বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেছেন, শুধু নেতা আর দলের পরিবর্তন করলেই দেশের শান্তি আসবে না, যতদিন পর্যন্ত নীতি ও আদর্শের পরিবর্তন না হয়। দুই নম্বর জমিতে এক নম্বর ফসল হয় না। দুই নম্বর ওস্তাদের কাছে এক নম্বর ছাত্র হয় না। যতদিন চরিত্রবান, আদর্শ ভিত্তিক, ন্যায় ভিত্তিক লোক চেয়ারে বসবে না ততদিন পর্যন্ত এ দেশে নীতি ও আদর্শের প্রতিফলন ঘটবে না। তিনি আরও বলেন, ‘দেশে যে পরিবেশ আছে, তাতে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এ জন্য আমরা মনে করি স্থানীয় নির্বাচন আগে করে দেখা উচিৎ। যদি দেখি স্থানীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে তাহলে মনে করব জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।’

বুধবার সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌর বাস টার্মিনাল এলাকায় ইসলামী আন্দোলনের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেছেন, ‘প্রশাসনকে এখনও ঢেলে সাজানো হয়নি। সুতরাং দুই দিন আগে হোক আর পরে হোক সংস্কার ব্যতীত সুষ্ঠু নির্বাচন কোনোভাবেই সম্ভব নয়। সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন- এই তিন দাবিকে সামনে নিয়ে আমরা আন্দোলন করেছিলাম।’

তিনি আরও বলেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে সকল আদর্শের মানুষ সংসদে যেতে পারবে। তাহলে সার্বজনীন সংসদ হবে। আর সর্বজনীন সংসদ হলে প্রত্যেকের দাবি দাওয়া সংসদে পেস করতে পারবে। রাস্তায় হরতাল করতে হবে না। 

বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে ফয়জুল করীম বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ ব্যবসা করতে পারছে না। বিএনপির কি গুণ? নয় মাসে দেড়শ খুন। চাঁদা তোলে পল্টনে, চলে যায় লন্ডনে। এটা কি দেখার জন্য আমরা আন্দোলন করেছিলাম, সংগ্রাম করেছিলাম? আমরা চাই এ দেশ শান্ত হোক। সবার অধিকার বাস্তবায়ন হোক। মানুষ যেন চাঁদাহীন একটা জীবন যাপন করতে পারেন।’ 

এ সময় বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের জেলা, উপজেলা, ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আদর শ

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে আত্মসমর্পণ ও অস্ত্রত্যাগের প্রস্তাব মাওবাদীদের
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত