কথায় বলে, পুরোনো ফ্যাশন ফিরে আসে। গ্যাজেটের বেলায়ও যেন কথাটি সত্য হলো। আগে ডিভাইস ছোট থেকে পেয়েছে বড় পরিসর। বড় স্ক্রিনের জামানায় তাই ফিরে আসছে ছোট্ট পরিসরের স্ক্রিন। অনেক বড় স্ক্রিনের প্রতিযোগিতায় নতুন উদ্ভাবন ন্যানোফোন। হাজারো অ্যাপের ভিড়ে নিজেকে কিছুটা যন্ত্রের যন্ত্রণা থেকে মুক্ত রাখতেই এমন ডিজাইনের আবির্ভাব।
অন্যদিকে কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না স্ক্রলিং, মুঠোয় থাকা ছোট্ট ফোনটি আনপ্লাগ করা সহজ করে প্রায় ৫৫ শতাংশ স্মার্টফোনের ব্যবহার কমিয়ে আনে। ন্যানোফোন এখন ডুমস্ক্রোলিং কমাতে সহায়ক যন্ত্র হিসেবে কাজ করছে। গবেষণা বলছে, আক্ষরিক অর্থেই তা করছে।
একের পর এক ডুমস্ক্রোলিং কমাতে চাইলে অনেকে ন্যানোফোনের সহায়তা নিতে পারবেন। আকারে ক্রেডিট কার্ড অবয়বের স্মার্টফোনটি পূর্ণ আদলের ডিভাইসের সবকিছুই করে।
অন্যদিকে, ছোট্ট স্ক্রিন স্ক্রোল করাকে কিছুটা কম আকর্ষণীয় করে তোলে। যদি নিজের স্ক্রিন টাইম কমাতে আগ্রহী হন, তাহলে সত্যিই ভাগ্য সহায় হবে। ন্যানোফোনের দাম এখন ৯০ থেকে ১৯৯ ডলারের মধ্যে। ডিভাইস গবেষকরা বলছেন, পকেট আদলের বিকল্প ডিভাইস 
দিয়ে ফোনের আসক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করার সময় এখন। নতুন আদলের এসব স্মার্টফোন ব্যবহার সহজ, আবার তীব্র আসক্তিকর 
কারণও হতে পারে।
যদি স্ক্রিন স্ক্রোলিং কমাতে এবং দৈনন্দিন জীবনে আরও যন্ত্রবিমুখ হতে আগ্রহী হওয়ার কথা ভাবেন, তাহলে ‘ন্যানোফোন’ পূরণ করবে সে চাহিদা। ঠিক এমন ভাবনা থেকেই নির্মাতারা এ ধরনের ডিভাইস ডিজাইন করেছেন বলে জানা গেছে। হালকা গড়নের ন্যানোফোনটি জিন্সের প্যান্টের ছোট্ট পকেটেই ঠিকঠাক মানিয়ে যাবে।
সাধারণ ফোনের মতো সম্পূর্ণরূপে কার্যকর, ফোরজি এবং ওয়াইফাই সংযোগ সুবিধা দেবে। কল বা ভিডিও চ্যাট করতে, ছবি তুলতে এবং প্রয়োজনের সব অ্যাপ অনেক ছোট্ট পরিসরে ব্যবহার করার দারুণ সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন। বাড়তি ডেটা প্ল্যান কেনার তেমন প্রয়োজন হবে না। 
ন্যানোফোন প্রচলিত সিমকার্ডের সঙ্গে কাজ করে। যখন একটু হালকা ভ্রমণ করতে চান, যেমন রাতের বাইরে বা জিমে যাওয়া বা জরুরি ব্যাকআপ ফোন হিসেবে এটি দারুণ কাজ করে। বলতে গেলে, ফ্যাশনে নতুন মাত্রা আনবে। ব্যবহৃত সাধারণ স্মার্টফোনের মতো ন্যানোফোনটি ব্লুটুথ ডিভাইসের সঙ্গে জুড়ে নেওয়া যাবে।
ন্যানোফোনের সুবিধায় ২ জিবি র‌্যাম,
১৬ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ আর ২ হাজার মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি দেবে সময়ের সব চাহিদা পূরণের সুযোগ। ডিসপ্লেতে থাকবে
২.

৫ ইঞ্চির খুদে পর্দা। 
আবার সহজেই হেডফোন বা স্মার্টওয়াচের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন। বাড়তি সুবিধা হিসেবে দীর্ঘ ব্যাটারি লাইফ অফার করে। দারুণ টেকসই আর প্রতিদিনের বড় ডিভাইসের ঝুট-ঝামেলা থেকে রেহাই দিয়ে স্মার্টফোনের সব ধরনের সুবিধা নিশ্চিত করে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবহ

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ