বৈরী আবহাওয়ার কারণে ভোলার সাগরমোহনা ও মেঘনা নদী উত্তাল থাকায় জেলার প্রায় ৩০টি নৌপথে যাত্রীবাহী লঞ্চ ও সিট্রাক চলাচল বন্ধ রয়েছে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার থেকে এসব নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করা হয়। আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত এসব নৌপথে লঞ্চ চলাচলের অনুমতি দেয়নি কর্তৃপক্ষ। তবে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কিছু স্পিডবোট ও ছোট ট্রলার যাত্রী পরিবহন করছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নৌনিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, অবৈধ নৌযান চলাচল ঠেকাতে অভিযান চালানো হচ্ছে। তারপরও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কিছু স্পিডবোট ও ট্রলার চলাচল করছে।

ভোলা আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল রয়েছে। এ কারণে সন্দ্বীপ চ্যানেলে সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল আপাতত নিষিদ্ধ। বিআইডব্লিউটিএর ভোলা নদীবন্দরের সহকারী পরিচালক রিয়াদ হোসেন বলেন, পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত যাত্রীবাহী লঞ্চ ও সিট্রাক চলাচল বন্ধ থাকবে।

নৌনিরাপত্তা বিভাগের পরিদর্শক মো.

জসিম উদ্দিন জানান, প্রতিবছর ১৫ মার্চ থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশা-লক্ষ্মীপুর নৌপথে মেঘনা নদী সাগরমুখী হয়ে ওঠে। তাই এ সময়টিতে এসব নৌপথে বিশেষ সতর্কতা জারি থাকে। ভোলার ইলিশা-লক্ষ্মীপুর, বরিশাল-মেহেন্দিগঞ্জ-ইলিশা, দৌলতখান-আলেকজান্ডার, মনপুরা-চরফ্যাশন, বেতুয়া-ঢাকা, মনপুরার হাজিরহাট-চেয়ারম্যান ঘাটসহ অন্তত ৩০টি নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে বিআইডব্লিউটিএর আওতায় রয়েছে ৮টি নৌপথ, বাকিগুলো জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণে।

বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, এসব নৌপথে প্রতিবছর ১৫ মার্চ থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত লাইসেন্সধারী স্পিডবোট চলাচল নিষিদ্ধ থাকে। ছোট ট্রলার সারা বছরই নিষিদ্ধ। কিন্তু এসব নিয়ম উপেক্ষা করে অনেক জায়গায় এখনো ট্রলার ও স্পিডবোট চলাচল করছে, ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এসব ন পথ

এছাড়াও পড়ুন:

দৌলতদিয়ায় ফেরির ধাক্কায় ভেঙে গেছে পন্টুনের কবজা, যানবাহন পারাপার ব্যাহত

তীব্র স্রোতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেরির ধাক্কায় ভেঙে গেছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের ৩ নম্বর পন্টুনের কবজা। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে ঘাটটি। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

বর্তমানে দৌলতদিয়ায় শুধু ৪ নম্বর ঘাট চালু আছে। এতে যানবাহন পারাপারে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে এবং সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানজটের।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় ও ঘাট-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গতকাল বিকেল থেকে দৌলতদিয়া প্রান্তে পদ্মায় তীব্র স্রোত দেখা দেয়। সন্ধ্যার পর এর তীব্রতা আরও বাড়ে। রাত ১১টার দিকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া থেকে ছেড়ে আসা রো রো ফেরি শাহ পরান দৌলতদিয়ায় পৌঁছে নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারায় ফেরিটি প্রচণ্ড বেগে ৩ নম্বর ঘাটের পন্টুনে ধাক্কা দিলে কবজা ভেঙে যায়। এর পর থেকে ঘাটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এর আগে ২৩ আগস্ট থেকে তীব্র স্রোতের কারণে দৌলতদিয়ার ৭ নম্বর ঘাটও বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে চারটি ঘাটের মধ্যে কেবল ৪ নম্বর ঘাট সচল রয়েছে। সেখানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যাত্রীবাহী পরিবহন এবং জরুরি কিছু পণ্যবাহী গাড়ি পার করা হচ্ছে। তবে সাধারণ পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার বন্ধ রাখা হয়েছে।

দৌলতদিয়া জিরো পয়েন্টে (৩ নম্বর ঘাট) দায়িত্বরত বিআইডব্লিউটিসির নিরাপত্তা পরিদর্শক ইদ্রিস আলী ভূঁইয়া বলেন, গতকাল রাতে ফেরি শাহ পরান ঘাটে ভেড়ার সময় প্রচণ্ড ধাক্কায় পন্টুনের কবজা ভেঙে যায়। তখন থেকে ঘাটটি বন্ধ রাখা হয়।

এদিকে সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় কয়েক দিন ধরে সড়ক অবরোধ করা হচ্ছে। এতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা থেকে অনেক গাড়ি দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে পারাপার হচ্ছে। এ কারণেও দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় গাড়ির চাপ পড়ছে। আজ মঙ্গলবার সকালে দৌলতদিয়া প্রান্তে প্রায় দুই কিলোমিটার লম্বা গাড়ির লাইন তৈরি হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির লাইন আরও লম্বা হচ্ছে। দীর্ঘ সময় আটকে থাকায় চালকসহ যাত্রীদের বাড়তি ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

সৌহার্দ্য পরিবহনের ঘাট তত্ত্বাবধায়ক মনির হোসেন বলেন, ‘শুধু একটি ঘাট চালু থাকায় যানবাহন স্বাভাবিকভাবে পার হতে পারছে না। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে আসা ঢাকামুখী গাড়ি আটকে দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়েছে। আমাদের চারটি যাত্রীবাহী বাস চার ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আটকে আছে। বাসগুলো ফেরিতে উঠতে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টার মতো সময় লাগছে।’

বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, তীব্র স্রোতের কারণে ফেরি পারাপারে অনেক বেশি সময় লাগছে। গতকাল রাত পৌনে ১২টার দিকে ৩ নম্বর ঘাটের পন্টুন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখন শুধু ৪ নম্বর ঘাট চালু রয়েছে। যাত্রীবাহী বাস ও কিছু জরুরি গাড়ি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার করা হচ্ছে। সাধারণ পণ্যবাহী গাড়ি আপাতত পার করা যাচ্ছে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চার মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ১৭ জনকে বেলার চিঠি, বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধের অনুরোধ
  • ভাঙ্গায় আন্দোলন: দৌলতদিয়ায় যানবাহনের দীর্ঘ সারি
  • দৌলতদিয়ায় ফেরির ধাক্কায় ভেঙে গেছে পন্টুনের কবজা, যানবাহন পারাপার ব্যাহত