমে পাওয়া গেছে।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ধ নক ষ ত র ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

কামরাঙ্গীরচরে বাবার ছুরিকাঘাতে ছেলে খুন

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে রাহাবুল ইসলাম (২৫) নামের এক হোটেল কর্মচারি খুন হয়েছেন। শনিবার রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। 

কামরাঙ্গীরচর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ লুৎফর রহমান বলেন, কামরাঙ্গীরচর থানাধীন ঝাউচর এলাকায় হোটেল কর্মচারি রাহাবুল খুন হয়েছেন। পারিবারিক বিরোধের জেরে রাহাবুলকে তার বাবা জুয়েল রানা খুন করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। 

এ দিকে নিহত রাহাবুলের মামা হুমায়ুন বলেন, তার বোন শাহানাজ কাজের সূত্রে জর্ডানে থাকেন। তার ভাগনে রাহাবুল এবং বোনের স্বামী জুয়েল রানা কামরাঙ্গীরচরের যাউচর এলাকায় একটি হোটেলে কাজ করতেন। শনিবার রাতে পারিবারিক বিরোধের জেরে ছুরিকাঘাত করে রাহাবুলকে হত্যা করেন বোনের স্বামী। 

পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত জুয়েল রানাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। কি কারণে ছেলেকে বাবা হত্যা করেছেন সেটিও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ