ধর্ষণ মামলার বাদীকে বিয়ে করার অনুমতি পেলেন নোবেল
Published: 19th, June 2025 GMT
ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার গায়ক মাঈনুল আহসান নোবেলকে বিয়ে করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। নোবেলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট নাজমিন আক্তার বুধবার এই আদেশ দেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) ইলা মনি।
নোবেলের আইনজীবী জসীম উদ্দিন ও এসআই ইলা মনি প্রথম আলোকে জানান, ধর্ষণ মামলার বাদী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া আসামি নোবেলের পক্ষ থেকে আদালতে লিখিতভাবে বিয়ে করার জন্য অনুমতি চাওয়া হয়। বাদী ও আসামি উভয় পক্ষের সম্মতি সাপেক্ষে বিয়ের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে গত ২০ মে থেকে কারাগারে আছেন গায়ক নোবেল। সেদিন নোবেলের আইনজীবী আদালতের কাছে দাবি করেছিলেন, যে নারী ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন, তিনি তাঁর স্ত্রী। তিনি ধর্ষণ করেননি।
ওই নারীকে স্ত্রী হিসেবে দাবি করলেও আদালতে কাবিননামা জমা দিতে পারেননি নোবেলের আইনজীবী জসীম উদ্দিন। ওই নারীকে সাত মাস ধরে একটি বাসায় আটকে রেখে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয় নোবেলের বিরুদ্ধে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডেমরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো.
ডেমরা থানার পুলিশ আদালতকে লিখিতভাবে জানিয়েছিল, সাত বছর আগে (২০১৮) ফেসবুকে নোবেলের সঙ্গে ওই নারীর পরিচয় হয়। তিনি মোহাম্মদপুরের একটি ভাড়া বাসায় থেকে রাজধানীর একটি কলেজে স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষে পড়তেন। তাঁদের মধ্যে কথাবার্তা হতো। গত বছরের ১২ নভেম্বর ডেমরায় নোবেলের স্টুডিও দেখানোর জন্য ওই নারীকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত আটটার দিকে তিনি (নারী) বাসা থেকে বেরিয়ে যেতে চাইলে তাঁর মুঠোফোন কেড়ে নেন নোবেল। পরে মুঠোফোনটি ভেঙে ফেলেন। এরপর তাঁকে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের সেই ভিডিও ধারণ করেন নোবেল। পরে ভয় দেখিয়ে সাত মাস ধরে ওই বাসায় তাঁকে আটকে রাখা হয়।
পুলিশ আদালতকে আরও জানিয়েছিল, ওই নারীকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর তাঁর (নারী) মা–বাবা ঢাকায় আসেন। পরে ওই নারীকে নোবেলের বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়।
পরে ১৯ মে নোবেলের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী।
আরও পড়ুনসেই নারীকে স্ত্রী বলে দাবি নোবেলের, আদালত বললেন কাবিননামা এনেছেন?২০ মে ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ওই ন র ক
এছাড়াও পড়ুন:
আ.লীগ নেতা সাইফুলের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু
খুলনা সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলামের অবৈধ সম্পদের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ জন্য কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় খুলনার সহকারী পরিচালক রকিবুল ইসলামকে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছেন দুদকের এ কর্মকর্তা। এর আগে গত ৯ এপ্রিল সাইফুলের সম্পদ অনুসন্ধানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে জেলার প্রভাবশালী নেতাদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। জেলা আইনজীবী সমিতির মৃত সদস্যদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও হয়েছে।
সাইফুল একাধিকবার খুলনা চেম্বার অব কমার্সের সহসভাপতি, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি, ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিসহ বিভিন্ন ‘লাভজনক’ পদে দায়িত্ব পালন করেন। এসব প্রতিষ্ঠানের বিপুল টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
নৌপরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব থাকা অবস্থায় তাঁর বিরুদ্ধে সংগঠনের অর্থ দিয়ে ব্যক্তিগত প্রচার, লিফট কেনাসহ টাকা ব্যক্তিগত তহবিলে স্থানান্তর করে আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। আইনজীবী সমিতির উন্নয়নকাজেও মোটা অঙ্কের অর্থ নয়ছয়ের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
দুদক থেকে জানা গেছে, সাইফুলের মালিকানাধীন আমিন-সামিন শিপিং লাইনস, আমিন-সামিন কনস্ট্রাকশন, আমিন-সামিন ট্রেডিং, এসএ বিল্ডার্স, নয়ন এন্টারপ্রাইজ, ইয়াহিয়া কনস্ট্রাকশন, ইউনিক আইস অ্যান্ড ফুডস এবং মুনমুন ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামে আটটি কোম্পানি পাওয়া গেছে। এর বাইরে আর কোনো কোম্পানি আছে কিনা জানতে যৌথ মূলধন কোম্পানি পরিদপ্তরের নিবন্ধককে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া খুলনা সিটি করপোরেশনে সাইফুলের নামে অন্য কোনো ট্রেড লাইসেন্স রয়েছে কিনা– তা জানতে চেয়েছে দুদক। অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা রকিবুল ইসলাম বলেন, সাইফুল নৌপরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব থাকাকালে আয়-ব্যয়ের হিসাব, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি থাকা অবস্থায় বিভিন্ন খাতের আয়-ব্যয়ের রেকর্ড চাওয়া হয়েছে। বিশেষ করে কল্যাণ তহবিল, ভবন নির্মাণ ও বই কেনা বাবদ প্রাপ্ত টাকার ব্যয় বিবরণী, বিল-ভাউচার চাওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্টদের কাছে।
দুদকের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, আপাতত সাইফুলের নামে পাঁচটি নৌযানের (কার্গো) তথ্য পাওয়া গেছে। তাঁর নামে আর কোনো কার্গো বা ছোট জাহাজ রয়েছে কিনা– জানতে নৌপরিবহন অধিদপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাঁর নামে দেশের কোথায় কোথায় জমি, ফ্ল্যাট ও প্লট রয়েছে এবং ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কী পরিমাণ অর্থ জমা রয়েছে, সে তথ্যেরও অনুসন্ধান চলছে।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর থেকে আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুল ইসলাম আত্মগোপনে রয়েছেন। ফলে এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।