লাকসামে ‘প্রেমিককে’ খুঁজতে যাওয়া তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ৩
Published: 17th, June 2025 GMT
কুমিল্লার লাকসামে প্রেমিককে খুঁজতে গিয়ে এক তরুণী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এক অটোরিকশাচালক তরুণীর প্রেমিককে খুঁজতে সহায়তা করার কথা বলে কয়েকজন বখাটের হাতে তুলে দেন বলে অভিযোগ। পরে তাঁকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। বিষয়টি জানার পর গতকাল সোমবার রাতে অভিযুক্ত অটোরিকশাচালকসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ।
এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার লাকসাম থানায় একটি মামলা করেছেন ভুক্তভোগী তরুণীর (২০) মামাতো ভাই। সেই মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন লাকসাম পৌর এলাকার বাসিন্দা অটোরিকশাচালক এনায়েত রহমান ওরফে সাক্কু এবং সাগর ও স্বপন মিয়া নামের দুই ব্যক্তি। তাঁরা ৯ জুন লাকসাম রেলওয়ে জংশনের দক্ষিণ পাশের একটি পরিত্যক্ত টিনের ঘরে তুলে নিয়ে ওই তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। ভুক্তভোগী পাশের মনোহরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। তিনি লাকসামের একটি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন।
লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজনীন সুলতানা প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। ভুক্তভোগী তরুণীর বরাতে ওসি নাজনীন সুলতানা জানান, ওই তরুণীর সঙ্গে এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। ৮ জুন তরুণী তাঁর কথিত প্রেমিককে খুঁজতে লাকসাম বাজারে যান। সেখানে অটোরিকশাচালক এনায়েত রহমানের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। এনায়েত তাঁকে লাকসাম শহরে তাঁর প্রেমিককে খুঁজে দেওয়ার আশ্বাস দেন। খোঁজাখুঁজির পর না পেলে ওই দিন রাত ১০টার দিকে তরুণী লাকসাম রেলওয়ে জংশনের দক্ষিণ পাশে প্ল্যাটফর্মে গিয়ে বসেন। তখন রেলস্টেশনের কিছু বখাটে তাঁকে উত্ত্যক্ত করতে থাকলে এনায়েত তাঁকে স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেন। এরপর বখাটেরা তাঁদের দুজনকে পরদিন ভোর সাড়ে চারটা পর্যন্ত স্টেশনে বসিয়ে রাখেন। এর মধ্যে এনায়েত ওই তরুণীকে স্ত্রী নয় বলে বখাটেদের হাতে তুলে দিতে চান। একপর্যায়ে বখাটেদের সঙ্গে যোগসাজশ করে তরুণীকে লাকসাম রেলস্টেশন থেকে মারতে মারতে রেললাইনের পূর্ব পাশের পরিত্যক্ত একটি টিনের ঘরে নিয়ে যান। সেখানে এনায়েতের সহায়তায় খোরশেদ, সাগর ও স্বপন নামের তিন বখাটে দলবদ্ধ ধর্ষণ করেন। পরে ভুক্তভোগী রেললাইন পার হয়ে একটি অটোতে করে তাঁর কর্মস্থলে যান। সর্বশেষ পরিবারের সহায়তায় সোমবার রাতে থানায় এসে বিষয়টি বিস্তারিত জানান।
ওসি নাজনীন সুলতানা বলেন, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। পরে রাতে লাকসাম থানা-পুলিশ অভিযান চালিয়ে এনায়েত, সাগর ও স্বপনকে আটক করা হয়। অভিযুক্ত অন্য ব্যক্তিকে ধরার চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আজ মামলা হয়েছে। সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তিনজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ভুক্তভোগীকে চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: তর ণ ক এন য় ত তর ণ র
এছাড়াও পড়ুন:
ময়মনসিংহে ছিনতাইয়ের শিকার ব্যাংক কর্মকর্তা, ৯৯৯–এ ফোন পেয়ে ৩ জনকে আটক
ময়মনসিংহ নগরীতে ছিনতাইকারীদের কবলে পড়া এক ব্যাংক কর্মকর্তাকে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ ফোন পেয়ে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এ সময় উদ্ধার করা হয়েছে ছিনতাই হওয়া মুঠোফোন ও ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার করে তোলা টাকা।
ভুক্তভোগী ব্যাংক কর্মকর্তা মনিরুল হক (৩১) নগরের ছোট বাজার এলাকার আল–আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে কর্মরত। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার বাসিন্দা মোজাম্মেল হকের ছেলে।
পুলিশ জানায়, গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ব্যাংকের কাজ শেষে মাসকান্দা এলাকায় যান মনিরুল হক। কেনাকাটা শেষে বাসায় ফেরার সময় রাত সাড়ে আটটার দিকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা থেকে নামার পর একটি দল তাঁর পথরোধ করে। ছিনতাইকারীরা তাঁকে চাকু দেখিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে সঙ্গে থাকা জিনিসপত্র দিতে বলে। প্রথমে তিনি রাজি না হলে মারধর শুরু করে। পরে সঙ্গে থাকা আড়াই হাজার টাকা, মুঠোফোন, মানিব্যাগ ও এতে থাকা ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ছিনিয়ে নেয়।
মনিরুল হক বলেন, ‘ভয় দেখিয়ে ছিনতাইকারী দলের সদস্যরা ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ডের পাসওয়ার্ডও নিয়ে যায়। একপর্যায়ে আমি চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে ছিনতাইকারীরা চলে যায়। পরে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ ফোন দিলে টহলরত পুলিশ আমার কাছে এসে ঘটনার বিস্তারিত শোনে।’
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নগরের বলাশপুর নয়াপাড়া এলাকার শরাফ উদ্দিনের ছেলে তানভির হোসেন ওরফে অন্তর (২৫), শম্ভুগঞ্জের রাঘবপুর এলাকার আদাস আলীর ছেলে মো. মিলন (২৫) ও একই গ্রামের সাদিকুল ইসলামের ছেলে সাব্বির আহমেদকে আটক করা হয়েছে। গতকাল দিবাগত রাত ১২টা থেকে দেড়টার মধ্যে তাঁদের নিজ নিজ এলাকা থেকে আটক করা হয়। পুলিশের ভাষ্য, তানভির হোসেনের বিরুদ্ধে দুটি ডাকাতি মামলা ও মিলনের বিরুদ্ধে একটি ছিনতাইয়ের মামলার তথ্য আছে থানায়।
ছিনতাইয়ের শিকার মনিরুল হক বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয়ের আরও দুই থেকে তিনজনকে আসামি করে মামলা করেছেন।
নগরের ৩ নম্বর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবুল হোসেন বলেন, ব্যাংক কর্মকর্তার ছিনতাইকারীর কবলে পড়ার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ওই এলাকায় ছিনতাই কাজে জড়িত ব্যক্তিদের ছবি দেখালে ব্যাংক কর্মকর্তা দুজনকে চিনতে পারেন। পরে একে একে তিনজনকে আটক করা হয়। এ চক্রের আরও সদস্য আছে। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে ছিনতাই, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফিরোজ হোসেন বলেন, থানায় মামলা শেষে আজ মঙ্গলবার পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে ছিনতাইকারী দলের তিন সদস্যকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।