ইসরায়েলের নৃশংস হামলায় গাজা উপত্যকাজুড়ে অন্তত ৯২ জন নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এসব হামলা চালানো হয়। এদিকে গাজায় খাদ্যসংকট চরম আকার ধারণ করেছে। সেখানকার মানুষ মরিয়া হয়ে খাবারের সন্ধানে ছুটছেন।

গতকাল ভোর থেকে যাঁরা নিহত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ৬৪ জন গাজা সিটি ও উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দা। আর অন্য ১৬ জন নেতজারিম করিডরের কাছে ত্রাণের জন্য অপেক্ষারত অবস্থায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত হন।

গাজার উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলকে বিভক্ত করেছে নেতজারিম করিডর। ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিরা প্রতিদিনই সেখানে জড়ো হন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল-সমর্থিত বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের ত্রাণ সংগ্রহ করতে। তবে এই ফাউন্ডেশন ত্রাণকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বলে নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ।

ত্রাণ বিতরণস্থলে ইসরায়েলি হামলার প্রত্যক্ষদর্শী বাসাম আবু শার ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘খাবার পাওয়ার আশায় মানুষ রাতে সেখানে জড়ো হয়েছিল। রাত একটার দিকে তারা (ইসরায়েলি সেনাবাহিনী) আমাদের ওপর গুলি ছোড়া শুরু করে। তখন ট্যাংক, বিমান ও ড্রোন থেকে বোমাবর্ষণও শুরু হয়।’

বাসাম আবু শার আরও বলেন, ‘আমরা কাউকে সাহায্য করতে পারিনি, এমনকি নিজেরাও পালাতে পারিনি। বিশাল ভিড়ের কারণে ইসরায়েলি হামলার সময় পালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছিল।’

আরও পড়ুনগাজায় হামাসবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন দেওয়ার কথা স্বীকার করলেন নেতানিয়াহু০৬ জুন ২০২৫

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ত্রাণ নেওয়ার চেষ্টাকালে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হামলার ঘটনা বেড়ে গেছে। এতে বহু মানুষ নিহত হয়েছেন।

মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ থেকে আল–জাজিরার তারেক আবু আজ্জুম জানান, ত্রাণকেন্দ্রে হামলা এখন যেন ‘প্রতিদিনের রুটিন’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আজ্জুম আরও বলেন, তিন মাসের বেশি সময় ধরে সীমান্ত অবরুদ্ধ রাখার ফলে গাজার মানুষ অনাহারে মরছে। সেখানে মানুষ সব ধরনের মানবিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত। ফলে তারা বাধ্য হয়ে নেতজারিম করিডরের ওই নির্দিষ্ট কেন্দ্রে যাচ্ছে শুধু এক বস্তা আটা, কয়েক বোতল পানি আর কিছু খাবারের জন্য। পুষ্টিবিদদের মতে, এসব অত্যন্ত কম পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাবার।

তারেক আবু আজ্জুম বলেন, হামলা এখনো চলছে। সব মানবিক করিডরকে মৃত্যুকূপে রূপান্তর করা হয়েছে।

আরও পড়ুনমিথ্যা যেখানে ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় অস্ত্র০৬ জুন ২০২৫

গতকাল গাজার আল শাতি শরণার্থীশিবিরে মোবাইল ফোন চার্জ দেওয়ার জন্য অস্থায়ী তাঁবুতে জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় ১৩ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া জাবালিয়ায় কয়েকটি বাড়িতে একযোগে ব্যাপক বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধে এ পর্যন্ত অন্তত ৫৫ হাজার ৭০৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৩০ হাজার ১০১ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

আরও পড়ুনগাজায় গণহত্যায় যুক্তরাজ্য যেভাবে মদদ দিচ্ছে০৫ জুন ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে বৃদ্ধাকে গলা কেটে হত্যা

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে সেতারা বেগম (৭০) নামের এক বৃদ্ধাকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। 

শুক্রবার (২০ জুন) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম। তবে, পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে হত্যার কোনো কারণ জানাতে পারেনি।  

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাতের কোনো এক সময়ে সোনাইমুড়ী উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের কালিকাপুর গ্রামের ওসমান আলী হাজীর বাড়িতে ওই বৃদ্ধাকে হত্যা করা হয়।

নিহত সেতারা বেগম ওই এলাকার মৃত মোফাজ্জল হকের স্ত্রী। তিনি পাঁচ সন্তানের জননী ছিলেন।

পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, সেতারা তার এক ছেলের সঙ্গে সোনাইমুড়ী পৌরসভা এলাকায় বাস করতেন। ঈদুল আজহা উপলক্ষে তিনি গ্রামের বাড়িতে আসেন। বৃহস্পতিবার রাতে নিজ ঘরে একা ঘুমিয়ে ছিলেন তিনি। শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত বাড়ির লোকজন কোনো সাড়া-শব্দ না পাওয়ায় সেতারার ঘরে যান এবং ভেতরে তার রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন গিয়ে দেখেন, টিনশেড ঘরের সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে সেতারা বেগমকে হত্যা করেছে কে বা কারা।  

সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম বলেছেন, বৃহস্পতিবার রাতের কোনো এক সময়ে সিঁধ কেটে ওই নারীর ঘরে ঢোকে দুর্বৃত্তরা। পরে তাকে গলা কেটে হত্যা করে। ক্রাইমসিন ইউনিট ও সিআইডির আলামত সংগ্রহ শেষ হলে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। এ বিষয়ে আমাদের তদন্ত চলছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

ঢাকা/সুজন/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ