জুলাই অভ্যুত্থানে নিহতদের স্মরণে তৈরি হবে ‘গণমিনার’
Published: 18th, June 2025 GMT
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত গণপ্রতিরোধ ও আত্মত্যাগের স্মরণে নাগরিক উদ্যোগে রাজধানীতে নির্মাণ করা হবে ‘গণমিনার’। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গণমাধ্যমকর্মী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ বিভিন্ন পর্যায়ের বিশিষ্ট নাগরিকদের সমন্বয়ে ‘গণমিনার বাস্তবায়ন কমিটি’ গঠিত হয়েছে। এ উপলক্ষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে কমিটির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হবে। রাজধানীর ঠিক কোথায় এই মিনার নির্মাণ করা হবে তা জানানো হবে সংবাদ সম্মেলনে।
কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, গণমিনার বাস্তবায়ন কমিটিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে যুক্ত হচ্ছেন। অন্তর্ভুক্তিমূলক এই নাগরিক উদ্যোগটির লক্ষ্য, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান এবং শহীদদের স্মৃতিকে স্মারক রূপে সংরক্ষণ করা; যাতে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে মানুষের আত্মত্যাগ ও প্রতিরোধের চেতনা সঞ্চারিত হয়। জুলাই ২০২৪ ছিল একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যেখানে আপামর জনগণ স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। হাজার হাজার মানুষ নির্যাতিত হয়েছে, আহত হয়েছে, প্রাণ হারিয়েছে। জুলাই গণপ্রতিরোধে জাতির প্রতিবাদী সত্তার স্ফুরণ ঘটে। সেই সত্যকে স্মরণে রাখতে ‘গণমিনার বাস্তবায়ন কমিটি’ একটি স্থায়ী স্মারক নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
কমিটি আরও জানায়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এরইমধ্যে গণমিনার নির্মাণের জন্য জমি বরাদ্দ, অর্থ ও প্রকৌশল সহযোগিতার বিষয়ে সম্মত হয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানে জাতিসংঘ স্বীকৃত ১৪০০ শহীদের নাম ও পরিচিতি গণমিনারে খোদাই করে সংরক্ষণ করা হবে। এছাড়া এই ভূখণ্ডে গত ২৫০ বছরের প্রতিরোধ ও লড়াইয়ের ইতিহাসের চিত্রও গণমিনারে তুলে ধরার পরিকল্পনা রয়েছে। এই গণমিনার হবে এমন এক স্মরণস্থল, যা রাজনৈতিক বিভাজন অতিক্রম করে সব মত ও পথের মানুষের সম্মিলিত গণউদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হবে। গণমিনার বাস্তবায়নে গণমানুষের সম্পৃক্ততার লক্ষ্যে গণচাঁদা সংগ্রহেরও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ল ই অভ য ত থ ন শহ দ ম ন র ত হয় ছ
এছাড়াও পড়ুন:
গণঅভ্যুত্থানে কুবি শিক্ষার্থীদের অবদানের স্বীকৃতি, ১১ জুলাইকে ‘প্রথম প্রতিরোধ দিবস’ ঘোষণা
২০২৪ সালের ১১ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীদের বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে দিনটিকে ‘জুলাই আন্দোলনের প্রথম প্রতিরোধ দিবস’ ঘোষণা করেছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
শুক্রবার বিকালে কুবিতে উন্মুক্ত মঞ্চে গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার প্রথম প্রতিরোধ দিবস-১১ জুলাই শীর্ষক স্মৃতির মিনার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যের সময় তিনি এ ঘোষণা দেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কুবির উপাচার্য ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন কুবির উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ১১ জুলাই যে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল, সেই প্রতিরোধ আন্দোলনকারীদের সাহস সঞ্চার করেছিল। আজ সেই দিন (১১ জুলাই) আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দেয় স্বৈরাচারী হাসিনার সরকার। সেই সহিংসতার শুরু হয় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বিকাল তিনটার দিকে শাহবাগে আমাদের কর্মসূচি ছিল এবং একইসাথে সারাদেশেও কর্মসূচি ছিল। আমরা যখন জড়ো হতে শুরু করি তখনই আমাদের কাছে খবর আসে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা হয়েছে। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর কেউ বিচলিত হয়নি বরং সবাই আরও বেশি ক্ষোভে ফুসে উঠেছিল। আরও বেশি সংখ্যক মানুষ আমাদের সাথে যুক্ত হতে থাকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা সেদিন ব্লকেড কর্মসূচি সফলই করেননি, রাত ১১টা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছিলেন। আপনাদের সেই সাহসিকতা ও প্রতিরোধ কোটা সংস্কার আন্দোলনে সারাদেশে আরও আশা ও সাহস সঞ্চার করে। আমরা যে একটা কথা বলতাম ‘বাঁধা দিলে বাধবে লড়াই’ এ কথার সত্যতা আপনারা প্রমাণ করেছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় আন্দোলন আরো বেগবান হয়। স্বৈরাচারী হাসিনার শাসন থেকে বাংলাদেশের মানুষকে মুক্তি দেয়। আজকের এই দিনকে (১১ জুলাই) আমি প্রথম প্রতিরোধ দিবস ঘোষণা করছি। আপনাদের প্রতিরোধকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ‘স্মৃতির মিনার’ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে, তাকে সাধুবাদ জানাই। এছাড়াও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যে স্থানটিতে আপনারা ব্লকেড করে বিজয় এনেছিলেন সরকারের পক্ষ থেকে সেখানে ‘প্রতিরোধ মিনার’ স্থাপন করা হবে।
এ সময় জুলাই অভ্যুত্থানে অবদান রাখায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তিনটি বাস উপহারের ঘোষণা দেন উপদেষ্টা। পরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত এবং শহীদদের স্মরণে নির্মিত ‘জুলাই মিনার’ এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।