দীর্ঘ সময় স্মার্টফোন ব্যবহারের জন্য অনেকেই শক্তিশালী ব্যাটারিযুক্ত স্মার্টফোন কেনেন। কিন্তু ভুল পদ্ধতিতে চার্জ দেওয়ার কারণে নামীদামি ব্র্যান্ডের শক্তিশালী ব্যাটারির স্মার্টফোনগুলোর ব্যাটারিও দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের তথ্যমতে, নিয়মিত ১০০ শতাংশ চার্জ করলে দীর্ঘ মেয়াদে ফোনের ব্যাটারির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

সাধারণত অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ব্যবহৃত হয় লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি। এই ব্যাটারি নির্দিষ্ট সময় পর ধীরে ধীরে চার্জ ধরে রাখার ক্ষমতা হারাতে থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিবার ফোনকে ১০০ শতাংশ চার্জ করলে ব্যাটারি দীর্ঘ সময় উচ্চ ভোল্টেজে যুক্ত থাকে, যা তার অভ্যন্তরীণ রাসায়নিক গঠনে চাপ ফেলে। ফলে ব্যাটারির ক্ষমতা ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত দ্রুত কমে যায়। প্রযুক্তিবিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রক্রিয়াকে বলে ‘ব্যাটারির কেমিক্যাল এজিং’। এর প্রভাব প্রথম দিকে না বোঝা গেলেও কয়েক মাস পর থেকেই ব্যাটারির চার্জ দ্রুত ফুরিয়ে যাওয়া বা ফোন অতিরিক্ত গরম হওয়ার মতো সমস্যার মুখে পড়তে হয়।

আরও পড়ুনআপনার ফোনে কেউ কি নজরদারি করছে, বুঝবেন যেভাবে২৪ আগস্ট ২০২৩

বর্তমানে হালনাগাদ প্রযুক্তির ফোনগুলোতে শক্তিশালী ব্যাটারি থাকে, যা কাজে লাগিয়ে দীর্ঘ সময় ফোন ব্যবহার করা সম্ভব। তাই প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, ফোনের চার্জ সব সময় ৫০ থেকে ৮০ শতাংশের মধ্যে রাখলে ব্যাটারি সবচেয়ে ভালো থাকে। বারবার চার্জ করা, চার্জ পুরোপুরি শেষ হয়ে যাওয়া বা প্রতিবার ১০০ শতাংশ চার্জ করলে ব্যাটারির ক্ষমতা কমে যায়। এ সমস্যা সমাধানে অনেক স্মার্টফোনেই ব্যাটারির সুরক্ষায় বিশেষ সুবিধা যুক্ত করা হয়েছে। স্যামসাংয়ের কিছু মডেলে ‘প্রটেক্ট ব্যাটারি’ সুবিধা রয়েছে, যা চালু থাকলে চার্জ স্বয়ংক্রিয়ভাবে ৮৫ শতাংশে থেমে যায়। গুগল পিক্সেল ফোনে রয়েছে ‘চার্জিং অপটিমাইজেশন’ সুবিধা, যা চার্জ ৮০ শতাংশে পৌঁছালেই বন্ধ হয়ে যায়।

আরও পড়ুনস্মার্টফোন ধীরগতির? অনুসরণ করুন এই পাঁচ উপায়১৯ জুলাই ২০২৫

অতিরিক্ত চার্জের পাশাপাশি তাপমাত্রাও ফোনের ব্যাটারির ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। অতিরিক্ত গরম বা ঠান্ডা পরিবেশে ফোন ব্যবহার করলে ব্যাটারির অভ্যন্তরীণ গঠন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ফোনের কার্যক্ষমতাও ধীরগতির হয়ে পড়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্মার্টফোনের ব্যাটারির জন্য আদর্শ তাপমাত্রা হলো ০ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৩২ থেকে ৯৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট)।
সূত্র: বিজিআর

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ চ র জ কর ক ষমত ব যবহ

এছাড়াও পড়ুন:

২২ অনাথ কাশ্মীরি শিশুর পড়াশোনার দায়িত্ব নিলেন রাহুল গান্ধী

অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন পাকিস্তানি গোলায় ভারত–নিয়ন্ত্রিত জম্মু–কাশ্মীরে যাঁরা নিহত হয়েছিলেন, তাঁদের পরিবারের ২২ অনাথ শিশুর লেখাপড়ার পুরো দায়িত্ব নিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ওই শিশুরা পুঞ্চ জেলার সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দা।

স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে উঠে স্নাতক হওয়া পর্যন্ত ওই শিশুদের পড়াশোনার সব খরচ রাহুল গান্ধী বহন করবেন। সেই খরচের প্রথম কিস্তির টাকা বুধবার ওই পড়ুয়াদের স্কুলে পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন জম্মু–কাশ্মীরের কংগ্রেস সভাপতি তারিক হামিদ কাররা।

পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল পর্যটকদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছিল কয়েকজন জঙ্গি। সেই হামলায় নিহত হয়েছিলেন মোট ২৬ জন পর্যটক। প্রত্যাঘাতের জন্য ভারত শুরু করে অপারেশন সিঁদুর। চার দিনের সেই লড়াইয়ের সময় জম্মুর সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রবল গোলাবর্ষণ করে পাকিস্তান। সেই হামলায় মারা গিয়েছিলেন ২৭ জন গ্রামবাসী। আহত হয়েছিলেন ৭০ জনের বেশি। যাঁরা নিহত হয়েছিলেন, ওই ২২ শিশু ওইসব পরিবারেরই সন্তান। তাদের কেউ বাবা, কেউ মা, কেউ–বা দুজনকেই হারিয়েছে। কারও পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

রাহুল গত মে মাসে ওইসব এলাকায় গিয়েছিলেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। অনাথ শিশুদের স্কুলেও গিয়েছিলেন। ওই সময় তিনি দলীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন অনাথ শিশুদের তালিকা তৈরি করতে। সরকারি নথির সঙ্গে সেই নাম মিলিয়ে ২২ জনের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত হয়। পুঞ্চ জেলা সফরের সময় রাহুল তাঁর ইচ্ছার কথা জানিয়ে বলেছিলেন, ওই শিশুদের স্নাতক স্তর পর্যন্ত পড়াশোনার সব খরচ তিনি দেবেন।

পাকিস্তানের গোলার আঘাতে মারা গিয়েছিলেন ১২ বছরের দুই যমজ ভাই–বোন জাইন আলি ও উরবা ফতিমা। রাহুল তাঁদের স্কুলে গিয়েছিলেন। সেই স্কুলের পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তাঁদের বলেছিলেন, তোমরা তোমাদের বন্ধুদের হারিয়েছ। সে জন্য তোমাদের মন খারাপ। ওই মৃত্যু আমাকেও দুঃখ দিয়েছে। তোমাদের দুঃখ আমি বুঝি। কিন্তু তোমাদের জন্য আমি গর্বিত। তোমরা ভয়কে জয় করেছ। রাহুল ওই শিশুদের বলেছিলেন, ভয়কে জয় করতে হবে। সুদিন আসবে। সব আবার স্বাভাবিক হবে।

ওই ২২ জনের জন্য বছরে কত খরচ হবে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব তা জানাননি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ