আনিসুল হক, মোশাররফ হোসেন, বাবুল সরদার রিমান্ডে
Published: 18th, June 2025 GMT
রাজধানীর শাহবাগ ও পল্টন মডেল থানার পৃথক দুই মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এবং বাংলাদেশ পিপলস পার্টির (বিপিপি) চেয়ারম্যান বাবুল সরদার চাখারীর রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম. মিজবাহ উর রহমানের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
এদিন তাদের আদালতে হাজির করা হয়। জুট ব্যবসায়ী মো.
অপরদিকে গণঅধিকার পরিষদের কর্মী বদরুল ইসলাম সায়মনকে হত্যাচেষ্টা মামলায় মোশাররফ হোসেন ও বাবুল সরদার চাখারীকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন পুলিশের উপপরিদর্শক বিমান তরফদার। শুনানি শেষে আদালত আনিসুলের পাঁচদিন ও অপর দু’জনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
হত্যা মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জুলাই আন্দোলনে গত বছরের ৫ আগস্ট শাহবাগ থানার চানখারপুল এলাকায় ছাত্র-জনতার সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নেন ক্ষুদ্র জুট ব্যবসায়ী মো. মনির। দুপুরে আসামিদের ছোড়া গুলিতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী ১৪ মার্চ শাহবাগ হত্যা মামলা করেন।
হত্যাচেষ্টা মামলার সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর শেখ হাসিনা সরকারের গুম, খুন, নিপীড়ন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে সমাবেশ আয়োজন করা হয়। এতে বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদসহ অন্যান্য সমমনা রাজনৈতিক দল এই মহাসমাবেশের ডাক দেয়। এতে ভুক্তভোগী বদরুল ইসলাম সায়মন অংশ নেন। শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আসামিরা অতর্কিতভাবে হামলা করে। এ সময় আসামিদের ছোড়া এলোপাতাড়ি গুলিতে বাদী গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ ঘটনায় ২৯ এপ্রিল ভুক্তভোগী গণঅধিকার পরিষদের কর্মী বদরুল ইসলাম সায়মন বাদী হয়ে রাজধানীর পল্টন মডেল থানা হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। এতে শেখ হাসিনাসহ ২৪৫ জনকে আসামি করা হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ হব গ
এছাড়াও পড়ুন:
লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন নয়: নুর
গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, দেশে এখনও কোনো কিছুরই পরিবর্তন হয়নি। তাই সময় যতদিন লাগে সরকার নিবেন। কিন্তু লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন হবে না।
পটুয়াখালী জেলা গণঅধিকার পরিষদের উদ্যোগে সোমবার রাতে শহরের নতুন বাজারস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এ কথা বলেন।
নুরুল হক নুর বলেন, একমাত্র বিএনপি ছাড়া আর কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচন নিয়ে জোরালো কথা বলছে না। কারণ তারা আমার আগেই টের পাইছে এলাকায় এখন থাকতে পারছেন না উৎপাতে। আমি টের পাইছি এলাকায় এসে। তাই বলছি প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সামনে নির্বাচনের পক্ষে জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলাম, আগামীকাল ঢাকায় গিয়ে তার কাছে ক্ষমা চেয়ে বলবো, ‘স্যার আপনি যখন উপযুক্ত পরিবেশ মনে করবেন এবং যখন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হবে, সবাই নির্বিঘ্নে সভা-সমাবেশ করতে পারবে, এলাকায় থাকতে পারবে, হুমকি-ধমকি থাকবে না, রাজনৈতিক আধিপত্যের সংস্কৃতি পরিবর্তন হবে, তখনই আপনি নির্বাচনী রোডম্যাপ দিবেন।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন নিয়ে আমরাও জোরালো কথা বলেছিলাম। কিন্তু এলাকায় আসিনিতো এ জন্য টের পাইনি যে, এই রকম কেয়ামত শুরু হয়ে গেছে। আমার সঙ্গে যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা আরেকটি কেয়ামত। পটুয়াখালী ও বরিশাল থেকে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে গলাচিপার বকুলবাড়িয়া ও চিকনিকান্দি এলাকার রাস্তায় বড় বড় গাছ ফেলে রামদা, হকিস্টিকসহ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছিল। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কোনো ভূমিকা নিতে পারেননি।’
গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, তারা আমাদের পিঠের চামড়া তুলে নেওয়ার শ্লোগান দেয়। তাইলে আসেন ভাইয়েরা আমরা আছি চামড়া তুলতে আসেন। আপনারা চামড়া তুলতে আসবেন আর আমরা কি ললিপপ চুষবো? সাবধান হয়ে যান। অনেক ফাউল কথা বলেছেন, কিন্তু আমরা ফাউল কথা বলি না। আমরা ফুটবল না, আমরা প্লেয়ার। আমরাও খেলতে জানি। আমরা খেলি এবং আমরা খেলবো। তবে, আমরা কোনো ফাউল খেলবো না।
নুর বলেন, পটুয়াখালীবাসীকে বলবো এই ধুরন্ধর ডিসি যদি থাকে; মানুষের ক্ষতি ছাড়া ভালো হবে না। ইতোমধ্যে আপনারা দেখেছেন টাকার বিনিময়ে সবকিছু তার মতো করে করেছেন। তাই এই ডিসিকে পটুয়াখালীতে রাখা যাবে না। উপদেষ্টাদের বলবো, জনপ্রশাসন সচিবকে বলবো- তারা এই ডিসিকে না সরালে আমরা সরিয়ে দেব।
তিনি আরও বলেন, এই ডিসি সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন এবং নিজে রাজনীতিতে নেমেছেন। তাই বলছি, রাজনীতিতে নামছেন ভালো। ডিসিগিরি ছেড়ে রাজনৈতিক মাঠে আসেন, দেখা হবে রাজপথে এবং কথা হবে শ্লোগান–শ্লোগানে।
ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, তালাক দেওয়া বউকে কেউ ঘরে নেয় না। আমরা এই ডিসিকে তালাক দিয়েছি। আমি জনপ্রশাসন সচিবকে বলবো- এই ডিসিকে সরাবেন, অন্যথায় পটুয়াখালীবাসী ওনাকে বেইজ্জতি করে গাট্টিবস্তা গোল করে লঞ্চে তুলে দিবে। ৫ আগস্টের পরে যদি এ রকম দলবাজ প্রশাসন থাকে; তাহলে এই প্রশাসন দিয়ে কীভাবে নির্বাচন করবেন?
নাম উল্লেখ না করে একটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের উদ্দেশে ভিপি নুর বলেন, আওয়ামী লীগের পতন থেকে শিক্ষা নিন। আওয়ামী লীগের পরিণতি থেকে শিক্ষা নিন। আপনারা লুটপাট করবেন, ভোটের মাঠে জনগণ শিক্ষা দিয়ে দিবে। আগের দিন নেই এখন। সিল পিটিয়ে এমপি হবেন, উপজেলা চেয়ারম্যান-মেয়র হবেন, সেইদিন আর নেই। ডিসি-এসপিরা দিনের ভোট রাতে করে দিবেন, সেইদিন আর নেই। এ জন্যই বলছি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন হবে না।
জেলা গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক সৈয়দ নজরুল ইসলাম লিটুর সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় উচ্চতর পরিষদের সদস্য কৃষিবিদ শহিদুল ইসলাম ফাহিম, কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম, জেলা গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব মো. শাহ আলম সিকদার, জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি মো. মহসিন ইসলাম প্রমুখ।