ভারত-কানাডা সম্পর্ক স্বাভাবিক হচ্ছে, হাইকমিশনার নিয়োগের সিদ্ধান্ত
Published: 18th, June 2025 GMT
দীর্ঘ ২০ মাস পর ভারত ও কানাডা দুই দেশই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক স্বাভাবিক করে তোলার পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিল। জি–৭–এর আসরে দুই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মার্ক কার্নির সাক্ষাৎকারের পর ঠিক হয়েছে, দুই দেশই হাইকমিশনারদের নিয়োগ করবে। স্বাভাবিক করে তুলবে সম্পর্ক।
জি–৭ শীর্ষ সম্মেলনের অবসরে গতকাল মঙ্গলবার দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক হয়। তারপর কানাডার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে প্রচারিত এক বিবৃতিতে এ খবর জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই দেশই ধীরে ধীরে সম্পর্ক স্থিতিশীল করে তোলার দিকে এগিয়ে যাবে।
ওই বৈঠকের পর একই কথা বলেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি। তিনি জানান, সম্পর্ক স্বাভাবিক করে তোলার প্রথম পদক্ষেপ হবে দুই দেশে হাইকমিশনার নিযুক্ত করা। দুই দেশই দ্রুত সেই সিদ্ধান্ত নেবে।
দুই বছর আগে ২০২৩ সালে কানাডার শিখ নাগরিক হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যার পর থেকে ভারত–কানাডা সম্পর্কের অবনতি ঘটতে থাকে। কানাডার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সে দেশের সংসদে দাঁড়িয়ে ওই হত্যাকাণ্ডের পেছনে ভারতের হাত থাকার সন্দেহের কথা জানিয়েছিলেন। গত বছর অক্টোবরে কানাডায় ভারতীয় হাইকমিশনার সঞ্জয় ভার্মাকে ফেরত পাঠানো হয়। ভারতও একই ব্যবস্থা নিয়েছিল। সেই থেকে দুই দেশেই কোনো হাইকমিশনার নেই। কূটনীতিক ও কর্মীর সংখ্যাও নগণ্য। হাইকমিশনের কাজ স্বাভাবিক করে তোলা যায়নি।
নিজ্জর ছিলেন স্বাধীন শিখ রাষ্ট্র খালিস্তানের অন্যতম প্রবক্তা ও নেতা। তাঁর হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা ভারত সরাসরি অস্বীকার করেছিল। কানাডাকে প্রমাণ দাখিল করতে বলেছিল। কানাডার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর অভিযোগ, বহু প্রমাণ দেওয়া সত্ত্বেও ভারত তদন্তে সহযোগিতায় রাজি হয়নি। ভারতের অভিযোগ, তাদের দাবি মতো কানাডা অভিযোগের সমর্থনে কোনো প্রমাণই দাখিল করেনি।
ট্রুডো সরকার সেই সময় ছিল সংখ্যালঘু। সরকারে টিকে থাকার জন্য শিখ সমর্থনের প্রয়োজন ছিল। কানাডায় বসবাসরত শিখদের একটা অংশ স্বাধীন খালিস্তানপন্থী। ভারতের অভিযোগ, ট্রুডো সরকার তাদের ভারতবিরোধী কাজে বাধা দেয়নি; বরং তাদের আন্দোলনে মদদ দিত। ট্রুডোর যুক্তি, শিখদের গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অধিকার আছে। সরকার তাতে বাধা দিতে পারে না।
জি–৭ শীর্ষ সম্মেলনে ভারত যোগ দিচ্ছে ২০১৮ সাল থেকে। এবার কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি শুরুতে ভারতকে আমন্ত্রণ জানাননি। শেষ মুহূর্তে তিনি ফোন করেন নরেন্দ্র মোদিকে এবং সম্মেলনে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানান। মোদি তা গ্রহণ করেন। গতকাল দুই নেতার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে বৈঠকের পর পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, দুই নেতা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধি নিয়েও আলোচনা করেছেন। বন্ধ থাকা বাণিজ্যসংক্রান্ত আলোচনা দ্রুত শুরুর ওপরেও দুই নেতা জোর দিয়েছেন। দুই নেতাই স্বীকার করেন, মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কই প্রকৃত বন্ধন। তা যাতে ব্যাহত না হয়, সে জন্য দুই দেশই যত্নবান হবে বলে ঠিক হয়েছে।
দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর মোদি বলেন, চমৎকার পরিবেশে তাঁরা সব বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। দুই দেশের সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দুই দেশের বন্ধুত্বকে গতিশীল করে তুলতে আমরা দুজনেই অপেক্ষায় রয়েছি।’ কার্নিও একই সুরে জানান, দুই দেশ একযোগে যেসব বিষয়ের মোকাবিলা করবে, ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ’ তার অন্যতম।
কার্নির কার্যালয় থেকে প্রচারিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পারস্পরিক শ্রদ্ধা, আইনের শাসন, সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার নীতির প্রতি অঙ্গীকারের ভিত্তিতে দুই দেশ সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
দুই নেতার সাক্ষাৎকারের পর মনে হচ্ছে, সম্পর্কের জমাট বাঁধা বরফ এখন দ্রুত গলার অপেক্ষায়। জি–৭–এর আসরে শেষ মুহূর্তে ভারতকে আমন্ত্রণ দুই দেশের সম্পর্কে গত ২০ মাসের আড়ষ্টতা কাটিয়ে তুলতে সহায়ক হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ব ভ ব ক কর সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বিপিএলে দল নিতে চান আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগের ‘রেড ফ্ল্যাগ’ তালিকায় থাকারাও
আসন্ন দ্বাদশ বিপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজি নিতে ১১টি প্রতিষ্ঠান আগ্রহ দেখালেও প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করতে না পারায় তিনটি প্রতিষ্ঠানের আগ্রহ বাতিল করেছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। বাকি আটটি প্রতিষ্ঠানের সব যে ফ্র্যাঞ্চাইজি পাবে, তা–ও নয়। এক-দুটি প্রতিষ্ঠানে থাকা মালিকদের মধ্যে দু-একজন তো আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগের ‘রেড ফ্ল্যাগ’ধারী বলেও জানা গেছে।
বিপিএলের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশাল