গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর ট্যাঙ্ক ও বিমান হামলায় গত দু’দিনে অন্তত ১৪৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে অন্তত ৭০ জনের প্রাণ গেছে ত্রাণ সহায়তা কেন্দ্রে খাবার নিতে গিয়ে। এসব ঘটনাকে ‘সহায়তার নামে গণহত্যা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বিশ্লেষকরা।

গতকাল বুধবার গাজার কেন্দ্রস্থলে ত্রাণ সহায়তা কেন্দ্রে খাবার নিতে আসা মানুষের ওপর গুলি ও গোলাবর্ষণ করে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে অন্তত ১১ জন নিহত ও শতাধিক সহায়তাপ্রার্থী আহত হন বলে জানিয়েছে গাজার সিভিল ডিফেন্স। সংস্থাটির মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, ‘খাবার নিতে জড়ো হওয়া কয়েক হাজার মানুষের ওপর গুলি চালিয়েছে দখলদার বাহিনী। এ সময় একাধিক শেলও নিক্ষেপ করে তারা।’

একই দিনে বসতবাড়ি ও বাস্তুচ্যুত মানুষের তাঁবু লক্ষ্য করে চালানো আরও তিনটি ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর আগে মঙ্গলবার খান ইউনিসে খাবার সংগ্রহ করতে আসা মানুষের ভিড়ের ওপর গোলাবর্ষণ করে ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক। এ ঘটনায় ৫৯ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি আহত হন আরও অন্তত ২২১ ফিলিস্তিনি। গাজার পূর্বাঞ্চলের একটি মূল সড়কে সহায়তাবাহী ট্রাক আসার অপেক্ষা করছিলেন তারা। একই দিনে গাজার অন্যান্য এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে ও বিমান হামলায় আরও ১৪ ফিলিস্তিনি নিহত হন।

এদিকে গাজার ‘হায়ার কমিটি ফর ট্রাইবাল অ্যাফেয়ার্স’ ফিলিস্তিনিদের সতর্ক করে বলেছে, সীমান্ত ও বিতর্কিত এলাকায় খাবার নিতে যাওয়া এখন ‘মৃত্যুর ফাঁদে’ পরিণত হয়েছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মাধ্যমে নিরাপদ উপায়ে সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার ওপর জোর দিয়েছে তারা।

অন্যদিকে, ফিলিস্তিনের নাগরিক ও সামাজিক সংগঠনগুলো যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) সহায়তা বিতরণ ব্যবস্থাকে ‘মানবিক বিপর্যয়’ বলে অভিহিত করেছে। তারা বলছে, এই কাঠামো ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা আরও বাড়িয়ে দিয়ে তাদের নিজেদের ভূমি ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করার কৌশল। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মে মাসের শেষ দিক থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় খাদ্য সহায়তা নিতে গিয়ে অন্তত ৪০০ জনের বেশি নিহত এবং ৩ হাজার জনের বেশি আহত হয়েছেন। খবর এএফপি ও আলজাজিরার।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সহ য ত র ওপর ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

শুক্রবার জরুরি বৈঠকে বসছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ, অংশ নেবে ইসরায়েল

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার সংঘাত নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসতে যাচ্ছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। আগামীকাল শুক্রবার এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ইসরায়েল এই বৈঠকে অংশ নেবে বলে জানিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন।

ইরান, রাশিয়া, চীন, পাকিস্তান ও আলজেরিয়ার অনুরোধে এ বৈঠক হবে। চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হওয়ার কথা জানিয়েছে বিবিসির মার্কিন অংশীদার সিবিএস নিউজ।

নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে ইসরায়েল অংশ নেবে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন। খবর বিবিসির

সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বলছে, ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ শুক্রবার নিউইয়র্ক সময় সকাল ১০টায় জরুরি বৈঠকে বসতে চলেছে। এর আগে ইরান জাতিসংঘে এক চিঠিতে জানায়, সংঘাত বিপজ্জনকভাবে বেড়ে গেছে এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের “ক্রমবর্ধমান ও অনস্বীকার্য প্রমাণ” রয়েছে।

এই অভিযোগ তুলে ইরান জরুরি বৈঠকের অনুরোধ করে জানায়। আর সেটিই সমর্থন করে রাশিয়া, চীন, পাকিস্তান ও আলজেরিয়া।

ইরানের দাবি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র শুধু ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তাই দিচ্ছে না, বরং ইরানি ভূখণ্ডে হামলার পরিকল্পনাতেও যুক্ত রয়েছে। তাই বিষয়টি নিয়ে এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এই বৈঠকে পরিস্থিতি শান্ত করার সম্ভাব্য কূটনৈতিক পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ