আইওএস অপারেটিং সিস্টেমে থাকা ত্রুটি কাজে লাগিয়ে ইউরোপে বসবাসকারী দুই সাংবাদিকের আইফোনে স্পাইওয়্যার হামলা চালিয়েছে একদল হ্যাকার। আইওএসের ত্রুটি কাজে লাগিয়ে সাইবার হামলা চালানোর বিষয়টি স্বীকার করলেও গত ফেব্রুয়ারি মাসে আইওএস ১৮.৩.১ সংস্করণে ত্রুটিটির সমাধান উন্মুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে অ্যাপল।

কানাডাভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সিটিজেন ল্যাব এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, স্পাইওয়্যার হামলায় আইওএসে থাকা একটি ত্রুটি কাজে লাগানো হয়েছে। ত্রুটিটি আইক্লাউড লিংকের মাধ্যমে শেয়ার করা ছবি বা ভিডিও আইফোনে দেখার উপযোগী করার সময় সক্রিয় হয়। গত ১০ ফেব্রুয়ারি আইওএস ১৮.

৩.১ সংস্করণে ত্রুটিটির সমাধান করা হলেও এ বিষয়ে ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তাবিষয়ক কোনো পরামর্শে দেয়নি অ্যাপল। আইওএসের পুরোনো সংস্করণে নিরাপত্তা ত্রুটিটি থেকে যাওয়ায় এ হামলা চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সিটিজেন ল্যাবের তথ্যমতে, নিরাপত্তা ত্রুটি সমাধানের প্রায় চার মাস পর গত বৃহস্পতিবার অ্যাপল তাদের নিরাপত্তা পরামর্শ হালনাগাদ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘আইক্লাউড লিংকের মাধ্যমে পাঠানো কোনো ছবি বা ভিডিও প্রসেস করার সময় লজিকজনিত একটি ত্রুটি দেখা যায়। একটি অত্যন্ত জটিল এবং লক্ষ্যভিত্তিক হামলায় এই ত্রুটি ব্যবহার করা হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।’ তবে কেন এত দিন এই ত্রুটির বিষয়টি গোপন রাখা হয়েছিল, তা স্পষ্ট করে জানায়নি অ্যাপল।

প্যারাগনের তৈরি এই স্পাইওয়্যার নিয়ে বিতর্ক শুরু হয় গত জানুয়ারি মাসে। সে সময় হোয়াটসঅ্যাপ প্রায় ৯০ জন সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী ও গবেষককে সতর্কবার্তা পাঠিয়ে জানিয়েছিল, তাঁদের ব্যবহৃত আইফোনে প্যারাগনের তৈরি স্পাইওয়্যার প্রবেশ করানো হয়েছে। এরপর এপ্রিলের শেষ দিকে অ্যাপলও শতাধিক আইফোন ব্যবহারকারীকে সতর্ক করে জানিয়েছিল, তাঁরা স্পাইওয়্যার হামলার লক্ষ্যে পরিণত হয়েছেন।

সূত্র: টেক ক্র্যাঞ্চ

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অ য পল ব যবহ আইফ ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘বউ পেটানো’ অভিনেতার দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন

সৈয়দা আলিজা সুলতানের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেতা ফিরোজ খান। তাদের এই সংসার ভেঙে গেছে। আলিজা অভিযোগ করেছিলেন, তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন ফিরোজ। কেবল তাই নয়, শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ছবিও প্রকাশ করেছিলেন। এরপর তোপের মুখে পড়েন ফিরোজ খান। নেটিজেনদের অনেকে তাকে ‘বউ পেটানো’ অভিনেতার তকমাও দেন।

প্রথম সংসার ভাঙার প্রায় দুই বছর পর ডা. জয়নবের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ফিরোজ খান। এদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন ছড়িয়েছে। মূলত, বিনোদনভিত্তিক একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ডা. জয়নবের ইনস্টাগ্রাম পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করা হয়। তারপরই শুরু হয় ফিরোজ খানের সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদের গুঞ্জন। দ্রুত সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে জয়নবের অভিযোগের স্ক্রিনশট। 

ডা. জয়নব কথিত এই নোটে বলেন, “আমি আমার সহনসীমার শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি। অবিরাম মানসিক চাপ ও উদ্বেগে ক্লান্ত। এমন একজন মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে আছি, যে আমাকে বিশ্বাস করে না। আমি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমি এখন ক্লান্ত। প্রতিটি কথোপকথন একটা লড়াইয়ের মতো লাগে, প্রতিটি মতবিরোধ যেন যুদ্ধ। এমন আচরণের শিকার হয়ে আমি ক্লান্ত। আমি যখন তাকে কিছু বলি, সে আমার উপর রাগ ঝাড়ে।”

স্ত্রী জয়নবের সঙ্গে ফিরোজ খান

সুখ স্মৃতিগুলো কষ্টে ঢাকা পড়ে গিয়েছে। এমন মন্তব্য করে জয়নব বলেন, “সত্যি বলতে, আমরা একসঙ্গে যে স্মৃতিগুলো তৈরি করেছিলাম, তা এখন কষ্ট ও আঘাতে ঢাকা পড়ে গেছে। আমি অসংখ্যবার তাকে ক্ষমা করেছি। কিন্তু সেই ক্ষতগুলো কখনো পুরোপুরি সারেনি। বুঝতে পারছি, আমি এক ধরণের মানসিক অস্থিরতার মধ্যে বাস করছি, একটা সম্পর্কে আটকে আছি, যা আমার জীবনের শক্তি শুষে নিচ্ছে। আমি জানি, আমি এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। আমি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও কোমলতার যোগ্য। সবকিছু ঠিক আছে—আমি আর এই ভান করতে চাই না।”

ডিভোর্সের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে জয়নব বলেন “এমন বিষাক্ত একটা সম্পর্কের জন্য আমি আমার সুখ ত্যাগ করেছি। আমি এখন নিজের জন্য, নিজের মানসিক সুস্থতার জন্য দাঁড়াচ্ছি। বেদনা ও কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে, আমি আমার জীবনের এই অধ্যায় (বিবাহিত জীবন) শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি ডিভোর্স নিচ্ছি। কারণ আমি জানি, এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। জীবনের নতুন অধ্যায় শুরুর জন্য আমি প্রস্তুত, যেখানে আমাকে মূল্য দেওয়া হবে, সম্মান করা হবে, ভালোবাসা হবে।”

জয়নবের এই ‘ডিভোর্স নোট’ নিয়ে যখন জোর চর্চা চলছে, তখন মুখে কুলুপ এঁটেছেন ফিরোজ খান। তবে এর আগে ফিরোজ খানের অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দেওয়া একটি পোস্টে দেখা যায়। তাতে জয়নবের বিরুদ্ধে ‘ব্ল্যাকমেইল’ ও ‘মানসিক চাপের’ অভিযোগ তোলেন। যদিও পরবর্তীতে পোস্টটি মুছে ফেলা হয়। পাশাপাশি এই অভিনেতা জানান, তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছিল।

ডা. জয়নব

তবে সংসার ভাঙার গুঞ্জনে সরাসরি কোনো বক্তব্য দেননি ফিরোজ খান কিংবা তার স্ত্রী ডা. জয়নব। তবে বিনোদনভিত্তিক যে পেজ থেকে জয়নবের ‘ডিভোস নোট’ ছড়ানো হয়েছে, সেই পোস্টে মন্তব্য করেছেন তিনি। তাতে জয়নব লেখেন, “এই ধরনের পেজগুলো আনফলো করুন অথবা রিপোর্ট করুন। এই ধরনের পেজ থেকে ভুয়া খবর ছড়িয়ে মানুষকে বিরক্ত করা হচ্ছে। সত্যি বলছি, আমি জানি না কীভাবে তারা আমার স্টোরিতে পোস্টটি করার অ্যাকসেস পেয়েছে। এই পোস্ট আমি কখনো করিনি।”

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম স্ত্রী সৈয়দ আলিজা সুলতানের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় ফিরোজ খানের। এ সংসারে সুলতান খান ও ফাতিমা খান নামে দুই সন্তান রয়েছে। বর্তমানে দুই সন্তানের দায়িত্ব নিয়ে আদালতে মামলা লড়ছেন এই প্রাক্তন দম্পতি। ২০২৪ সালে ডা. জয়নবকে বিয়ে করেন ফিরোজ খান।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ