সরকারি চাকরিজীবীরা পেলেন ‘বিশেষ সুবিধা’, অন্যরা পেলেন কী
Published: 17th, June 2025 GMT
গতবারের তুলনায় এবার পবিত্র ঈদুল আজহায় ১৩ লাখ পশু কম কোরবানি হয়েছে। সব মিলিয়ে এবার ৩৩ লাখ ১০ হাজারের বেশি কোরবানির পশু অবিক্রীত রয়েছে।
এই চিত্র নিশ্চিতভাবেই আমাদের বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতার প্রতিফলন। এবার এত পশু কেন অবিক্রীত থেকে গেল, তার ব্যাখ্যা হিসেবে কাউকে কাউকে বলতে শুনছি, ৫ আগস্টে রাজনৈতিক পালাবদলের কারণে আওয়ামী লীগের চিহ্নিত অনেকেই কোরবানি দেননি। কিন্তু এটাও বাস্তবতা যে গত ১০ মাসে আওয়ামী লীগের দখলে থাকা হাটবাজার, সেতু থেকে শুরু করে জলমহাল, বালুমহাল, টেন্ডারবাজি, ফুটপাত—সবকিছুর দখল চলে গেছে বিএনপির নেতা–কর্মীদের কাছে। অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের নতুন দল এনসিপির নেতা–কর্মীসহ গণ অধিকার পরিষদের অনেক নেতা–কর্মীর বিরুদ্ধেও দুর্নীতি-কেলেঙ্কারি এবং সরকারি কাজে ভাগ–বাঁটোয়ারা, তদবির বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক দলের অর্থনৈতিক ভিত্তি আগে থেকেই শক্তিশালী। গত ১০ মাসে তাদের কর্মকাণ্ড নির্বিঘ্নেই পরিচালিত হয়েছে। ফলে রাজনীতিকে আশ্রয় করে নতুন অর্থনৈতিক শ্রেণি দৃশ্যমানভাবেই উপস্থিত। এরপরও কেন এ বছর এত পশু অবিক্রীত থাকল?
এ প্রশ্নের উত্তরের জন্য আমাদের অর্থনীতির দিকে ফিরে তাকাতে হবে। শেখ হাসিনা যে ক্রোনি ক্যাপিটালিজম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সেখানে রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আমলাতন্ত্র, আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত একটি কুলীন গোষ্ঠীই সবকিছুর নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠেছিল। নাগরিকেরা সেখানে ছিলেন নিছক কর-ভ্যাট-রাজস্বের জোগানদার। ফলে একদিকে ক্ষমতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর হাতে সম্পদের বড় অংশটা পুঞ্জিভূত হয়েছে আর অন্যদিকে পাল্লা দিয়ে মানুষের দারিদ্র্য বেড়েছে।
চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের পতন নিঃসন্দেহে অনন্য এক অর্জন। সব শ্রেণি–পেশার মানুষ পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে নেমে এসেছিলেন রাস্তায়। কিন্তু অভ্যুত্থান বিশাল জনপ্রত্যাশা তৈরি করেছিল তার একটা বড় জায়গা ছিল, সাধারণ মানুষ ভেবেছিলেন যে তাঁদের ঘাড়ের ওপর সিন্দাবাদের ভূতের মতো চেপে বসা ক্রোনিতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ও আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থার পরিবর্তন আসবে। সরকারি সেবা তাঁরা বিনা ঘুষে, বিনা হয়রানিতে পাবেন। পদে পদে চাঁদা দিয়ে, নেতা, পাতিনেতা বা উপনেতাদের খাজনা দিয়ে তাঁদের টিকে থাকার লাইসেন্স কিনতে হবে না।
অন্তর্বর্তী সরকারের বয়স ১০ মাস পেরিয়েছে। সরকারপ্রধানের কাছ থেকে নির্বাচনের যে সম্ভাব্য সময়সীমা জানা গেছে, তাতে সরকারের কার্যকাল অর্ধেকটা পেরিয়েছে। কিন্তু এ সময়টাতে বন্দোবস্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলকতা, বহুত্ববাদ বা সংস্কারের মতো কঠিন শব্দগুলো শোনা গেলেও যেসব পরিবর্তন হলে নাগরিকেরা রাষ্ট্রের কাছে সরাসরি ভোগান্তি, হয়রানি, ঘুষ ছাড়া সেবা পেতে পারেন, সেই উদ্যোগগুলো মোটেই দৃশ্যমান নেই।
‘আমরা যখন বৈষম্যবিরোধী কথা বলছি, বৈষম্য কমানোর কথা বলছি, তখন কেন শুধু সরকারি কর্মচারীদের জন্য একটা বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।’এই মুহূর্তে বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় চাপে আছে অর্থনীতি। আর অর্থনীতির সবচেয়ে বড় সংকটটা হলো অনিশ্চয়তা। বিনিয়োগ নেই, কর্মসংস্থান নেই। নিম্ন আয়ের মানুষেরা বিশেষ করে তৈরি পোশাক ও নির্মাণশিল্পের সঙ্গে যুক্ত বিপুলসংখ্যক শ্রমজীবী মানুষ কাজ হারিয়েছেন। সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে, গত অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) যে ২১ লাখ মানুষ বেকার হয়েছেন, তার ৮৫ শতাংশ নারী। কৃষিতে আদৌ কোনো অভিভাবক আছে কি না, তা নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। ফলে পেঁয়াজ, আলু, শীতের সবজি, ধান থেকে শুরু করে গরমের সবজি পটোল—লোকসানের বোঝা দীর্ঘায়িতই হচ্ছে। সর্বস্বান্ত চাষিদের মধ্যে আত্মহত্যার ঘটনাও বেড়েছে।
অর্থনীতির এই অনিশ্চয়তার কারণ হলো রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা। এমন পরিবেশে বিদেশি বিনিয়োগ তো দূরে থাক, দেশি বিনিয়োগকারীরাই তাঁদের পকেট থেকে টাকা বের করেন না। এরপর আবার ঢাকার বাইরে পুলিশ প্রশাসন কার্যত প্রায় নিষ্ক্রিয়। মবতন্ত্রও আছে। সব মিলিয়ে এখন অর্থনীতি বিনিয়োগ আর কর্মসংস্থানের পক্ষে নয়।
বিগত সরকার উন্নয়নের ফাঁপানো গল্প দিয়ে চাপা দিতে চেয়েছিল দারিদ্র্য, বেকারত্ব আর কর্মসংস্থানহীনতার রূঢ় বাস্তবতাকে। জুলাই অভ্যুত্থানের সূচনা হয়েছিল তরুণদের কর্মসংস্থান নিয়ে উদ্বেগের জায়গা থেকে। এই অভ্যুত্থানে সমাজের আর যে তরুণেরা নেমে এসেছিলেন, সরকারি চাকরির সঙ্গে তাঁদের বিন্দুমাত্র সম্পর্কও ছিল না। নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে যে চরম অনিশ্চয়তা, সেই বোধ থেকেই তাঁরা নেমে এসেছিলেন, বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়েছিলেন।
এই অভ্যুত্থানে শুধু পথশিশুই নিহত হয়েছে ১৬৮ জন। আমাদের নীতিনির্ধারকেরা, আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো কি কখনো ভেবে দেখেছে, এই মানুষগুলো কেন চরম আত্মত্যাগ করেছেন?
সরকার কী দর্শন লালন করছে, তার সবচেয়ে বড় আয়না হলো বাজেট। রাজনৈতিক অর্থনীতি বলে যে শাস্ত্র, সেখানে স্পষ্টতই দেখা যায়, সরকারের নীতিনির্ধারণীতে সেসব গোষ্ঠীই ভূমিকা রাখতে পারে, যারা প্রভাবশালী। দেশে যখন কর্মসংস্থান নেই, ব্যক্তি খাত ও বিদেশি বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক, তখন বাজেটে আমরা দেখছি, সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বাড়ানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
উদার, গণতান্ত্রিক, বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রথম থেকেই আমলাতন্ত্রের ওপর নির্ভরশীল হতে দেখা গেছে। হাসিনা সরকার যে চরমভাবে স্বৈরতান্ত্রিক ও কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠতে পেরেছিল, তার পেছনে প্রধান তিন স্তম্ভের মধ্যে আমলাতন্ত্র একটি।
কিন্তু গত ১০ মাসে শীর্ষ পর্যায়ে আওয়ামী সুবিধাভোগী মুখগুলো সরানো ছাড়া আমলাতন্ত্রের কাজে, চিন্তায় কি কোনো পরিবর্তন হয়েছে। বরং যেখানেই সংস্কারের কথা উঠছে, সেখানেই আন্দোলনের হুমকি দিয়ে কিংবা আন্দোলন করে উদ্যোগটা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। সর্বশেষ নজিরটা আমরা দেখলাম এনবিআর সংস্কারের ক্ষেত্রে।
যত দিন গড়াচ্ছে, সরকারের সঙ্গে ততই অভ্যুত্থানে থাকা বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হতে দেখা যাচ্ছে। ফলে সরকারকে যেমন রাজনৈতিক শক্তির জন্য মূলত নির্ভর করতে হচ্ছে এনসিপি, জামায়াত, হেফাজতসহ আরও কিছু ইসলামপন্থী গোষ্ঠীর ওপর। আবার আমলাতন্ত্রের ওপর নির্ভরতা কিংবা তাদের খুশি রাখার নানা প্রচেষ্টাও দেখা যাচ্ছে। এবার ঈদুল আজহায় টানা যে ১০ দিন ছুটি দেওয়া হয়েছে, তার পেছনে এই মানসিকতা কাজ করে থাকতে পারে। অর্থনীতিবিদদের বিরোধিতা সত্ত্বেও বাজেটে সরকারি চাকরিজীবীদের বিশেষ সুবিধা দেওয়াটাও সেই একই চিন্তার প্রতিফলন।
সরকার এর আগে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা দিতে চেয়েছিল। কিন্তু সেটা নিয়ে বেশি হইচই হওয়ায় সেখান থেকে সরে এসে ‘বিশেষ সুবিধা’ ঘোষণা দিল। এর জন্য বাড়তি প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। প্রশ্ন হচ্ছে, এই টাকা কি তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কাজে লাগানো যেত না।
শেষের শুরুটা করা যাক বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সানেমের (সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং) নির্বাহী পরিচালক ড.
প্রশ্ন হচ্ছে, সরকারি চাকরির সঙ্গে যুক্ত মানুষের সংখ্যা ১৫ লাখের মতো। বাকি ১৭ কোটি ৩২ লাখ মানুষের ঘাড়ে কর, ভ্যাটের বোঝা ভারী হওয়া ছাড়া আর কোন ‘বিশেষ সুবিধাটা’ দেওয়া হচ্ছে?
● মনোজ দে প্রথম আলোর সম্পাদকীয় সহকারী
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ কর জ ব র জন ত ক সরক র র ১০ ম স র জন য আম দ র সবচ য় আমল ত র ওপর ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাবির ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাজেট প্রকাশ, অবহেলিত গবেষণা ও স্বাস্থ্য খ
২০২৫-২৬ অর্থবছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জন্য ১ হাজার ৩৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকার প্রস্তাবিত বাজেট প্রকাশ করা হয়েছে। তবে এ বাজেটে বড় কোনো ধরনের সংস্কার বা মৌলিক উন্নয়ন ভিত্তিক কোনো পরিকল্পনা দেখা যায়নি।
গবেষণা খাত, স্বাস্থ্য খাত, মূলধন অনুদানসহ বেশ কয়েকটি খাত একেবারেই অবহেলিত থাকতে দেখা গেছে।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনস্থ অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক বাজেট উপস্থাপন শীর্ষক এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট সম্পর্কে বিস্তারিত জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর আলম।
আরো পড়ুন:
বাজেটের ত্রুটি সংশোধনের আহ্বান
নির্দেশনামূলক বাজেট দিতে অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ: এবি পার্টি
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ১ হাজার ৩৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকার মধ্যে সরকার থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের মাধ্যমে ৮৮৩ কোটি ৪ লাখ টাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৯০ কোটি টাকা আয়ের পরিকল্পনা ঢাবি প্রশাসনের। এ হিসাবে বাজেটে ঘাটতি দেখানো হয়েছে ৬২ কোটি ৪১ লাখ টাকা। অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে প্রত্যাশিত অর্থ মোট প্রস্তাবিত বাজেটের শতকরা ৮৫.২৮ ভাগ, অভ্যন্তরীণ উৎস ৮.৬৯ ভাগ এবং ঘাটতি ৬.০৩ ভাগ।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে ঢাবির সংশোধিত বাজেট ছিল ৯৯৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা; বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে পায় ৮১৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে পায় ১১০ কোটি টাকা এবং ঘাটতি ছিল ৬৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাজেট ছিল ৯২ হাজার ৭৬৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।
২০২৫-২৬ অর্থবছরে মোট বেতন বাবদ সহায়তা খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২৯৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা, যা মূল বাজেটের ২৮.৩৪ ভাগ। মোট ভাতাদি বাবদ সহায়তা খাতে বরাদ্দ পেয়েছে ২১৫ কোটি ৯১ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, যা মোট বাজেটের ২০.৮৪ ভাগ।
মোট পণ্য ও সেবা বাবদ সহায়তা খাতে বরাদ্দ পেয়েছে ২৮৫ কোটি ৯৮ লাখ ২২ হাজার টাকা, যা মোট বাজেটের ২৭.৬২ ভাগ। পেনশন স্কিম বাবদ সহায়তা ধরা হয়েছে ১৩৮ কোটি ৮৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, যা মোট বাজেটের ১৩.৪১ ভাগ।
গবেষণা অনুদান এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বাবদ সহায়তা খাতে যথাক্রমে ২১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা এবং ১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা যথাক্রমে মোট বাজেটের ২.০৮ ভাগ ও ০.১০ ভাগ। অন্যান্য অনুদান হিসেবে দেখানো হয়েছে ৩৪ কোটি ৩১ লাখ ৯০ হাজার টাকা, যা মোট বাজেটের ৩.৩১ ভাগ।
যন্ত্রপাতি, যানবাহন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং অন্যান্য মূলধন অনুদান বাবদ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে যথাক্রমে ৩৫ কোটি ৪১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা, ১৬ কোটি ৮ লাখ টাকা, ৪২ কোটি টাকা এবং ৩০ কোটি টাকা, যা যথাক্রমে মূল বাজেটের ৩.৪২ ভাগ, ০.১৬ ভাগ, ০.৪১ ভাগ এবং ০.২৯ ভাগ।
২০২৪-২৫ অর্থ বছরের তুলনায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরে পণ্য ও সেবা বাবদ সহায়তা খাতে ৬৫ কোটি ৪৩ লাখ ১৭ হাজার টাকা (৬.৯২ ভাগ), পেনশন ও অবসর সুবিধা খাতে ২৩ কোটি ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা (২.৪৫ ভাগ), গবেষণা অনুদান খাতে ১ কোটি ৫২ লাখ (০.১৬ ভাগ), প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা সহায়তা খাতে ২৫ লাখ টাকা (০.০৩ ভাগ), যন্ত্রপাতি অনুদান খাতে ৭ কোটি ৬৬ লাখ ৯৫ হাজার টাকা (০.৮১ ভাগ) এবং অন্যান্য মূলধন অনুদান খাতে ১ কোটি টাকা (০.১১ ভাগ) বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
২০২৪-২৫ অর্থ বছরের তুলনায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বরাদ্দ কম দেওয়া হয়েছে বেতন বাবদ সহায়তা খাতে ৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা (০.৬০ ভাগ), ভাতা বাবদ সহায়তা খাতে ২৫ কোটি ১ লাখ ৫৭ হাজার টাকা (০.২৭ ভাগ), অন্যান্য অনুদান খাতে ৪৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা (০.০৫ ভাগ) এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অনুদান খাতে ১০ লাখ টাকা (০.০১ ভাগ) টাকা।
বিগত বছরে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি অনুদান খাতে ৪৬০ কোটি টাকা (০.৪৬ ভাগ) বরাদ্দ থাকলেও তা এবার ৪২০ কোটি টাকা (০.৪১ ভাগ) বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বিগত বছরে এ খাতে উদ্বৃত্ত ছিল বলে বরাদ্দ বেশি ছিল এবং এবার উদ্বৃত্ত নেই তাই বরাদ্দ কম হয়েছে- এমনটাই ভাষ্য প্রশাসনের। তবে সারা বিশ্ব যেখানে তথ্যপ্রযুক্তিতে এগিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর এবং বাজেট বাড়াতে দায়িত্বশীল, সেখানে ঢাবিতে এ খাতে বাজেট কমেছে।
গত বছর যানবাহন বাবদ কোনো অনুদান না রাখলেও এবার রাখা হয়েছে ১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। মোট ভাতাদি বাবদ সহায়তা খাতে শিক্ষা ভাতা, চিকিৎসা ভাতা, টিফিন ভাতা, ধোলাই ভাতা, অধিকাল ভাতা ও বাংলা নববর্ষ ভাতা কমালেও বাড়ানো হয়েছে বাড়ি ভাড়া ভাতা এবং উৎসব ভাতা।
বিগত বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে অর্জিত রাজস্ব ১১০ কোটি টাকা (১১.০৭ ভাগ) থাকলেও এবার তা কমিয়ে ৯০ কোটি টাকা (৮.৬৯ ভাগ) বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী