জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বিচার, সংস্কার, তারপর নির্বাচন। বিচার দৃশ্যমান করতে হবে। বিচার শুরু করতে হবে। যারা গুলি করেছে, গণহত্যা করেছে, তাদের বিচার করতে হবে। বাংলার মাটিতেই শেখ হাসিনা ও যেসব পুলিশ গুলি করেছে, তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

আজ শনিবার বেলা ১১টায় বগুড়ার পর্যটন মোটেলে শহীদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে মতবিনিময় সভায় এ কথাগুলো বলেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক, বিচারে হাত দিতে পারবে না। শহীদ ও আহত পরিবারকে রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তাব্যবস্থা রাষ্ট্রকে নিশ্চিত করতে হবে। এনসিপির জুলাই ঘোষণাপত্রে শহীদদের মর্যাদা ও অবদানের কথা থাকবে। জুলাই সনদে সংস্কারের কথা থাকবে।

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘গণহত্যা মামলা নিয়ে সারা দেশে অনেক ঝামেলা হয়েছে। মামলা নিয়ে বাণিজ্য হয়েছে। পুলিশ আসামি ধরে ছেড়ে দিয়েছে। অনেক জায়গায় আসামির জামিন দেওয়া হয়েছে। কারণ, এখনো স্বৈরাচারের দোসরেরা বিভিন্ন জায়গায় আছে। তারা ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনে সহায়তা করছে। এনসিপি এসব মামলা তদারক করবে। কারণ, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সঙ্গে এনসিপির সম্পর্ক শুধু রাজনৈতিক দল হিসেবে নয়, সম্পর্ক দলের বাইরে, সারা জীবনের। আমরা সব সময় আপনাদের পাশে থাকতে চাই। এনসিপি সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে শহীদ পরিবারের পাশে থাকার। যে কারণে তাঁরা প্রাণ দিয়েছেন, সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে হবে। জুলাই আন্দোলনে এক হাজারের বেশি মানুষ শহীদ হয়েছেন। শহীদদের আত্মত্যাগ যাতে বিফলে না যায়, বৈষম্যহীন দেশ গড়ার আকাঙ্ক্ষা যাতে সফল হয়, এনসিপি সেই চেষ্টা করছে।’

সভায় এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা বলেন, যেকোনো মৃত্যু কষ্টকর। জুলাই আন্দোলনে শহীদ পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। যদিও আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা নিয়ে অনেক ঝামেলা হয়েছে, তবে রাষ্ট্র শহীদ ও আহত পরিবারের সব সমস্যার সমাধান নিশ্চিত করবে।

এনসিপি নেতারা পরে শহরের সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে সাতমাথা পর্যন্ত পদাযাত্রায় অংশ নেন। পদযাত্রা শেষে দুপুর ১২টা থেকে শহরের সাতমাথায় মুক্তমঞ্চে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন হ দ ইসল ম ন শ চ ত কর এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের ‘কঠোরতম ভাষায়’ নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব
  • যারা জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে নিষিদ্ধ চায়, তারা আদালতে অভিযোগ দিতে পারে: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
  • ‘গাজায় গণহত্যা চলছে, আমি সেই গণহত্যার নিন্দা করছি’