তাসকিন আহমেদ কি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সীমিত ওভারের খেলায় অংশ নিতে পারবেন? মোস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম ফিরবেন কবে? সাদা বলের ক্রিকেটে এই তিন অপরিহার্য পেসারকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে পাওয়া যাবে কি না, সেটা নিয়েই চলছে জল্পনা-কল্পনা।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের সীমিত ওভারের সিরিজ শুরু হবে ২ জুলাই, ওয়ানডে দিয়ে। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শেষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু হবে ১০ জুলাই। তিন পেসারকেই ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজের স্কোয়াডে রাখা হবে। তবে খেলানো হবে ওয়ার্কলোড অনুযায়ী। মোস্তাফিজ বাদে বাকি দুজনই এরই মধ্যে বোলিং শুরু করেছেন।
গোড়ালির চোটের কারণে তাসকিন লম্বা সময় ধরে খেলার বাইরে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্ট, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে ছয় টি-টোয়েন্টি এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই টেস্ট মিস করেছেন। পুনর্বাসন প্রক্রিয়া এখনো শেষ হয়নি তার। মাঠে ফেরার অবস্থায় আছেন তিনি। তবে টিম ম্যানেজমেন্ট তাকে নিয়ে ধীরে এগোতে চাচ্ছে। ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টিতে তাকে দুটি করে ম্যাচ খেলানোর ভাবনা রয়েছে টিম ম্যানেজমেন্টের। তবে তাসকিন কেমনভাবে সাড়া দিচ্ছেন, তার ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছু।
আরো পড়ুন:
প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে কতো টাকা পেলো দ.
চোকার্স দক্ষিণ আফ্রিকা এবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন
শরিফুল ঈদের আগেই বোলিং শুরু করেছেন। মাংসপেশির চোটের কারণে পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ টি-টোয়েন্টি খেলতে পারেননি তিনি। দুই থেকে তিন সপ্তাহ তার পুনর্বাসন চলেছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ দিয়েই মাঠে ফিরতে পারেন বাঁহাতি দ্রুত গতির এই বোলার।
মোস্তাফিজুর রহমান চোট পেয়েছিলেন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) খেলতে গিয়ে। নিজের খেলা শেষ ম্যাচে ফিল্ডিং করার সময় তিনি চোট পান। ১৪ দিনের পুনর্বাসন শেষ করেছেন তিনি। তবে এখনও বোলিংয়ে ফেরেননি। শুক্রবার পর্যন্ত হাতে স্লিং লাগানো ছিল। দু-এক দিনের মধ্যেই তা খুলে পুরোদমে মাঠে ফেরার প্রক্রিয়া শুরু করবেন মোস্তাফিজ। টেস্ট দলের সঙ্গে ফিটনেস ট্রেনিংয়ে ছিলেন তিনি। এখন শুধু মাঠে ফেরার অপেক্ষা।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ব্যয় বাড়ল ১৪৪ কোটি টাকা
‘খুলনা জেলা কারাগার নির্মাণ’ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন হয় ২০১১ সালে। ২০১৬ সালের জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। এর পর আটবার প্রকল্পের সময় বেড়েছে, দুই দফা সংশোধনের পর ব্যয় বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ। এ অবস্থায় প্রকল্পটি শেষ হওয়া নিয়ে হতাশা দেখা দেয়।
আশার কথা, নতুন জেলা কারাগারের কাজ শেষ হয়েছে। গত ২৫ মে গণপূর্ত বিভাগের কাছ থেকে নতুন কারাগারটি বুঝে নেওয়ার কথা ছিল কারা কর্তৃপক্ষের। কিছু কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় হস্তান্তর হয়নি। চলতি জুন মাসে যে কোনো সময় নতুন কারাগার হস্তান্তরের কথা রয়েছে। জনবল পদায়ন হলেই নতুন কারাগারে বন্দি স্থানান্তর শুরু হবে।
১৯১২ সালে নগরীর ভৈরব নদীতীরে নির্মাণ করা হয় খুলনার প্রথম কারাগার। সেখানে বন্দি ধারণক্ষমতা ৬৭৮ জনের। রয়েছেন ১ হাজার ৪শর বেশি বন্দি। ১১৩ বছরের পুরোনো জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে থাকতে হয় তাদের। এসব বিবেচনায় নিয়েই নতুন কারাগার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
খুলনার সিটি (রূপসা সেতু) বাইপাস সড়কের জয় বাংলা মোড়ের অদূরে প্রায় ৩০ একর জমির ওপর নতুন কারাগার নির্মাণ হচ্ছে। মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী নতুন কারাগারে ৪ হাজার বন্দি থাকতে পারবেন। প্রকল্পের আওতায় আপাতত ২ হাজার বন্দি রাখার অবকাঠামো তৈরি হয়েছে। পরে প্রয়োজন পড়লে পৃথক প্রকল্প নিয়ে অন্য অবকাঠামো নির্মাণ হবে।
নতুন কারাগার হবে সংশোধনাগার
কারাগার ঘুরে দেখা গেছে, ভেতরে সাজানো-গোছানো অভিজাত আবাসিক এলাকার মতো পরিবেশ। রং দেওয়া নতুন ভবন, পথের ধারে
ফুল, দামি পার্কিং টাইলস দেওয়া ফুটপাত ধরে হাঁটলে এটি কারাগারই মনে হয় না। নতুন এ কারাগার নির্মাণ হচ্ছে সংশোধনাগার হিসেবে। এখানে বিচারাধীন ও সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের পৃথক স্থানে রাখা হবে। কিশোর ও কিশোরী বন্দিদের জন্য রয়েছে পৃথক ব্যারাক। নারীদের জন্য পৃথক হাসপাতাল, মোটিভেশন সেন্টার ও ওয়ার্কশেড আছে। একইভাবে বন্দিদের জন্য ৫০ শয্যার হাসপাতাল থাকবে।
আরও থাকবে কারারক্ষীদের সন্তানদের জন্য স্কুল, বিশাল লাইব্রেরি, ডাইনিং রুম, আধুনিক স্যালুন ও লন্ড্রি। কারাগারে শিশুসন্তানসহ নারী বন্দিদের জন্য থাকবে পৃথক ওয়ার্ড ও ডে-কেয়ার সেন্টার। এ ওয়ার্ডটিতে সাধারণ নারী বন্দি থাকতে পারবেন না। সেখানে শিশুদের জন্য লেখাপড়া, খেলাধুলা, বিনোদন ও সংস্কৃতি চর্চার ব্যবস্থা থাকবে। কারাগারে পুরুষ ও নারী বন্দিদের হস্তশিল্পের কাজের জন্য আলাদা আলাদা ওয়ার্কশেড, বিনোদন কেন্দ্র ও নামাজের ঘর রয়েছে। মোট ৫২টি স্থাপনা রয়েছে এ কারাগারে।
গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রাশিদুল ইসলাম জানান, বন্দিদের প্রতিটি ব্যারাকের চারপাশে পৃথক সীমানাপ্রাচীর রয়েছে। এক শ্রেণির বন্দিদের অন্য শ্রেণির বন্দিদের সঙ্গে মেশার
সুযোগ নেই। কারাগারের ভেতরে শুধু সীমানাপ্রাচীরই রয়েছে প্রায় ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের। ভেতরে ড্রেন, ফুটপাত, নিজস্ব পয়োবর্জ্য শোধন কেন্দ্র, ওয়াকওয়ে, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থা, দুটি পুকুর ও সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সবকিছুর কাজ শেষ।
সময় বেড়েছে আটবার, ব্যয় বেড়ে দ্বিগুণ
২০১১ সালের অনুমোদিত খুলনা জেলা কারাগার নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ছিল ১৪৪ কোটি টাকা। ২০১৭ সালের ৬ জুন প্রকল্পটি প্রথম দফা সংশোধন করা হয়। এতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ২৫১ কোটি টাকা। নতুন লক্ষ্য নেওয়া হয় ২০১৯ সালের ৩০ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার। এর পর পাঁচ দফায় পাঁচ বছর সময় বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু কাজ আর শেষ হয়নি। ২০২৩ সালের মে মাসে দ্বিতীয় দফায় প্রকল্প সংশোধন করা হয়েছে। এতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮৮ কোটি টাকায়।
হস্তান্তর ও চালু কবে
খুলনা গণপূর্ত বিভাগ-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান বলেন, নতুন কারাগারের সব কাজ শেষ। কয়েকটি স্থাপনায় রঙের শেষ প্রলেপসহ টুকটাক কাজ বাকি রয়েছে। আগে করলে এসব নষ্ট হয়ে যাবে। এ কারণে হস্তান্তর তারিখ নির্ধারণ হলেই এসব কাজ করা হবে।
খুলনার জেল সুপার নাসির উদ্দিন প্রধান বলেন, কিছু কাজ বাকি ছিল, সেগুলো শেষ করতে বলা হয়েছে। সব ঠিক থাকলে চলতি জুন মাসেই আমরা কারাগার বুঝে নেব। তিনি আরও বলেন, কারাগার পরিচালনার জন্য ৬০০ জনবলের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পুরোনো কারাগারে প্রায় ২০০ জনবল রয়েছে। স্থাপনা বুঝে নেওয়ার পর কারাগার চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে।