নিজে তামাটে বর্ণের মানুষ; আর চারপাশ দিয়ে বসবাসরত মানুষের নেই কোনো রূপের ও রঙের সাযুজ্য। একেকজন যেন এক এক গোত্র-রাজ্য থেকে এসে এই ভূখণ্ডে বসবাস শুরু করেছে। নেতানো-এলানো কোনো কিছুই যেন তাঁর ভালো লাগে না। এমনকি স্বধর্ম হিন্দুত্বেও আস্থা হারিয়ে গ্রহণ করলেন খ্রিষ্টধর্ম। মনের অতলে লুকিয়ে ছিল অবাধ-অগাধ-বিপুল কল্পনাপ্রতিভা কিংবা কাব্যপ্রতিভা। বাঙালি-সংস্কৃত কবিদের কবিতার মধ্য দিয়ে ভালো লাগার জন্ম হলেও শেষ পর্যন্ত ইংরেজি ভাষায় কবিতা লেখার আগ্রহ জন্মাল উনিশ শতকের ষাটের দশকের শ্রেষ্ঠ প্রতিভা মাইকেল মধুসূদন দত্তের। আবার সেই ইংরেজ কবিদের পরামর্শেই লিখতে শুরু করলেন আপন ভাষায়। বুঝতে পারলেন নিজের অপরিমেয় ভুল ও অপূরণীয় ক্ষতির কথা। এই সর্ববিদিত কথাগুলোর মধ্যেই খুঁজে পাওয়া যায় বাংলা ভাষার একজন মহাকবি, মহাবিদ্রোহী, মহান স্রষ্টা ও মহান সংস্কারককে।
অমর কীর্তি ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ রচনা করে যেমন তিনি বাংলা মহাকাব্যের সূচনা করেন। একইভাবে চিরাচরিত ছন্দ ও পুরাণকথা ভেঙে স্বপ্রবর্তিত অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচনা রীতিও তিনিই প্রথম প্রবর্তন করেন। এই যে প্রাচীন ও মধ্যযুগের বৈচিত্র্যহীন অন্ত্যমিলপ্রধান কবিতা, তারই মুখোমুখি হয়ে তিনি ভেঙে দিলেন চিরাচরিত ছন্দ প্রকরণ। যেখানে অন্ত্যমিল নেই, কথা বলার সীমাবদ্ধতা নেই, দুটিমাত্র বাক্যে পূর্ণাঙ্গ ভাব প্রকাশের বাড়াবাড়ি নেই। একই সাথে ঝুলে পড়া, গড়পড়তা ভাষাকে চ্যালেঞ্জ করে নিয়ে এলেন ভাষার ও বক্তব্যের গাম্ভীর্য। এ যেন নতুন রবির নতুন আলোয় ঝলসে উঠল বাংলা কবিতা, মহাকাব্য, নাটক, প্রহসন, গীতিকাব্য আরও কত কী?
ইতালীয় কবি পেত্রার্কের সনেট অনুসরণে শুরু করলেন বাংলা চতুর্দশপদী কবিতাবলি। গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হলো ১০২টি সনেট; যাতে বৈচিত্র্যের সীমা নেই। কবিতা যেখানে ছিল দেবদেবীর উপাসনা, রাজরাজড়ার স্তুতি আর নিবেদনে ভরা; সেই কবিতাকে তিনি টেনে আনলেন মানব কীর্তনের ধারায়, মানবমনের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার বিপুল স্রোততটে। তিনি শুরু করলেন মানুষের কথা, কুসংস্কারের বিরোধিতা, প্রেম ও প্রহসনের রকমারি।
কবি হওয়ার জন্য আশ্রয় নিলেন বহু ভাষার। দীক্ষিত হলেন। অন্তত ১৩টি ভাষা তিনি আত্মস্থ করেছিলেন সেসব ভাষার সাহিত্যের রসাস্বাদনের জন্য। এবং বহু বিচিত্র নির্যাসে বাংলা সাহিত্যকে ভরিয়ে তোলার জন্য। বাস্তবিকই তাঁর এই বিচিত্র পঠনপাঠন আর বহু ভাষার সাহিত্যের আলোয় আলোকিত করেছিলেন বাংলা কবিতাকে। এমনকি তাঁর মা তাঁকে শৈশবে মক্তবে পাঠিয়ে শিখিয়েছিলেন আরবি-ফারসি ভাষাও। একটি পরিবার কতটা উদার ও সংস্কারমুক্ত হলে একজন হিন্দুর ছেলেকে মাদ্রাসায় পাঠায় আরবি-ফারসি ভাষা শেখার জন্য! কথা রেখেছিলেন মধুসূদন। বাংলা সাহিত্যের দরবারে তিনি সত্যি সত্যি রাজমুকুটটি অর্জন করেছিলেন। তিনিই প্রথম আমাদের আধুনিক কবি। প্রচলিত সাহিত্যধারা ভেঙে নির্মাণ করেছেন স্বতন্ত্র পথ। ভাষার অলংকার ও তাতে গভীরতা আনয়নে তাঁর তুলনা নেই। ধর্মের স্তুতি আর দেবদেবীর বন্দনা যখন তাঁর পূর্বসূরিদের নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছিল, তখনই তিনি প্রথম আঘাতটা এনেছিলেন দেশপ্রেমে ব্রতী হয়ে। তাঁর প্রকৃতিপ্রেমের মাহাত্ম্য অসীম ও অতুলনীয়। তাঁর বিবিধ কাব্য, নাটক, গীতিকাব্যে প্রকৃতির বর্ণনা এলেও অনন্য গ্রন্থ “চতুর্দ্দশপদী কবিতাবলী”তে অধিক মাত্রায় প্রকাশিত হয় দেশাত্মবোধের কথা। এ গ্রন্থে তিনি প্রেম, বিরহ ও প্রকৃতি বন্দনায় মেতে ওঠেন। দেশি-বিদেশি কৃতীজনকে নিয়েও রচনা করেন একের পর এক সনেট।
১৮৬৬ (১২৭২ বঙ্গাব্দ) খ্রিষ্টাব্দে প্রথম প্রকাশিত মাইকেলের “চতুর্দ্দশপদী কবিতাবলী” শ্রীব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সজনীকান্ত দাসের সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়। কলকাতার বঙ্গীয়-সাহিত্য-পরিষৎ থেকে প্রকাশিত গ্রন্থটির ভূমিকায় তারা লেখেন:
“‘চতুর্দ্দশপদী কবিতাবলী’তে আরও একটি লক্ষ্যণীয় বিষয়– মধুসূদনের অপূর্ব দেশপ্রেম। ভারতবর্ষ এবং বিশেষ করিয়া মাতৃভূমি বাংলাদেশের প্রতি তাঁহার ঐকান্তিক ভালবাসা এই সনেট কয়টিতে ওতঃপ্রোত হইয়া আছে। এই প্রেমের তুলনা বাংলা সাহিত্যেও দুর্লভ। এই পুস্তকের ১০২টি সনেটের মধ্যে বৈদেশিক ব্যক্তি ও বিষয় লইয়া লিখিত (৪৩, ৮২, ৮৩, ৮৪ ও ৮৫ নং) ৫টিকে বাদ দিলে বাকী প্রায় সকলগুলিই স্বদেশীয় বিষয় এবং স্বদেশীয় প্রকৃতির বর্ণনাসম্বলিত। এগুলিতে মধুসূদনের অসামান্য কবি-হৃদয়ের পরিচয় নিহিত আছে।
শুধু প্রকৃতি-বর্ণনাই নয়, তাঁহার সমগ্র জীবনের রূঢ় বাস্তব ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা নানা আকারে এগুলিতে প্রকাশ পাইয়াছে। .
দেশ ছেড়ে প্রবাসের জীবন তাঁকে বারবার কাছে টানলেও তিনি কখনও বিদেশি হতে পারেননি। রেবেকা নামের প্রথম স্ত্রী ও দ্বিতীয় স্ত্রী হেনরিয়েটা– দুজনেই বিদেশি হওয়ার কারণে পারিবারিক জীবনে তাঁকে ইংরেজিতে বেশি কথা বলতে হয়েছে, তবে হৃদয়জুড়ে তখন তাঁর ছড়িয়ে পড়েছে বাংলার প্রকৃতি আর বাংলা ভাষার দ্যুতি। তাঁর ২৩ নম্বর সনেটটিতে বাংলার প্রকৃতিমুগ্ধতা যেন উতলে উঠেছে।
বাংলার আকাশের চাঁদের দেখা যেন কোথাও মেলে না। সেই চাঁদ খেলা করে প্রেমিক-প্রেমিকার প্রেমানন্দ মনে।
বসন্তে কুসুমকুল যথা বনস্থলে
চেয়ে দেখ তারাচয় ফুটিছে গগনে
মৃগাক্ষি!– সুহাস-মুখে সরসীর জলে,
চন্দ্রিমা করিছে কেলি প্রেমানন্দ-মনে।
তিনি পরদেশে আসক্ত হয়ে, পরধনে লোভী হয়ে বহুদেশ ভ্রমণ করেছেন। তবু তিনি বাংলা ভাষা ও স্বদেশীয় মমত্বকে উপেক্ষা করতে পারেননি। তাঁর হৃদয়জুড়েই দু’কূল প্লাবিত করে আছড়ে পড়ছিল কপোতাক্ষ নদ। যে কারণে সুদূর ফ্রান্সে বসেই এই চতুর্দশপদী কবিতাগুলো লেখা সম্ভব হয়েছিল। এক পর্যায়ে অনেকটা বাধ্য হয়েই, ভালো না লাগা সত্ত্বেও বিদেশে বসবাস করতেন। আর দারুণভাবে অনুভব করতেন বঙ্গ ভান্ডারের বিবিধ রতন।
হে বঙ্গ, ভাণ্ডারে তব বিবিধ রতন;–
তা সবে, (অবোধ আমি!) অবহেলা করি,
পর-ধন-লোভে মত্ত করিনু ভ্রমণ
পরদেশে, ভিক্ষাবৃত্তি কুক্ষণে আচরি।
[বঙ্গভাষা, সনেট নং ৩]
‘মেঘনাদবধ কাব্য’ মধুসূদনের শ্রেষ্ঠ ও ব্যাপক জনপ্রিয় কাব্য হলেও; প্রথম মহাকাব্য ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের স্বাক্ষর বহন করলেও তাঁর পরিণত মনের কাব্য এই “চতুর্দ্দশপদী কবিতাবলী”। তাঁর জীবনের বোহেমিয়ানপনা, বেহিসেবি জীবনযাপন, অসামঞ্জস্য অর্থসম্পদ খরচের সাযুজ্যহীন জীবনযাপন শেষে এই সনেটগুচ্ছ রচনাকালেই তাঁকে অনেকটা স্থিতধী মনে করা হতো। যেখানে তিনি অল্প কথায়, অষ্টক ও ষষ্টক মিলে মাত্র চৌদ্দ মাত্রার চৌদ্দ পঙ্ক্তিতে তাঁর ভাবের পূর্ণতা প্রকাশে সক্ষম হন। গ্রন্থটির প্রথম প্রকাশের দুই সম্পাদক ও ভূমিকা রচয়িতা মনে করেন–
“‘চতুর্দ্দশপদী কবিতাবলী’ প্রকৃতপক্ষে মধুসূদনের শেষ কাব্য এবং সর্ব্বাপেক্ষা পরিণত মনের কাব্য। চৌদ্দ পঙ্ক্তি অথবা চৌদ্দ অক্ষরের গভীর গণ্ডির মধ্যে তাঁহার স্বভাবতঃ উচ্ছ্বাসপ্রবণ মন অনেকখানি সংযত হইতে বাধ্য হইয়াছে। সনেটের কঠোর ও দৃঢ় গঠন-গুণে অল্প পরিধির মধ্যে একটি ভাবকে সম্পূর্ণতা দান করিবার জন্য কবিকে ভাষা সম্বন্ধে অত্যন্ত সজাগ থাকিতে হইয়াছে। মিলের বন্ধনও ভাষা গঠনে সবিশেষ সহায়ক হইয়াছে। ফলে মধুসূদনের চতুর্দ্দশপদীর অনেক পঙ্ক্তি আজ প্রবাদ বাক্য হইতে পারিয়াছে।” আবার মধুসূদনের জীবনচরিত রচয়িতা যোগীন্দ্রনাথ বসুও যথার্থই লিখেছেন: “মধুসূদনের কবিশক্তির পরিচয়প্রাপ্ত হইতে হইলে, যেমন তাঁহার মেঘনাদবধ ও বীরাঙ্গনা পাঠ করা আবশ্যক, মধুসূদনকে জানিতে হইলে তেমনি তাঁহার চতুর্দ্দশপদী কবিতাবলী পাঠ করিবার প্রয়োজন।” [তৃতীয় সংস্করণ, পৃষ্ঠা ৫৮৩]
‘চতুর্দ্দশপদী কবিতাবলী’ প্রকাশিত হবার পরও মধুসূদন আরও কিছু সনেট রচনা করেছিলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পীড়ার সংবাদে একটি, পরেশনাথ পাহাড়ের উপর একটি, “পুরুলিয়া মণ্ডলীর প্রতি” একটি, “কবির ধর্ম্মপুত্র” একটি, “পঞ্চকোট গিরি” একটি, “পঞ্চকোটস্য রাজ্যশ্রী” একটি এবং ঢাকা নগরীর উপর একটি– এই মোট সাতটি সনেট। ফ্রান্সের ভার্সাই নগরে বসে কবির দেশপ্রেম ও মানবপ্রেম শেষ বয়সে যতটা প্রকট আকার ধারণ করেছিল; প্রথম জীবনে স্বাদেশিকতা, স্বভাষা ও নিজস্ব সংস্কৃতির প্রতি তিনি ততটাই বিরাগভাজন ছিলেন। তা না হলে হয়তো আমরা অন্য একজন মধুসূদনকে পেতাম, আপাদমস্তক এমন এক কবিকে আমরা রাজমুকুট পরাতাম যার পুরোটাই হতো বাংলা ও বাঙালিপ্রেমের কবি শিরোমণি। অমিতব্যয়ী জীবনে বারবার অর্থকষ্টে পতিত হয়েও তিনি তাঁর সৃষ্টি থেকে সামান্যমাত্র পিছু হটে আসেননি। সমাজ ও পরিবারের শৃঙ্খল ভেঙে এক রকম বিদ্রোহ ঘোষণার মধ্য দিয়ে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, দিন শেষে মেলাতে গিয়ে মনে হয়: মধুসূদন সবকিছুই যেন করেছিলেন কবি হওয়ার জন্য কিংবা সাহিত্যের নতুন ধারা সৃষ্টির জন্য। যে কারণে তাঁর প্রতিটি রচনাই বিশেষভাবে নতুনত্বে ভরপুর। বিশেষ করে নাটক ও নারী চরিত্রে তিনি যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটান, তখন, তা দেখে অনেকেরই চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায়। ছোটবেলা থেকে ইংল্যান্ডে গিয়ে বায়রনের মতো কবি হবার স্বপ্ন নিয়ে যে কবির জন্ম হয়েছিল, বাংলায় সেই কবি মাত্র ৪৯ বছরের জীবন কাটিয়ে শুয়ে আছেন কলকাতার লোয়ার সার্কুলার রোডের কবরস্থানে। তিনি আজ বাঙালি পাঠকের কাছে বায়রনের অধিক একক ও স্বতন্ত্র কণ্ঠস্বর, আধুনিক সময়ের প্রথম বিদ্রোহী কবি, সাহিত্যে আধুনিকতা প্রবর্তনের প্রথম প্রবল ব্যক্তিত্ব ও মহামানুষ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গল প প রক শ ত কর ছ ল ন প রথম প র প রথম প রক ত র জ বন গ রন থ র জন য করল ন
এছাড়াও পড়ুন:
ক্যানসারে আক্রান্ত ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারো
ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর শরীরে ত্বকের ক্যানসার শনাক্ত হয়েছে। বমি ও নিম্ন রক্তচাপের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার শরীরে ক্যানসারের প্রাথমিক ধাপ ধরা পড়ে। বর্তমানে তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি।
আরো পড়ুন:
৬ বছর পর ব্রাজিলকে হারিয়ে বিশ্বকাপ প্লে-অফে বলিভিয়া
মারাকানায় ব্রাজিলের বড় জয়
প্রতিবেদনে বলা হয়, এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার একদিন পর তার ত্বকের ক্যানসারের প্রাথমিক ধাপ ধরা পড়ে।
বুধবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, তার ত্বকের পরীক্ষা করে ‘স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা’ শনাক্ত হয়েছে।এটি ত্বকের মাঝারি মাত্রার ক্যানসার, যা সবচেয়ে হালকা ও সবচেয়ে আক্রমণাত্মক ধাপের মাঝামাঝি পর্যায়ে রয়েছে।
চিকিৎসকরা বলেছেন যে, নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হবে। ৭০ বছর বয়সী বলসোনারো গত মঙ্গলবার বমি এবং নিম্ন রক্তচাপের কারণে ব্রাসিলিয়ার একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে ক্যানসারের বিষয়টি গত রবিবারের পরীক্ষায় ধরা পড়ে, যখন তার বুক ও হাতে থাকা ক্ষতস্থানের টিস্যু অপসারণ করা হয়েছিল।
তার অনকোলজিস্ট ক্লাউদিও বিয়ারোলিনি জানিয়েছেন, বলসোনারোর ক্যানসার ‘ইন সিটু’ ধাপে রয়েছে, অর্থাৎ অস্বাভাবিক কোষগুলো এখনো ছড়িয়ে পড়েনি। অস্ত্রোপচারই এর চিকিৎসার জন্য যথেষ্ট হবে। বর্তমানে বলসোনারোর শরীরে সেলাই ও ব্যান্ডেজ রয়েছে, যা দুই সপ্তাহের মধ্যে খোলা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বুধবার তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় ফিরেছেন, যেখানে তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।
বলসোনারো ২০২২ থেকে ২০২৩ সালে ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্রে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই গৃহবন্দি ছিলেন। সম্প্রতি তাকে ২৭ বছর তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বিচারপতি আলেকজান্দ্রে দে মোরেসের নির্দেশ অনুযায়ী, গৃহবন্দিত্বে থাকলেও চিকিৎসা জরুরি হলে তিনি বাসার বাইরে যেতে পারেন। তবে প্রতিবারই তার আইনজীবীদের আদালতে চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হয়।
বলসোনারোর সমর্থকরা তার স্বাস্থ্য পরিস্থিতিকে যুক্তি হিসেবে তুলে ধরছেন, যাতে তিনি কারাগারে না গিয়ে বাড়িতেই সাজা ভোগ করতে পারেন। তাদের দাবি, কারাগারে নিলে তার শারীরিক জটিলতা বা দুর্ব্যবহারের ঝুঁকি বাড়বে।
তার জ্যেষ্ঠ পুত্র সিনেটর ফ্লাভিও বলসোনারো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, “আমার বাবা আগেও কঠিন লড়াই লড়ে জয়ী হয়েছেন। এবারও ভিন্ন কিছু হবে না।”
ঢাকা/ফিরোজ