চলমান ইরান-ইসরায়েলের সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের জড়ানো নিয়ে তর্কবির্তকের শেষ নেই। খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্যে সংঘাতে জড়ানো আগুনে ঘি ঢেলেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রকে এ সংঘাতে দেখতে চান না মার্কিনিদের একটা বিরাট অংশ। খোদ ট্রাম্পের রাজনৈতিক দল রিপাবলিকানরাও যুদ্ধের বিরোধী। 

সম্প্রতি ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের জড়ানো নিয়ে একটি জরিপ চালানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিস্ট বা ইউগভ এ জরিপ চালায়। জরিপে অংশ নেওয়া ১৬ শতাংশ মার্কিনি মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী এ সংঘাতে জড়াবে। পক্ষান্তরে ৬০ শতাংশ মনে করেন, সংঘাতে জড়াবে না। আর ২৪ শতাংশ বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

দলের হিসাবে ৬৫ শতাংশ ডেমোক্র্যাট, ৬১ শতাংশ স্বাধীনচেতা রাজনীতিক ও ৫৩ শতাংশ রিপাবলিকান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের জড়ানোর বিরোধী। জরিপটিতে অংশ নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ১ হাজার ৫১২ প্রাপ্ত বয়স্ক।

এদিকে ইরানের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য মার্কিন হামলার ইঙ্গিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকদের মধ্যে বিভাজন দেখা দিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে যুদ্ধে জড়ানোর শঙ্কায় তাঁর ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ (মাগা) শিবিরের অনেকেই বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন। দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পেছনে এ শিবিরের বড় ভূমিকা ছিল।

ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ও প্রভাবশালী কিছু রিপাবলিকান নেতাও তাঁর এমন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন। অনুরোধ করছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে এ যুদ্ধে না জড়াতে। এই ঘনিষ্ঠজন ও নেতাদের মধ্যে রয়েছেন প্রেসিডেন্টের সাবেক শীর্ষ উপদেষ্টা স্টিভ ব্যাননও। তিনি বরাবরই ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ দর্শনের অন্যতম মুখ। 

ট্রাম্প প্রশাসনের ইরানবিষয়ক নীতির হঠাৎ মোড় ঘুরে যাওয়ায় তাঁরই সমর্থক ‘মাগা’ শিবিরের রক্ষণশীল অংশ উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে। কয়েক সপ্তাহ আগেও ট্রাম্প যেখানে ইরানের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ কূটনৈতিক সমঝোতার কথা বলছিলেন, এখন সেখানে ৩০ হাজার পাউন্ডের মার্কিন ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা ব্যবহার আলোচনায় আসছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানবিরোধী পদক্ষেপে গেলে ট্রাম্প তাঁর নিজের শক্তিশালী শিবিরের বিরোধিতার মুখে পড়তে পারেন। এ সমর্থক শিবির মূলত তাঁর পররাষ্ট্রনীতি-সংক্রান্ত সতর্কতা ও যুদ্ধবিরোধী অবস্থানকে সমর্থন করেই পাশে ছিল। ইরান ইতোমধ্যে হুঁশিয়ারি দিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র যদি হামলায় জড়ায়, তবে এর জন্য মার্কিনিদের চড়া মূল্য দিতে হবে। যদিও সেই মূল্য কী হবে, তা স্পষ্ট করেনি তেহরান।
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র জড়ালে, সেটি হবে বৈদেশিক ঝামেলায় যুক্ত হওয়ার ব্যাপারে ট্রাম্পের সতর্ক থাকার নীতির বিপরীত। 

সংবিধান অনুযায়ী, তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন করতে না পারলেও ২০১৬ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে জয়ী হতে সাহায্য করা ‘মাগা’ জোট ট্রাম্পের জন্য এখনও গুরুত্বপূর্ণ। এ জোটের মনোভাব ক্ষুণ্ন হলে তাঁর জনপ্রিয়তায় ধস নামতে পারে, যা ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে কংগ্রেসে রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলতে পারে। খবর আনাদোলুর। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল য ক তর ষ ট র য ক তর ষ ট র র র প বল ক ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘বউ পেটানো’ অভিনেতার দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন

সৈয়দা আলিজা সুলতানের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেতা ফিরোজ খান। তাদের এই সংসার ভেঙে গেছে। আলিজা অভিযোগ করেছিলেন, তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন ফিরোজ। কেবল তাই নয়, শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ছবিও প্রকাশ করেছিলেন। এরপর তোপের মুখে পড়েন ফিরোজ খান। নেটিজেনদের অনেকে তাকে ‘বউ পেটানো’ অভিনেতার তকমাও দেন।

প্রথম সংসার ভাঙার প্রায় দুই বছর পর ডা. জয়নবের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ফিরোজ খান। এদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন ছড়িয়েছে। মূলত, বিনোদনভিত্তিক একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ডা. জয়নবের ইনস্টাগ্রাম পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করা হয়। তারপরই শুরু হয় ফিরোজ খানের সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদের গুঞ্জন। দ্রুত সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে জয়নবের অভিযোগের স্ক্রিনশট। 

ডা. জয়নব কথিত এই নোটে বলেন, “আমি আমার সহনসীমার শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি। অবিরাম মানসিক চাপ ও উদ্বেগে ক্লান্ত। এমন একজন মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে আছি, যে আমাকে বিশ্বাস করে না। আমি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমি এখন ক্লান্ত। প্রতিটি কথোপকথন একটা লড়াইয়ের মতো লাগে, প্রতিটি মতবিরোধ যেন যুদ্ধ। এমন আচরণের শিকার হয়ে আমি ক্লান্ত। আমি যখন তাকে কিছু বলি, সে আমার উপর রাগ ঝাড়ে।”

স্ত্রী জয়নবের সঙ্গে ফিরোজ খান

সুখ স্মৃতিগুলো কষ্টে ঢাকা পড়ে গিয়েছে। এমন মন্তব্য করে জয়নব বলেন, “সত্যি বলতে, আমরা একসঙ্গে যে স্মৃতিগুলো তৈরি করেছিলাম, তা এখন কষ্ট ও আঘাতে ঢাকা পড়ে গেছে। আমি অসংখ্যবার তাকে ক্ষমা করেছি। কিন্তু সেই ক্ষতগুলো কখনো পুরোপুরি সারেনি। বুঝতে পারছি, আমি এক ধরণের মানসিক অস্থিরতার মধ্যে বাস করছি, একটা সম্পর্কে আটকে আছি, যা আমার জীবনের শক্তি শুষে নিচ্ছে। আমি জানি, আমি এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। আমি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও কোমলতার যোগ্য। সবকিছু ঠিক আছে—আমি আর এই ভান করতে চাই না।”

ডিভোর্সের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে জয়নব বলেন “এমন বিষাক্ত একটা সম্পর্কের জন্য আমি আমার সুখ ত্যাগ করেছি। আমি এখন নিজের জন্য, নিজের মানসিক সুস্থতার জন্য দাঁড়াচ্ছি। বেদনা ও কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে, আমি আমার জীবনের এই অধ্যায় (বিবাহিত জীবন) শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি ডিভোর্স নিচ্ছি। কারণ আমি জানি, এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। জীবনের নতুন অধ্যায় শুরুর জন্য আমি প্রস্তুত, যেখানে আমাকে মূল্য দেওয়া হবে, সম্মান করা হবে, ভালোবাসা হবে।”

জয়নবের এই ‘ডিভোর্স নোট’ নিয়ে যখন জোর চর্চা চলছে, তখন মুখে কুলুপ এঁটেছেন ফিরোজ খান। তবে এর আগে ফিরোজ খানের অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দেওয়া একটি পোস্টে দেখা যায়। তাতে জয়নবের বিরুদ্ধে ‘ব্ল্যাকমেইল’ ও ‘মানসিক চাপের’ অভিযোগ তোলেন। যদিও পরবর্তীতে পোস্টটি মুছে ফেলা হয়। পাশাপাশি এই অভিনেতা জানান, তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছিল।

ডা. জয়নব

তবে সংসার ভাঙার গুঞ্জনে সরাসরি কোনো বক্তব্য দেননি ফিরোজ খান কিংবা তার স্ত্রী ডা. জয়নব। তবে বিনোদনভিত্তিক যে পেজ থেকে জয়নবের ‘ডিভোস নোট’ ছড়ানো হয়েছে, সেই পোস্টে মন্তব্য করেছেন তিনি। তাতে জয়নব লেখেন, “এই ধরনের পেজগুলো আনফলো করুন অথবা রিপোর্ট করুন। এই ধরনের পেজ থেকে ভুয়া খবর ছড়িয়ে মানুষকে বিরক্ত করা হচ্ছে। সত্যি বলছি, আমি জানি না কীভাবে তারা আমার স্টোরিতে পোস্টটি করার অ্যাকসেস পেয়েছে। এই পোস্ট আমি কখনো করিনি।”

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম স্ত্রী সৈয়দ আলিজা সুলতানের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় ফিরোজ খানের। এ সংসারে সুলতান খান ও ফাতিমা খান নামে দুই সন্তান রয়েছে। বর্তমানে দুই সন্তানের দায়িত্ব নিয়ে আদালতে মামলা লড়ছেন এই প্রাক্তন দম্পতি। ২০২৪ সালে ডা. জয়নবকে বিয়ে করেন ফিরোজ খান।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ