কারাগারে নোবেলের বিয়ে, ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্টে কি বললেন সাবেক স্ত্রী
Published: 25th, June 2025 GMT
কলেজছাত্রীকে অপহরণ করে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার গায়ক মাইনুল আহসান নোবেলকে জামিন দিয়েছেন আদালত। গত ১৯ জুন কারাফটকে মামলার বাদীকে বিয়ে করার পাঁচ দিনের মাথায় গতকাল জামিন পান তিনি।
নোবেলের আইনজীবী মঙ্গলবারই জানান, নোবেল বাবা হতে চলেছেন। আজ আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে এই খবর জেনেছেন তিনি।
বিয়ের পাঁচদিন পর নোবেলের স্ত্রীর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর প্রসঙ্গে এই আইনজীবী বলেন, নোবেল-প্রিয়া গত বছর বিয়ে করে একসঙ্গে বসবাস করছিলেন। তখন কাবিন রেজিস্ট্রি করা ছিল না। এ নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি নিয়ে মামলা হয়। এখন ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে এবং গত ১৯ জুন কারাগারে আবার তাদের বিয়ে হয়েছে।
এর আগে নোবেল বিয়ে করেছিলেন সালসাবিল মাহমুদকে। অর্থাৎ নোবেলের প্রথম স্ত্রী তিনি। নোবেলকে নিয়ে এমন আলোচনার আবহে বুধবার সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্ট দেন তিনি; সেখানে নোবেলকে ইঙ্গিত করে কথা বলা হয়েছে বলে মনে করছেন অনুমান করছেন অনেকেই।
পোস্টে সালসাবিল লেখেন, ‘এক ব্যাক্তি প্রবাসে গিয়েছিল বউকে বাংলাদেশে রেখে। কোর্ট নাকি নির্দেশ দিয়ে তার বউকে আরেকজনের জামাইয়ের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দিয়েছে, খুবই হাস্যকর! গোপালগঞ্জের মানুষ বলে কথা!’
বলা দরকার, নোবেলের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলায়। সেদিক থেকেই সবার অনুমান, নোবেলকে নিয়েই পোস্টটি লিখেছেন সালসাবিল।
সালসাবিলের সেই কমেন্ট কমেন্ট বক্সে হ্যাপি আকতার নামে একজন লিখেছেন, ‘কোর্টে কাছে নোবেলের পক্ষ থেকে অনুমতি চাওয়া হয়েছে বিবাহের জন্য। এতে দুপক্ষেরই সম্মতি ছিলো বিধায় কোর্ট তাদের আবেদন মঞ্জুর করেছে মাত্র। কোর্ট তো আর জানে না। এতে কোর্টের দোষ কোথায়? তবে হ্যাঁ, আদালতের কাছে যদি তথ্য গোপন করে অনুমতি চেয়ে থাকে তাহলে কেউ এসে আপত্তি জানায় তাহলে অবশ্যই এর শাস্তি পাবে।’
ফাতেমা তুজ জোহরা নামে একজন লিখেছেন, ‘যা হয়েছে আপনার জন্য ভালো হয়েছে। এই লোকের সাথে থাকলে আপনার জীবন নষ্ট হয়ে যেত।’
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৪ মে পারিবারিক সিদ্ধান্তে মাইনুল আহসান নোবেলকে ডিভোর্স দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান সালসাবিল। একইদিন বিচ্ছেদের কাগজ পাঠান স্ত্রী তিনি। পরে নোবেলকে প্রাক্তন স্বামী বলেও উল্লেখ করে সালসাবিল।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
এনায়েত করিম ও গোলাম মোস্তফা পাঁচ দিন রিমান্ডে
রাজধানীর রমনা থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরী ওরফে মাসুদ করিম ও এস এম গোলাম মোস্তফা আজাদকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হক আজ বুধবার এ আদেশ দেন।
প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী।
পিপি ওমর ফারুক ফারুকী প্রথম আলোকে বলেন, সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত এনায়েত করিম চৌধুরী ও এস এম গোলাম মোস্তফাকে আদালতে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করে পুলিশ। আসামিপক্ষ থেকে জামিনের আবেদন করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত মাসুদ ও মোস্তফাকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে এনায়েত করিম ওরফে মাসুদ করিমকে গত সোমবার দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলা হয়, এনায়েত করিম চৌধুরী ওরফে মাসুদ করিম মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। বাস্তবে তিনি র-এর (ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা) এজেন্ট। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল করার মিশন নিয়ে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। বর্তমান সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত। তাঁর দুটি মুঠোফোন জব্দ করা হয়েছে। সেটির ফরেনসিক পরীক্ষা করা হলে তাঁর ষড়যন্ত্রের বিষয়ে আরও অনেক নতুন তথ্য জানা যাবে। এনায়েত করিম চৌধুরী ওরফে মাসুদ করিমসহ আর কারা ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত, সেটি জানার জন্য তাঁকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।
অপরদিকে এনায়েত করিম চৌধুরীর পক্ষে তাঁর আইনজীবীরা আদালতের কাছে দাবি করেন, তিনি ৬ সেপ্টেম্বর দেশে এসেছেন, তাঁর আমেরিকায় ফিরে যাওয়ার কথা ১৪ সেপ্টেম্বর। তিনি বাংলাদেশে এসে গুলশানে অবস্থান করছিলেন।
এনায়েত করিম চৌধুরীর আইনজীবী ফারহান এমডি আরাফ বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে তাঁর মক্কেল কোনোভাবেই জড়িত নন। তিনি একজন মার্কিন নাগরিক। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে তিনি কোনোভাবে যুক্ত নন।
এর আগে গত শনিবার এনায়েত করিম চৌধুরীকে (৫৫) সন্দেহভাজন হিসেবে আটকের পর ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত শনিবার সকালে রাজধানীর মিন্টোরোড থেকে এনায়েত করিম চৌধুরীকে আটক করা হয়। তাঁর কাছ থেকে জব্দ করা পাসপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, তিনি মার্কিন নাগরিক।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সূত্র প্রথম আলোকে জানিয়েছে, এনায়েত করিম নিজেকে মাসুদ করিম নামে পরিচয় দেন। তিনি নিজেকে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের প্রধান বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন। এই পরিচয়ে তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতাদের রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করার স্বপ্ন দেখান। ২০১৮ সালের ভোটের আগেও তিনি একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে দেশের বাইরে বৈঠক করেন।
পুলিশ বলছে, গত শনিবার এনায়েত করিম চৌধুরী প্রাডো গাড়িতে করে মিন্টোরোড এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন। গাড়ি থামিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে ওই এলাকায় ঘোরাঘুরি করার বিষয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি। পরে তাঁকে আটক করে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়ে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পাশাপাশি সোমবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেন।
সংশ্লিষ্ট একজন পুলিশ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেছেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এনায়েত করিম বলেছেন, বর্তমান সরকার পরিবর্তন করে নতুন জাতীয় সরকার গঠনে কাজ করতে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। তাঁর দাবি, তিনি বিশেষ একটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার খুব নাজুক অবস্থায় আছে। সেনাবাহিনীর সঙ্গেও এই সরকারের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এই সুযোগে বর্তমান সরকারকে পরিবর্তন করতে বাংলাদেশে এসেছেন। সরকারি উচ্চ ও নীতিনির্ধারক পর্যায়ের একাধিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে জানিয়েছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছেন।