ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর ও সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন।

শুক্রবার (১১ জুলাই) মধ্য রাতে ও শনিবার (১২ জুলাই) ভোরে এ ঘটনা ঘটে। 

ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে আসকর আলী (২৪) নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। 

আরো পড়ুন:

সিরাজদিখানে ছুরিকাঘাতে বৃদ্ধ নিহত

নিখোঁজের দুদিন পর নৈশপ্রহরীর হাত-পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার

শনিবার ভোররাতে উপজেলার মিনাপুর সীমান্তের ৩৫৩ নম্বর প্রধান পিলারের কাছে ভারতের অভ্যন্তরে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আসকর আলী হরিপুর উপজেলার জীবনপুর গ্রামের কানুরার ছেলে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

স্থানীয় সূত্র ও বিজিবি জানায়, ভোর আনুমানিক ৪টার দিকে আসকর আলীসহ কয়েকজন মিনাপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন। তারা কাঁটাতারের বেড়ার কাছে পৌঁছলে ভারতের কিষাণগঞ্জ ব্যাটালিয়নের বিএসএফ সদস্যরা গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান আসকর আলী। তার মরদেহ ভারতের ভেতরে প্রায় ২০০ গজ দূরে পড়ে আছে বলে জানা গেছে।

ঘটনার পরপরই সীমান্তে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে অতিরিক্ত বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। অপরদিকে, ভারতের সীমান্তেও বাড়ানো হয়েছে বিএসএফের সদস্য সংখ্যা।

দিনাজপুরে অবস্থিত ৪২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা ঘটনার বিষয়ে অবগত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা শুরু করেছে। নিহতের মরদেহ ফেরত আনার লক্ষ্যে বিএসএফকে পতাকা বৈঠকে বসার আহ্বান জানানো হয়েছে।

সুনামগঞ্জ
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলা সীমান্তে বিএসএফ এর গুলিতে শফিকুল ইসলাম (৪৫) নামে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। 

শুক্রবার মধ্য রাতে দোয়ারাবাজার সীমান্তের ভাঙ্গারপাড় এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

শফিকুল ইসলাম দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ভাঙ্গারপাড় গ্রামের কিতাব আলীর ছেলে। 

সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়নের (২৮ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জাকারিয়া কাদির রাইজিংবিডি ডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, মধ্যরাতে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার সীমান্তে ভাঙ্গারপাড় এলাকা হয়ে বাংলাদেশি চোরাকারবারিরা গরুর চোরাচালানের উদ্দেশ্যে অবৈধভাবে ভারতের প্রায় ৫০০ গজ অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। গরু নিয়ে ফেরার সময় বিএসএফের টহল দল বাধা দেয়। এ সময় চোরাকারবারিরা বিএসএফ টহল দলের ওপর ইট-পাটকেল ও পাথর নিক্ষেপ শুরু করলে বিএসএফ চার-পাঁচটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। তাতেও কোনো কাজ না হলে বিএসএফ সদস্যরা চোরাকারবারিদের লক্ষ্য করে গুলি করে। এ সময় বাংলাদেশি নাগরিক মো.

শফিকুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হন।

পরে শফিকুলের সঙ্গে থাকা চোরাকারবারিরা সেখান থেকে তাকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে। পরিবারের সদস্যরা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।

এক প্রশ্নের জবাবে লেফটেন্যান্ট কর্নেল জাকারিয়া কাদির জানিয়েছেন, এ বিষয়ে পতাকা বৈঠক ও প্রতিবাদলিপি পাঠানোর মাধ্যমে জোরালো প্রতিবাদ জানানো হবে। চোরাকারবারিদের গ্রেপ্তার করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা/হিমেল/মনোয়ার/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য ব এসএফ চ র ক রব র স ন মগঞ জ ব এসএফ র র উপজ ল সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

নেত্রকোনা সীমান্ত দিয়ে ফের ২১ জনকে পুশইন করল বিএসএফ

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার সীমান্ত দিয়ে ২১ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তাদের মধ্যে ১৯ জন তৃতীয় লিঙ্গ ও দুইজন পুরুষ রয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে দুর্গাপুরের বিজয়পুর সীমান্ত দিয়ে তাদেরকে পুশইন করা হয় বলে জানিয়েছেন নেত্রকোনা ৩১ বিজিবির বিজয়পুর ক্যাম্প কমান্ডার মো. শহীদুল ইসলাম।

তিনি আরও বলেন, আজ ভোরে বিজয়পুর বিওপির ১১৪৮/৪ এস থেকে প্রায় ১০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আড়াপাড়া এলাকা দিয়ে তাদেরকে পুশইন করানো হয়। পরে তাদের আটক করে বিজিবি। আটককৃদের বাড়ি ঢাকা, চট্রাগ্রাম, রাজবাড়ী, পটুয়াখালী, মৌলভীবাজার, জামালপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও টাঙ্গাইলের বিভিন্ন এলাকায়।

ক্যাম্প কমান্ডার বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে। আটককৃতরা ভারতের দিল্লিতে কাজের জন্যে যান। তাদেরকে দিল্লির বিভিন্ন এলাকা থেকে একত্রিত করে গতকাল বুধবার নাজিরাবাদ বিমানবন্দর দিয়ে উড়োজাহাজে করে আসামে আনা হয়। পরে তাদেরকে আজ বৃহস্পতিবার ভোরে বিজয়পুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ। এর আগে গত ৩ জুন ওই সীমান্ত দিয়ে ৩২ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছিল বিএসএফ। 

নেত্রকোনার ৩১ বিজিবির ক্যাম্প কমান্ডার মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, হাবিলদার আবদুল করিমের  নেতৃত্বে একটি দল, সীমান্তে টহল দেওয়ার সময় বিএসএফের পুশইন করা ওই ২১ জনকে আড়াপাড়া এলাকা থেকে আটক করে। আমাদের অফিসিয়াল প্রক্রিয়া শেষে তাদের দুর্গাপুর থানায় হস্তান্তর করা হবে।

নেত্রকোনা ৩১ বিজিবি’র অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল এস এম কামরুজ্জামান বলেন, বুধবার রাতে বিএসএফ ২১ জনকে পুশইন করেছে। তাদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। তারা গত ৬ মাস থেকে ১২ বছর আগে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ভারতে গিয়েছিলেন। বৈধ প্রক্রিয়া না করে বিএসএফ তাদের পুশইন করেছে। তাদেরকে বিজয়পুর ক্যাম্পে রাখা হয়েছে। পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুই সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত
  • পুশইন নিয়ে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি দেখতে চায় না জনগণ
  • সুনামগঞ্জে বিএসএফের গু‌লিতে এক বাংলাদেশি নিহত
  • ঠাকুরগাঁও সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত
  • পানিহাটা সীমান্ত দিয়ে আরও ১০ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
  • শেরপুরে ১০ জনকে ঠেলে দিল বিএসএফ
  • শেরপুর সীমান্ত দিয়ে ১০ বাংলাদেশিকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
  • তিন সীমান্ত দিয়ে ৩৮ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
  • নেত্রকোনা সীমান্ত দিয়ে ফের ২১ জনকে পুশইন করল বিএসএফ