ভিটামিন বি৬-এর ঘাটতি কী করে বুঝবেন এবং মেটাবেন যেভাবে
Published: 3rd, July 2025 GMT
ভিটামিন বি৬ বা পাইরিডক্সিন, পানিতে দ্রবণীয় এমন একটি ভিটামিন, যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শরীরের বিপাকক্রিয়া, স্নায়ুর কাজ, হরমোনের তারতম্য ঠিক রাখা, রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করাসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজে এই ভিটামিন প্রয়োজন হয়। ভিটামিন বি৬ অনেক কমে যাওয়া কিছুটা দুর্লভ, কিন্তু সামান্য কমে গেলেই বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়।
কেন কমে যায়ভিটামিন বি৬ কমে যাওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ কিছু ওষুধ। এর মধ্যে আছে আসসোনিয়াজাইড, যা যক্ষ্মারোগের চিকিত্সায় দেওয়া হয়, পেনিসিলামিন, হাইড্রালাজিন, লেভোডোপা-কারবিডোপা–জাতীয় ওষুধ।
কিছু অসুখেও বি৬–এর সিনথেসিস কমে যায়। যেমন অ্যাজমা, ডায়াবেটিস, গর্ভাবস্থা, হার্টের অসুখ, ব্রেস্ট ক্যানসার, রক্তের ক্যানসার, শিকল সেল ডিজিজ, গর্ভকালীন সময়ে অতিরিক্ত বমি।
অতিরিক্ত মদ্যপানেও ভিটামিন বি৬ কমে যায়।
উপসর্গ কীভিটামিন বি৬ অল্প কমে গেলেই বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। এর মধ্যে আছে—
চামড়ায় র্যাশ বা ফুসকুড়ি: নাক ও মুখের চারদিকে চামড়া ফেটে যায় বা ফুসকুড়ি ওঠে, খুব চুলকায়। বেশি হলে একে সেবোরোইক ডার্মাটাইটিস বলে।
ক্র্যাক লিপ: ঠোঁটের চারপাশ ফেটে যায় ও জিভ লাল হয়ে ফুলে যায়। বি৬–এর সঙ্গে যদি বি১২ ও ফলেট কমে যায়, তাহলে এটি মারাত্মক রূপ নিতে পারে।
মুড চেঞ্জ: ভিটামিন বি৬ সেরোটোনিন ও ডোপামিন নামক নিউরোট্রান্সমিটার তৈরিতে সাহায্য করে। তাই বি৬ কমে গেলে এই হ্যাপি হরমোনগুলোও কমে যায়। ফলে অবসাদ, বিষণ্নতা, দুশ্চিন্তা, মেজাজ খারাপসহ বিভিন্ন রকম মানসিক উপসর্গ দেখা দেয়।
নিউরোপ্যাথি: বি৬–এর অভাবে সবচেয়ে বেশি যেটা দেখা দেয়, সেটা হলো হাত-পা ঝিমঝিম করা, অবশ লাগা, জ্বালাপোড়া। অনেকের হঠাৎ করে তীব্র ব্যথা হয়, যাকে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি বলে।
রক্তশূন্যতা: বি৬ হিমোগ্লোবিন তৈরির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তাই এই ভিটামিনের অভাব হলে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। ফলে দুর্বল লাগা, কাজে মনোযোগ দিতে না পারা, মাথা ঘুরানোসহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়।
অনিদ্রা: বি৬ মেলাটোনিন তৈরিতে সাহায্য করে, যা ঘুম নিয়ন্ত্রণ করে। তাই বি৬–এর অভাবে রোগী অনিদ্রায় ভোগে।
রোগ প্রতিরোধক্ষমতা: ভিটামিন বি৬–এর অভাবে শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যায়। কারণ, বি৬ অ্যান্টিবডি তৈরি করে।
শিশুর খিচুনি: নবজাতকের বি৬–এর অভাব হলে খিচুনি হয়, যা অত্যন্ত মারাত্মক।
এ ছাড়া এই ভিটামিনের অভাবে রক্তনালি ও নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
শিশুদের জন্য প্রতিদিন ০.
অনেক খাবারেই ভিটামিন বি৬ রয়েছে, সেগুলো খেয়ে অভাব পূরণ করা যাবে। দুধ, ডিম, মুরগির মাংস, মাছ, কলা, লাল চাল, ছোলা, গোটা শস্য, মটরশুঁটি, পালং শাক, সয়াবিন ইত্যাদি খাবার নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখা যায়। তবে খেয়াল রাখতে হবে অতিরিক্ত তাপে বেশিক্ষণ রান্না করলে ভিটামিন বি৬ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
ভিটামিন বি৬ শরীরে বেশি হয়ে গেলে টক্সিসিটি হয়। তখন বমি, বমিবমি ভাব, রোদে যেতে না পারা, দুর্বল লাগাসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। প্রতিদিন শাকসবজি, মাছ-মাংস ও ডাল–জাতীয় খাবার খেলে সাধারণত বি৬–এর অভাব হয় না। তবে যে ওষুধগুলো বি৬–এর পরিমাণ কমায়, সেগুলো খেলে অবশ্যই চিকিত্সকের পরামর্শে সাপ্লিমেন্ট খেতে হবে। আরও পড়ুনস্ট্রোকের ঝুঁকি ১৭ শতাংশ কমাতে পারে এই ভিটামিন০২ জুলাই ২০২৫
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপসর গ দ খ এই ভ ট ম ন দ র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
লাকসামে অস্ত্রের মুখে এতিমখানার ৫ গরু লুট, আহত ৮
কুমিল্লার লাকসামে একটি এতিমখানার খামার থেকে গত শুক্রবার পাঁচটি গরু লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাত দল। এ সময় তাদের হামলায় মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ আটজন আহত হন। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ থানায় মামলা করেছে।
গত শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) ভোরে উপজেলার আজগরা ইউনিয়নের বড়বাম আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদরাসা ও এর সংলগ্ন এতিমখানার খামারে ঘটনাটি ঘটে। তিন মাস আগেও এই খামারের সাতটি গরু লুট করেছিল ডাকাতরা।
আরো পড়ুন:
খুলনায় বিএনপি নেতার অফিসে বোমা-গুলি, শিক্ষক নিহত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিপক্ষের হামলা: গুলিবিদ্ধ যুবকের মৃত্যু
সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে ঘটনাটি জানাজানি হয়।
এলাকাবাসী জানান, মাদরাসার আয় এই খামারের মাধ্যমে হয়। তিন মাসের ব্যবধানে দুই দফা ডাকাতি হওয়ায় শিক্ষক ও ছাত্রদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। খামারের বড় গরুগুলো লুট হয়ে যাওয়ায় এক পাশ ফাঁকা পড়ে আছে। বর্তমানে খামারে ১১টি গরু অবশিষ্ট রয়েছে।
খামারের সামনে পড়ে আছে ডাকাত দলের ব্যবহৃত তুষের বস্তা, যা দিয়ে গরুগুলো পিকআপ ভ্যানে তোলে তারা। গরু উদ্ধার এবং ডাকাত দলের সদস্যদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
মামলার বাদী এবং মাদরাসার শিক্ষক ইমরান হোসাইন জানান, গত শুক্রবার ভোরে একদল ডাকাত দুটি পিকআপ ভ্যান নিয়ে এসে অস্ত্রের মুখে মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে। শিক্ষকদের মারধর করে তাদের মোবাইল ফোন নিয়ে যায় ডাকাতরা। তারা খামারে ঢুকে কেয়ারটেকার উৎসব হোসেনকে বেঁধে একে একে পাঁচটি গরু পিকআপ ভ্যানে তুলে নেয়। শিক্ষক ও ছাত্রদের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়।
মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা শরীফুল আলম খন্দকার জানান, খামারের আয়ের ওপর ভিত্তি করে মাদরাসার কার্যক্রম চলে। তিন মাস আগেও এই খামারের সাতটি গরু নিয়ে যায় ডাকাতরা।
লাকসাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজনীন সুলতানা বলেন, “লুট হওয়া গরু উদ্ধার এবং ডাকাতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। মাদরাসার শিক্ষক ইমরান হোসাইন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন।”
ঢাকা/রুবেল/মাসুদ