ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হার্ৎজের বিশিষ্ট কলামিস্ট গিডিয়ন লেভি বলেছেন, ইরানের সঙ্গে চলমান সংঘাতে জড়াবেন কি জড়াবেন না; সেই সিদ্ধান্ত দিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কয়েক সপ্তাহ অপেক্ষা করার যে ইঙ্গিত দিয়েছেন, তা ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও তার জোটের জন্য ‘গভীর হতাশার’ কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি আলজাজিরাকে বলেন, “এই বাস্তবতায় দুই সপ্তাহ এক অনন্তকাল। যদি তিনি সত্যিই কয়েক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে চান এবং যদি এটি কোনো চাল না হয়ে থাকে; তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের এই যুদ্ধে সম্পৃক্ত হওয়ার সম্ভাবনা দিন দিন কমেই আসছে।”

গিডিয়ন লেভি বলেন, “দীর্ঘমেয়াদে, এমনকি ইসরায়েল যদি ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ধ্বংস করতেও সফল হয় বা ইরানের আক্রমণাত্মক ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতায় আঘাত হানে, তবু ইসরায়েলিরা নিরাপদ অনুভব করবে না।”

আরো পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্র-জার্মানি ১৪ বিমান ভরে সামরিক সরঞ্জাম দিয়েছে ইসরায়েলকে

ইসরায়েল-ইরান সংঘাত নিয়ে চীনের দৃষ্টিভঙ্গি কী?

“এইভাবে কিছুই চূড়ান্তভাবে সমাধান হবে না। কারণ ইরান তার সক্ষমতা পুনরুদ্ধার করতে পারবে,” বলেন লেভি। তিনি আরো যোগ করেন, “ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিয়ে বহু জটিল সমস্যা রয়েছে, যেমন গাজা, যা সহজে দূর হবে না।”

আলজাজিরা লিখেছে, গিডিয়ন লেভির এই বক্তব্য নেতানিয়াহু সরকারের যুদ্ধকেন্দ্রিক কৌশলের বাস্তবতা ও সীমাবদ্ধতাকেও তুলে ধরে, বিশেষ করে যখন আন্তর্জাতিক সমর্থন অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।

তিনি আরো বলেন, আরাগচি তার ইউরোপীয় প্রতিপক্ষদের সামনে এই বাস্তবতাগুলোর কিছুটা তুলে ধরবেন এবং এরপর তা তাদের ওপর নির্ভর করবে যে তারা ফিরে গিয়ে এমন একটি পরিসর তৈরি করেন কি না, যেখানে প্রকৃত অর্থে আলোচনা সম্ভব।”

১৩ জুন ভোরে ইরানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তারপর পাল্টা হামলায় নামে ইরান। উভয় দেশ হামলা ও পাল্টা হামলা চালিয়েছে। 

ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির খুব কাছে পৌঁছে গেছে বলে অভিযোগ তুলে দেশটিতে নজিরবিহীন হামলা চালায় ইসরায়েল। অথচ আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা বলছে, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর কাছাকাছি পৌঁছানোর কোনো প্রমাণ তাদের কাছে নেই। অথচ এই অভিযোগে ইরানের ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। 

ইরাকে রাসায়নিক অস্ত্রভাণ্ডার আছে বলে অভিযোগে ২০০৩ সালে হামলা চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। অথচ তেমন কোনো অস্ত্রই ছিল ইরাকে। এবার যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে ইসরায়েল ইরাক মডেলে ইরানে হামলা চালাচ্ছে, যার কোনো ভিত্তিই নেই।

ইরানি সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজ লিখেছে, জায়নবাদী শাসন ১৩ জুন ইরানের বিরুদ্ধে একটি উস্কানিমূলক আগ্রাসী যুদ্ধ শুরু করে। তারা ইরানের পারমাণবিক, সামরিক ও আবাসিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়, যার ফলে বহু শীর্ষ সামরিক কমান্ডার, পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও সাধারণ নাগরিক শহীদ হন।

ইরানি সামরিক বাহিনী তাত্ক্ষণিকভাবে পাল্টা হামলা শুরু করে। ইরানের বিপ্লবী রক্ষী বাহিনীর মহাকাশ বিভাগ ২০ জুন পর্যন্ত “ট্রু প্রমিজ থ্রি” (সত্য প্রতিশ্রুতি-৩) অভিযানের অংশ হিসেবে ইহুদিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে ১৬ দফায় পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।

ঢাকা/রাসেল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল য ক তর ষ ট র ইসর য় ল ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

বনানীতে গুলিবিদ্ধ সেই হাসপাতালকর্মীর মৃত্যু

রাজধানীর বনানীতে গুলিতে আহত হওয়া বক্ষব্যাধি হাসপাতালের এক সাবেক কর্মী চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মারা গেছেন। সোমবার রাত সোয়া ১০টার দিকে তিনি মারা যান।

নিহত জামান হোসেন (৪০) বক্ষব্যাধি হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ছিলেন এবং একসময় চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর সংগঠনের (অফিস ক্লাব) সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

জামান হোসেনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, সোমবার রাত সোয়া ১০টার দিকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি বনানী থানা-পুলিশকে জানানো হয়েছে।

জামানের বড় ভাই সালাউদ্দিন জানান, গত শুক্রবার রাত সোয়া আটটার দিকে বনানী থানাধীন বক্ষব্যাধি হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির অফিস ক্লাবের সামনে চা খেতে যান জামান। এ সময় হঠাৎ মুখোশধারী দুই দুর্বৃত্ত দূর থেকে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়।

জামানের ডান চোখের পাশে গুলি লাগে। পরে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

নিহত জামান হোসেন মহাখালীর বক্ষব্যাধি হাসপাতালের স্টাফ কোয়ার্টারে থাকতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ