দেশে ধান-চাল উৎপাদনের অন্যতম প্রধান জেলা নওগাঁয় কেজিতে ১ থেকে ৩ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে চালের দাম। মিলগেটে জিরাশাইল ও মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭৩ থেকে ৭৫ টাকা দরে। কাটারিভোগ চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজিতে। পাইকারিতে চালের দাম বাড়ায় স্থানীয় খুচরা বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতি মণে ধানের দাম ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এ কারণে চালের দামও বাড়ছে। তাঁদের ভাষ্য, নওগাঁয় চালের দাম বাড়লে বা কমলে এর প্রভাব পড়ে দেশের অন্যান্য বাজারেও।

জেলার সবচেয়ে বড় চালের মোকাম শহরের আলুপট্টি এলাকার কয়েকটি আড়তে গিয়ে জানা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে বিভিন্ন মিলগেটে ৫০ কেজির বস্তাপ্রতি চালের দাম ৫০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এতে কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে এক থেকে তিন টাকা।

এক সপ্তাহ আগে মানভেদে প্রতি বস্তা জিরাশাইল চালের দাম ছিল ৩ হাজার ৪৫০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৬০০ থেকে ৩ হাজার ৭০০ টাকায়। কাটারিভোগ চালের দাম এক সপ্তাহ আগে ছিল ৩ হাজার ১০০ টাকা। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার ৪০০ টাকা দরে।

এ ছাড়া মোটা চাল হিসেবে পরিচিত বিআর-২৮, শুভলতা, পারিজা ও মোয়াজ্জেম চালের দামও বস্তাপ্রতি ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এর প্রভাব খুচরা বাজারেও পড়েছে। এখন খুচরায় প্রতি কেজি বিআর-২৮, পারিজা, শুভলতা ও মোয়াজ্জেম চাল মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা দরে। সরু চালের মধ্যে জিরাশাইলের কেজি ৭২ থেকে ৭৪ টাকা এবং মিনিকেট ৭৪ থেকে ৭৫ টাকা। কাটারিভোগ বিক্রি হচ্ছে ৬৮ থেকে ৭২ টাকা কেজিতে।

নওগাঁ শহরের গোস্তহাটির মোড় এলাকার পৌর ক্ষুদ্র চাল বাজারের লক্ষ্মী চাল ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী উত্তম সরকার বলেন, ‘পাইকারিতে বস্তাপ্রতি সব ধরনের চালের দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তাতে পাইকারিতে ৭০ টাকা কেজি দরে জিরাশাইল চাল কিনে খুচরায় আমাদের ৭২-৭৩ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হচ্ছে। ঈদের আগে খুচরায় এই চালের দাম ছিল ৬৫ থেকে ৬৮ টাকা। কাটারিভোগ চালের দাম আগে ছিল ৬৪ টাকা কেজি। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭২ টাকা কেজি দরে। পাশাপাশি অন্যান্য চালের দামও কেজিতে ১ থেকে ৩ টাকা বেড়েছে।’

নওগাঁ জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন, নওগাঁয় বোরো মৌসুমে প্রায় ৯০ শতাংশ জমিতে জিরাশাইল (জিরা) ও কাটারিভোগ ধান চাষ হয়ে থাকে। গত এক সপ্তাহে এই ধরনের ধানের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। এক সপ্তাহ আগে প্রতি মণ (৪০ কেজি) জিরা ধানের দাম ছিল ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫৫০ টাকা। সেই ধান এখন বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৬৫০ থেকে ১ হাজার ৬৭৫ টাকা মণ দরে। অন্যদিকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে কাটারি ধানের দাম প্রতি মণে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা বেড়ে এখন ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনায় বিএনপি নেতার অফিসে বোমা-গুলি, শিক্ষক নিহত

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) আইটি গেট সংলগ্ন বিএনপি নেতার দলীয় কার্যালয়ে গুলি ও বোমা হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় ইমদাদুল নামে এক শিক্ষক নিহত হয়েছেন। যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউপি সদস্য মামুন শেখ (৪৫) ও মিজানুর রহমান নামে দুই ব্যক্তি আহত হয়েছেন।

রবিবার (২ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে ঘটনাটি ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করে আড়ংঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ খায়রুল বাশার।

আরো পড়ুন:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিপক্ষের হামলা: গুলিবিদ্ধ যুবকের মৃত্যু

নবীনগরে গুলিবিদ্ধ ৩

তিনি বলেন, ‍“ঘটনাস্থল থেকে একটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। তার ভেতর ভুসি রাখা ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, এর ভেতরেই বোমা নিয়ে আসা হয়েছিল।” পেশাদার কিলারের সম্পৃক্তা থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন ওসি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ৯টার দিকে বিএনপি নেতা মামুন শেখ স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে অফিসে বসেছিলেন। এ সময় সন্ত্রাসীরা অফিস লক্ষ্য করে পরপর দুইটি বোমা ও চার রাউন্ড গুলি ছুড়ে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায়। পরে নেতাকর্মী ও স্বজনরা গুরুতর আহত মামুনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

খানজাহান আলী থানা বিএনপির সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান বলেন, “যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন শেখকে সন্ত্রাসীরা গুলি করেছে। তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।”

যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মীর শওকত হোসেন হিট্টু বলেন, “ঘটনার সময় আমি ফুলবাড়িগেটে ছিলাম। শুনেছি, আমাদের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনকে সন্ত্রাসীরা গুলি করেছে। তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।”

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ