চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে নিজের বসতঘরের পাশে কনটেইনারবাহী লরির চাপায় এক নার্সারির মালিক নিহত হয়েছেন। তাঁর নাম মো. জয়নাল আবেদীন (৫৫)। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় বাদামতলীর ইসমাইল কার্পেট কারখানা এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

জয়নাল আবেদীন উপজেলার খৈয়াছড়া ইউনিয়নের ফেনাপুনি বাদামতল এলাকার বাসিন্দা। নিজের বাড়ির পাশে একটি নার্সারি করে সেখানকার উৎপাদিত চারা বাজারে বিক্রি করতেন তিনি।

স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, আজ সকালে মহাসড়কের পাশে নিজের নার্সারি থেকে বিভিন্ন ধরনের চারা তুলে বড়তাকিয়া বাজারে বিক্রি করার জন্য নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন জয়নাল আবেদীন। এমন সময় দ্রুতগতির কনটেইনারবাহী একটি লরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের বাইরে ছিটকে পড়ে। লরিটি জয়নাল আবেদীনকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন। খবর পেয়ে মিরসরাই ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মী ও স্থানীয় লোকজন নিহত জয়নাল আবেদীনের মৃতদেহ উদ্ধার করে।

দুর্ঘটনাস্থলে থাকা মিরসরাই ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের দলনেতা সাহ্লঞ মারমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় মো.

জয়নাল আবেদীনের লাশ উদ্ধার করেছি আমরা। নিয়ন্ত্রণ হারানো কনটেইনারবাহী লরির চাপায় তাঁর শরীরের বেশ কিছু অংশ থেঁতলে গেছে। লাশ উদ্ধার করে জোরারগঞ্জ হাইওয়ে থানা-পুলিশের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছি।’

জানতে চাইলে দুর্ঘটনাস্থলে থাকা জোরারগঞ্জ হাইওয়ে থানা-পুলিশের সহকারী ট্রাফিক উপপরিদর্শক (এটিএসআই) বজলুল হক বলেন, ‘আমরা ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের কাছ থেকে লাশ বুঝে নিয়েছি। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে নিহত ব্যক্তির পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে। জয়নাল আবেদীনকে চাপা দেওয়া লরিটি পুলিশের হেফাজতে আছে। তবে দুর্ঘটনার পর লরির চালক পালিয়ে গেছেন।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

তিন ফসলি জমি রক্ষা গোবিন্দগঞ্জে ইপিজেড স্থাপন পরিকল্পনা স্থগিতের দাবি

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে তিন ফসলি কৃষিজমি রক্ষায় ইপিজেড স্থাপন পরিকল্পনা স্থগিত করার দাবি জানিয়েছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর অধিকার ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা ১৪টি সংগঠন। সেইসঙ্গে সাঁওতাল নৃগোষ্ঠী ও কিছু বাঙালি কৃষিজীবী পরিবারের পূর্বপুরুষদের জমি ফিরিয়ে দেওয়াসহ ৫ দফা দাবি জানিয়েছে তারা। 

 আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘গাইবান্ধায় সাঁওতালদের পূর্বপুরুষের জমিতে বৈধ অধিকারের স্বীকৃতি এবং তিন ফসলি কৃষি জমি সুরক্ষার দাবিতে’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান তারা। 

সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে এএলআরডি, নিজেরা করি, টিআই-বি, ব্লাস্ট, বেলা, মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন, বারসিক, নাগরিক উদ্যোগ, আইন ও সালিশ কেন্দ্র, এইচডিআরসি, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, কাপেং ফাউন্ডেশন এবং হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদসহ ১৪টি সংগঠন।

সংবাদ সম্মেলনে মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির বলেন, ‘দেশে আইন-নীতিমালা যখন প্রয়োগ হয় না তখন দুর্ভোগ পোহাতে হয় সাধারণ জনগণকে। আমরা পূর্ববর্তী সরকারের আমলে গোবিন্দগঞ্জের বাগদা ফার্মে ইপিজেড নির্মাণের বিপরীতে স্মারকলিপি দিয়েছিলাম। হুকুম-দখলে সরকারি নীতিতে আছে অধিগ্রহণকৃত জমি যদি নির্ধারিত কাজে ব্যবহৃত না হয়, তা হলে যাদের জমি তাদের ফেরত দেওয়া হবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বাস্তবতা ভিন্ন। চিনি কল ২০০৪ সালে বন্ধ হয়ে গেলেও সেই জমি সাঁওতালদের ফেরত দেওয়া হয়নি। বরং ২০১৬ সালে তাদের ওপর নিপীড়ন চালানো হয় এবং ৩ জন আদিবাসী তৎকালীন পুলিশ বাহিনী ও প্রশাসনের দমন-পীড়নে নিহত হন। আমরা এই পরিস্থিতিতে নতুন করে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে প্রস্তাবিত ইপিজেড নির্মাণের সরকারি সিদ্ধান্ত ও প্রক্রিয়াকে প্রত্যাখ্যানের আহ্বান জানাই।’ 

ঢাবির অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, ‘এটা স্পষ্ট, জমি ফেরত না দিয়ে সেখানে ইপিজেড স্থাপন শিল্পায়নের ভুল ব্যাখ্যা। কৃষিজমি ধ্বংস করে ইপিজেড করার যুক্তি নেই। বিশ্বে এখন বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ হচ্ছে। বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তার স্বার্থেই তিন ফসলি জমি ধ্বংস কোনো ভালো সিদ্ধান্ত নয়।’ 

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এত জায়গা থাকতে সাঁওতালপল্লীতে কেন ইপিজেড করতে হবে?’ 

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী সাইদুর রহমান প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ