যশোর মনিরামপুরে নগদ কোম্পানির ৫৫ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। নগদ যশোর শাখার একটি ডিলারের কর্মকর্তা রবিউল ইসলামের কাছ থেকে মোটরসাইকেল যোগে আসা দুর্বৃত্ত চক্র এই টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
আজ মঙ্গলবার (১৭ জুন) সকাল নটার দিকে মনিরামপুর সড়কের কুয়াদা জামতলা মোড়ে এই ঘটনা ঘটে।
নগদ যশোরের একাউন্টেন্ট কাজী মমিনুর ইসলামের কাছ থেকে ৫৫ লাখ টাকা বুঝে নিয়ে কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম একটি প্রাইভেট যোগে মনিরামপুরের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। পথে জামতলা মোড়ে পৌঁছালে মোটরসাইকেল যোগে আসা দুর্বৃত্তরা প্রাইভেটের সামনে গিয়ে গতিরোধ করে। এরপর গাড়ির গ্লাস ভাঙচুর করে এবং রবিউলকে নামিয়ে মারধর করে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়।
নগদ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম যশোরের ভাতুড়িয়া হাফেজ পাড়ার জালাল উদ্দিনের ছেলে। তিনি নগদ যশোর একটি শাখার ব্যবস্থাপক। যশোর থেকে নগদের টাকাটি যে প্রাইভেটে যাচ্ছিলো তার ড্রাইভার পোস্ট অফিস পাড়ার মোহাম্মদ সাজু।
রবিউল ইসলাম জানিয়েছেন, তিনি যশোরের নগদের একাউন্টেন্ট কাজী মমিনুর ইসলামের কাছ থেকে ৫৫ লাখ টাকা নিয়ে মনিরামপুর শাখা সাব অফিসের টাকা আবু সাজিদের কাছে পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন। পথে তাদের উপর হামলা হয়। তাকে মারধর করা হয়েছে, গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি।
মনিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূর মোহাম্মাদ বলেন, “প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে পুলিশ খোঁজখবর নিচ্ছে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না।”
ঢাকা/রিটন/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ৫৫ ল খ ট ক
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।