আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি মনে করে, কোনো ফৌজদারি অপরাধীকে ক্ষমা করে দেওয়ার একক ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকা উচিত নয়। এ ছাড়া জনস্বার্থে বিচার বিভাগকে বিকেন্দ্রীকরণে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবেও পুরোপুরি একমত দলটি।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। এ সময় দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সানী আবদুল হক উপস্থিত ছিলেন।

আসাদুজ্জামান ফুয়াদ জানান, বৃহস্পতিবারের আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলো গুরুত্বপূর্ণ দুটি প্রস্তাবে একমত হয়েছে। এর একটি হলো রাষ্ট্রপতি কর্তৃক সাধারণ ক্ষমার বিষয়ে অনুসরণীয় নীতিমালা প্রণয়ন এবং অপরটি হলো উচ্চ আদালতের বিচার জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য হাইকোর্টের বেঞ্চকে বিভাগীয় পর্যায়ে সম্প্রসারণ করা।

এবি পার্টির অবস্থান তুলে ধরে আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘আমরা বিভাগীয় শহরের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতেও হাইকোর্ট বেঞ্চ স্থাপনের কথা বলেছি। ১৮ কোটি মানুষ বিচারের আশায় ঢাকায় আসেন। মানুষের আসা-যাওয়া, থাকা-খাওয়ায় অনেক অর্থ ও সময়ের অপচয় হয়। তাই মানবিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিচারপ্রক্রিয়াকে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যাওয়া উচিত।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আদালত থেকে ফ্যাসিস্ট বিচারক সরাতে হবে: সালাহউদ্দিন

বিচার বিভাগের স্বাধীনতার সুফলের জন্য উচ্চ ও নিম্ন আদালতকে ফ্যাসিস্ট বিচারক মুক্ত করা জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ফ্যাসিস্টদের বহাল রেখে যতই স্বাধীন বিচার বিভাগ করা হোক, স্বাধীনতার সুফল ওই বিচারকরাই পাবে। আওয়ামী লীগের দোসরদের এক-দুই দিনে জামিন হয়ে যাচ্ছে। এসব কারা করছে? করছে তো এই ফ্যাসিস্টদের দোসরেরা।

বৃহস্পতিবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় ধাপের নবম দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলে সালাহউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, রাজনীতিক নেতাকর্মী, সাংবাদিকসহ সমাজের সমস্ত শ্রেণি-পেশার মানুষকে ফ্যাসিস্ট বিচারকরা অবৈধভাবে সাজা দিয়েছে। সেই ফ্যাসিস্টদের যেন আমরা রক্ষা না করি। আমরা চাই উচ্চ এবং নিম্ন আদালতে যেন ফ্যাসিস্টের দোসরেরা না থাকে।

ফ্যাসিস্ট বিচারপতিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘তাদের শুধু বদলি, চাকরিচ্যুত করলে হবে না। অপরাধের জন্য তাদের বিচারও করতে হবে। যদি তা নিশ্চিত করা যায়, তাহলে সত্যিকারের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা কার্যকর হবে। আদালতে ফ্যাসিস্টদের বহাল রেখে যতই স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা করি না কেন,  সুবিধা এরাই ভোগ করবে।  যতই কড়া আইন করি না কেন,  এটার অপব্যবহার তারাই করবে এবং এখনই করছে’।

রাজধানীর বাইরে হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপনে একমত হয়েছে বিএনপি। যদিও দলটির প্রস্তাব ছিল সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনের। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণে হাইকোর্টের বেঞ্চ বিভাগীয় শহরে স্থাপনে বিএনপি রাজি জানিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, বিচারিক সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাক। তবে হাইকোর্ট বেঞ্চ রাজধানীর বাইরে নিতে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে এ বিষয়ে তার অনুমতি বা পরামর্শের কথা বলেছি। সবার মঙ্গল এবং সুবিধার জন্য বলেছি। 

সালাহউদ্দিন আরও বলেন, সংবিধানে এমন পরিবর্তন করতে পারব না, যা পরবর্তীতে টিকবে না। এখন যে পর্যায়ে আছি, এখানে জনগণ ও রাষ্ট্রের কাছে আমাদের দায় অনেক বেশি। রাজনৈতিকভাবে নয়, জনগণের জন্য, দেশের কল্যাণে সার্বিকভাবে মতামত দিচ্ছি। 

রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতা কমাতে বিএনপি একমত জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, অতীতের এ ক্ষমতার যথেষ্ট অপব্যবহার হয়েছে। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিসহ বড় বড় অপরাধ করা আসামিদের ক্ষমা প্রদর্শনের মাধ্যমে হত্যাযজ্ঞের একটা উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। তাই নীতিগতভাবে একমত পোষণ করেছি, রাষ্ট্রপতির এই ক্ষমতাটা আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাংবিধানিক সংস্কার এবং গণতন্ত্রের ভবিষ‍্যৎ
  • আদালত থেকে ফ্যাসিস্ট বিচারক সরাতে হবে: সালাহউদ্দিন
  • উপজেলা পর্যায়ে আদালত স্থাপনের আগে ভেবে দেখার আহ্বান ইসলামী আন্দোলনের
  • বিভাগীয় শহরেও হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চের বিষয়ে মতৈক্য হয়েছে: আলী রীয়াজ
  • তত্ত্বাবধায়ক সরকারে একমত, রূপরেখা নিয়ে মতভিন্নতা
  • সংস্কারে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করছে বিএনপি: সালাহউদ্দিন
  • সংস্কারের কত প্রস্তাবে বিএনপি একমত, জানালেন সালাহউদ্দিন
  • নির্বাচনী সীমানা নির্ধারণ ও তত্ত্ববধায়কের বিষয়ে একমত জামায়াত
  • তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়ে সব দল একমত: অধ্যাপক আলী রীয়াজ