চলমান সংঘাত বন্ধে ইরান ও ইসরায়েল ‘একটি চুক্তিতে পৌঁছাবে’ বলে আশা প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সংঘাত বন্ধ করতে বহু পক্ষের মধ্যে ফোনে কথা হচ্ছে ও বৈঠক চলছে এবং তিনি নিজেই এই চুক্তিতে মধ্যস্থতা করবেন বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় রোববার সকালে নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘ইরান ও ইসরায়েলের একটি চুক্তিতে পৌঁছানো উচিত; দুই দেশ চুক্তি করবেও-যেমনটা আমি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে করিয়েছিলাম।’

ট্রাম্প উল্লেখ করেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর প্রথম মেয়াদে চরম উত্তেজনায় থাকা সার্বিয়া-কসোভো এবং মিসর-ইথিওপিয়ার মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি।

ট্রাম্প বলেন, ‘তেমনিভাবে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যেও আমরা খুব শিগগির শান্তি প্রতিষ্ঠা করব। এখন বহু ফোনালাপ ও বৈঠক চলছে।’

শেষে ট্রাম্প লেখেন, ‘আমি অনেক কিছু করি, কিন্তু কখনো কিছুর জন্য কৃতিত্ব পাই না। তবে ঠিক আছে, জনগণ তা বোঝে। মেক দ্য মিডল ইস্ট গ্রেট এগেইন!’

এদিকে রোববার এবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারেও ট্রাম্প ইসরায়েল-ইরান সংঘাত বন্ধের সম্ভাবনার কথা বলেছেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই সংঘাত বন্ধের মধ্যস্থতায় ভূমিকা রাখলে তা সমর্থন করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। ট্রাম্প জানান, গত শনিবার পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপে তাঁর এই বিষয়ে কথা হয়েছে।

ইরানে ইসরায়েলের সর্বশেষ হামলা নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি, এসব হামলা অত্যন্ত ধ্বংসাত্মক ছিল। খুবই ধ্বংসাত্মক। ওরাও (ইসরায়েল) কিছুটা আক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু প্রাথমিকভাবে ইরানের ওপর আঘাতটা ছিল খুবই ধ্বংসাত্মক।’

ইরানকে আলোচনার টেবিলে আনতে কোনো সময়সীমা আছে কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘না, কোনো সময়সীমা নেই। তবে তারা কথা বলছে। তারা একটি চুক্তি করতে চায়। তারা কথা বলছে এবং কথা বলা অব্যাহত রেখেছে।’

ওয়াশিংটন-তেহরানের মধ্যে আলোচনা বাতিল হওয়া প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে ট্রাম্প বলেন, ‘এটা [সংঘাত বন্ধের আলাপ] আসলে আরও দ্রুত চুক্তি হতে সহায়তা করবে।’

সংঘাতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে পুতিনের ভূমিকা প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি এতে আগ্রহী। তিনিও প্রস্তুত। তিনি আমাকে এই বিষয়ে ফোন করেছিলেন। আমরা এ নিয়ে দীর্ঘ সময় কথা বলেছি। আমরা এটি নিয়ে তাঁর নিজের পরিস্থিতির (ইউক্রেন যুদ্ধ) চেয়েও বেশি আলোচনা করেছি। আমি বিশ্বাস করি এই বিষয়টির সমাধান হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ট র ম প বল ন স ঘ ত বন ধ ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানে হামলা: ট্রাম্প ৬০ দিনের সময়সীমার কথা বলছেন, সেটি কী?

ইরানকে ৬০ দিনের সময় বেঁধে (আলটিমেটাম) দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সময়সীমা শেষ হওয়ার পরদিনই দেশটিতে ভয়াবহ হামলা চালাল যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরায়েল। আজ শুক্রবার ট্রাম্প নিজেই ওই সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার কথা জানান।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের খবরে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চলতি বছরের শুরুর দিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। সেই চিঠিতে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে সরে আসার বিষয়ে একটি চুক্তিতে রাজি হতে চাপ দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। চুক্তিতে পৌঁছাতে ওয়াশিংটন–তেহরান আলোচনা সফল করতে ৬০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল সেই চিঠিতে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে ইরান চুক্তি নিয়ে প্রথম দফার আলোচনা ১২ এপ্রিল শুরু হয়েছিল। সেদিন থেকেই এই ৬০ দিনের সময়সীমা গণনা শুরু হয়। সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার পরদিন গতকাল বৃহস্পতিবার ১২ জুন ইসরায়েল হামলা চালাল ইরানের অন্তত ৮টি শহরে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আজ সিএনএনের সাংবাদিক ডানা বাসকে বলেন, ‘আমার কথা শোনা উচিত ছিল ইরানের। যখন আমি বলেছিলাম—আপনি জানেন, আমি ওদের ৬০ দিনের এক সতর্কবার্তা দিয়েছিলাম, আপনি জানেন কি না, জানি না, কিন্তু আমি ওদের ৬০ দিনের সময়সীমা দিয়েছিলাম, আর আজ ৬১তম দিন।’

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনির উদ্দেশে পাঠানো চিঠির প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ট্রাম্প ইরানকে সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন।

বছরের শুরুর দিকে ফক্সনিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চিঠির প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমি আশা করি, ইরান আলোচনায় আসবে—আমি তাদের চিঠি লিখে জানিয়েছি, আমি আশা করি, তোমরা আলোচনা করবে। কারণ, আমাদের যদি সামরিকভাবে হস্তক্ষেপ করতে হয়, তাহলে সেটা ইরানের জন্য ভয়াবহ হবে।’

ট্রাম্প বলেন, ‘আমি বলেছিলাম, আমি আশা করি, তোমরা আলোচনা করবে। কারণ, সেটা ইরানের জন্য অনেক ভালো হবে।’

ইরানের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা এবং আলোচনায় জড়িত ব্যক্তিরা জানতেন যে সময়সীমা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য চাপ ক্রমেই বাড়ছিল। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা আগে বলেছিলেন, ৬০ দিনের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও আলোচনা চলবে। কিন্তু এখন ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর হামলা চালানোর পর এই আলোচনার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে—যদিও মার্কিন কর্মকর্তারা আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে জোর দিচ্ছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লন্ডন বৈঠকের বিষয় ও সিদ্ধান্ত পরিষ্কার করতে হবে: চরমোনাই পীর
  • বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কা সফরের পূর্ণাঙ্গ সময়সূচি
  • হামাস থেকে হিজবুল্লাহ: পরাজিত মিত্ররা কি খামেনির পতনের পূর্বাভাস?
  • জামায়াত-এনসিপি নাখোশ
  • সরকার-বিএনপি সমঝোতা অনিশ্চয়তা দূর করবে, আশা ইসলামী আন্দোলনের
  • ইরানে হামলা: ট্রাম্প ৬০ দিনের সময়সীমার কথা বলছেন, সেটি কী?
  • ইউনূস-তারেক বৈঠক ‘টার্নিং পয়েন্টে’, অনিশ্চয়তা কাটছে