কুলাউড়ায় স্কুলছাত্রী আনজুম হত্যার রহস্য উদঘাটন
Published: 16th, June 2025 GMT
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় সখ্যতা গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়ে স্কুলছাত্রী নাফিসা জান্নাত আনজুমকে (১৫) শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগে প্রতিবেশী যুবককে আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার (এসপি) জাহাঙ্গীর হোসেন।
সোমবার (১৬ জুন) নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসপি জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, স্থানীয় লোকজনের বক্তব্য, আলামত উদ্ধারের জায়গা এবং নারী ঘটিত কিছু বিষয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা সন্দেহ করে জুনেল মিয়াকে (৩৯) আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন তিনি।
আটক জুনেল মিয়া নিহতের পাশের বাড়ির জাইর মিয়ার ছেলে।
আরো পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চুলার ধোঁয়া ঘরে ঢোকায় বিতণ্ডা, স্বজনদের হামলায় যুবক খুন
মোবাইল চুরির সন্দেহে যুবককে কুপিয়ে হত্যা, আটক ৩
জুনেল পুলিশকে জানান, আনজুম তার বাড়ির সামনের একটি রাস্তা দিয়ে প্রায়ই স্কুল ও প্রাইভেট পড়তে আসা যাওয়া করত। সেই সুবাদে জুনেল তার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলার চেষ্টা করে। গত ১২ জুন আনজুম পাশের গ্রামে প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফিরছিল। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কথা বলতে বলতে জুনেল আনজুমের পিছু নেন। এড়িয়ে যেতে চাইলে জুনেল পেছন থেকে আনজুমকে জড়িয়ে ধরেন।
এসময় আনজুম চিৎকার করলে জুনেল হাত দিয়ে তার গলা চেপে ধরেন। জুনেল আনজুমকে অচেতন অবস্থায় একই এলাকার কিরিম শাহ মাজার সংলগ্ন জঙ্গলঘেরা নালায় ফেলে রেখে যান। গত ১৪ জুন আনজুমের মরদেহ উদ্ধার হয়।
পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, কিরিম শাহ মাজারের উত্তর পাশে জনৈক রওশন আলীদের পারিবারিক কবরস্থানের সীমানা দেয়ালের পাশে নিহতের বোরখা ফেলে দেন জুনেল। আটক জুনেলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রবিবার রাতে নিহতের সেই বোরখা উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নোবেল চাকমা, কুলাউড়া থানার ওসি গোলাম আপছার, কুলাউড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সুদীপ্ত শেখর ভট্টাচার্য।
ঢাকা/আজিজ/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য আস ম আনজ ম
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।